শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের তেমন কোনো স্পষ্ট প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়নি। দিনজুড়ে ইউরোজোন, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যেগুলো ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার কথা ছিল। তবে, মার্কেটে বড় ধরনের মুভমেন্টের পরিবর্তে খুব সামান্য ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা দেখা গেছে। ইউরোপীয় কারেন্সির মূল্যের আবারও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার ভালো সুযোগ ছিল, তবে ট্রেডাররা যদি এটি না কেনে এবং সামগ্রিকভাবে ট্রেডিংয়ের প্রতি তাঁদের আগ্রহ না থেকে, তাহলে মৌলিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট যাই হোক না কেন, কোনো মোমেন্টাম তৈরি হবে না। মূলত, আমরা কেবলমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফলের প্রতি ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া দেখেছি, যা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দেশটির কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার চেয়ে ধীরগতিতে বেড়ে ৩%-এ পৌঁছেছে। এই ফলাফল ফেডারেল রিজার্ভের আসন্ন বৈঠকগুলোতে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে, ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া মাত্র ৫ মিনিট স্থায়ী হয়, যার ফলে ডলার ৪০ পিপস দরপতনের শিকার হয়। এটাই সারাদিনের একমাত্র উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট ছিল।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, শুক্রবারের সেশনে একটি মাত্র ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, যা বর্তমানে ভোলাটিলিটির মাত্রা বিবেচনায় নিলে অস্বাভাবিক নয়। মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের প্রকাশের পর এই পেয়ারের মূল্যের 1.1655-এ পৌঁছায়, তারপর সামান্য বিচ্যুতির সাথে এই পেয়ারের দরপতন হয়। নতুন ট্রেডাররা এই সেল সিগন্যাল কাজে লাগাতে পারতেন, তবে যৌক্তিক কারণেই এই দরপতনের মাত্রা দুর্বল ছিল।
সোমবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কিছুটা সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্য ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেকআউট করে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে এবং সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো মার্কিন ডলারের জন্য অনুকূল নয়। অতএব, আমরা ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছি। তবে, দৈনিক টাইমফ্রেমে এখনো এই পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ রেঞ্জের মধ্যে অবস্থায় করার প্রবণতা বজায় আছে, যার ফলে লোয়ার টাইমফ্রেমে স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা বিরাজ করছে এবং অনেক সময় অযৌক্তিক মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে।
সোমবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের যেকোনো দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তবে সম্ভবত আবারও খুবই স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা দেখা যাবে। 1.1571–1.1584 এরিয়া অথবা 1.1655–1.1666 রেঞ্জের মধ্যে নতুন ট্রেডিং সিগন্যাল পাওয়া যেতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988। সোমবার, যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোজোনে তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা আকর্ষণীয় ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তাই ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা আবার প্রায় শূন্যে নেমে আসতে পারে। এটি মনে রাখা প্রয়োজন, এমনকি গত শুক্রবার প্রকাশিত আটটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের ফলাফলও কোনো উল্লেখযোগ্য ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা সৃষ্টি করেনি।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।