গত শুক্রবার, মার্কিন স্টক সূচকগুলোতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে লেনদেন শেষ হয়েছে। S&P 500 সূচক 0.79% বৃদ্ধি পেয়েহে, নাসডাক 100 সূচক 1.15% বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ 1.01% বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৈশ্বিক স্টক মার্কেটগুলোতে রেকর্ড উত্থান পরিলক্ষিত হয়েছে, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা আরও দৃঢ় হয়েছে — যার প্রেক্ষিতে তামা এবং তেলের দাম বেড়ে গেছে। ট্রেজারি বন্ডের দর পুরো ইয়েল্ড কার্ভ জুড়েই কমে গেছে এবং ঐতিহ্যগতভাবে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত স্বর্ণের দামও কমেছে — কারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।

সুরক্ষাবাদী নীতির ব্যর্থতা এবং মুক্ত বাণিজ্য ফিরে আসার আশাবাদ উভয় দেশের শিল্পখাতকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল জায়ান্টস, টেক কোম্পানি এবং এনার্জি করপোরেশনগুলোর কার্যক্রমে ব্যাপক বৃদ্ধি দেখা গেছে, এবং সেগুলোর শেয়ারের মূল্যও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সাধারণত অনিশ্চয়তার সময় নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বিবেচিত অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া স্বর্ণকে স্টক ও কমোডিটিগুলোর কাছে এখন জায়গা ছেড়ে দিতে হয়েছে। দীর্ঘসময় ধরে ইতিবাচক খবরের অপেক্ষায় থাকা বিনিয়োগকারীরা অবশেষে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন।
ঝুঁকির প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায়, স্বর্ণের দাম 0.8% হ্রাস পেয়ে আউন্স প্রতি প্রায় $4,080-এ দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, ১০-বছরের মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের ইয়েল্ড চার বেসিস পয়েন্ট বেড়ে 4.04%-এ পৌঁছেছে। এছাড়া, উভয় দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পুনরায় শুরু হওয়ার আশায় সয়াবিনের দামও বেড়েছে। চীনের অর্থনৈতিক প্রভাবের সূচক হিসেবে পরিচিত অস্ট্রেলিয়ান ও নিউজিল্যান্ড ডলার শক্তিশালী হয়েছে।
বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা হ্রাস পাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে এবং এপ্রিলের ধসের পর শুরু হওয়া ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা তৈরি করেছে — সেই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈশ্বিক বাণিজ্য খাতের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের সিদ্ধান্ত ও শুল্ক আরোপ করার প্রেক্ষিতে মার্কেটে ধস নেমেছিল।
স্টক মার্কেটের এই প্রবৃদ্ধি এই সপ্তাহে একটি বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে, কারণ ফেডারেল রিজার্ভ তাদের মুদ্রানীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত প্রকাশ করতে চলেছে। একই সঙ্গে, আয়ের প্রতিবেদন পেশের মৌসুম চলমান রয়েছে ও বিনিয়োগকারীরা মার্কিন প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানিগুলোর আর্থিক ফলাফলের উপর সজাগ দৃষ্টি রাখবে। ট্রেডাররা বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধিদের বক্তব্য এবং ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের দিকেও চোখ রাখবেন। ধারণা করা হচ্ছে, ফেড মূল সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমাতে পারে।

S&P 500-এর টেকনিক্যাল চিত্রের প্রসঙ্গে বলা যায়, আজ ক্রেতাদের মূল লক্ষ্য হবে সূচকটিকে নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল $6,854 অতিক্রম করানো। এই লেভেল ব্রেক করলে সূচকটির আরো ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে এবং মূল্য $6,874 লেভেলে উঠে যাওয়ার পথ উন্মুক্ত হবে। পাশাপাশি, ক্রেতাদের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য থাকবে $6,896 লেভেলের উপরে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা — যা তাদের অবস্থানকে দৃঢ় করবে। যদি ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতা কমে যাওয়ায় মূল্য নিম্নমুখী হয়, তাহলে সূচকটির মূল্য $6,837 লেভেলের আশপাশে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের সক্রিয় হতে হবে। এই লেভেল ব্রেকআউট করে সূচকটি নিম্নমুখী হলে, মূল্য দ্রুত $6,819-এ নেমে যেতে পারে এবং সেখান থেকে $6,801-এ যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হবে।