শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

শুক্রবারও GBP/USD পেয়ারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে, তবে ব্রিটিশ মুদ্রার মূল্য এখনো সুস্পষ্টভাবে একটিমাত্র ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনের নিচে অবস্থান করছে, তাই এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতার সমাপ্তি নিয়ে এখনই আলোচনা করার সময় আসেনি। লক্ষণীয় বিষয় হলো, পাউন্ড স্টার্লিং—যেমনটি ইউরোতেও দেখা গেছে—গত দেড় মাস ধরে দরপতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ন্যায্যভাবে বলতে গেলে, মাঝে মাঝে কিছু ঘটনা পাউন্ডের দরপতনে ভূমিকা রেখেছে (যেটি ইউরোর ক্ষেত্রে দেখা যায়নি), তবে ইউরোপীয় মুদ্রার তুলনায় পাউন্ডের অনেক বেশি দরপতন হয়েছে। সামগ্রিকভাবে, মার্কিন ডলারের জন্য বৈশ্বিক মৌলিক প্রেক্ষাপট এখনো বেশ নেতিবাচক রয়েছে। তাই নির্দিষ্ট কোনো ইভেন্টের ভিত্তিতে পাউন্ডের এই দেড় মাসব্যাপী দরপতন ঘটেছে তা বলে কঠিন। শুক্রবার প্রকাশিত একমাত্র প্রতিবেদন ছিল মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের কনজ্যুমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স বা ভোক্তা মনোভাব সূচক, যেটির ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় নেতিবাচক ছিল। ফলে, প্রত্যাশানুযায়ী ডলারের দরপতন ঘটে; তবে এই দরপতন পুরো দিনজুড়ে স্থায়ী থাকলেও, প্রতিবেদনের প্রকাশের পর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ডলারের মূল্যের মোমেন্টাম থেমে যায়। আমাদের মূল্যায়নে, এই মুহূর্তে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট মূলত টেকনিক্যাল কারণের ভিত্তিতেই হচ্ছে, যেখানে ট্রেডাররা প্রায়শই মৌলিক প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করে যাচ্ছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার 1.3096–1.3107 লেভেলের কাছে একটি কার্যকর বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। পরবর্তীতে, মূল্য প্রায় ৪০ পিপস বৃদ্ধি পায়, যা নতুন ট্রেডারদের জন্য তুলনামূলকভাবে সহজেই মুনাফা করার একটি সুযোগ হয়ে দাঁড়ায়।
সোমবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে এবং গত দেড় মাস ধরে পাউন্ড নানাবিধ কারণেই দরপতনের সম্মুখীন হয়েছে। যেমনটা আগেও বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার জন্য এখনো কোনো বৈশ্বিক কারণ বিদ্যমান নেই; তাই আমরা মধ্যমেয়াদে শুধুমাত্র এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের সম্ভাবনাই বিবেচনায় নিচ্ছি। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের "ফ্ল্যাট রেঞ্জে" অবস্থান করার প্রবণতা মূল্যকে নিম্নমুখী করছে—যা মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে পুরোপুরিভাবে অযৌক্তিক একটি পরিস্থিতি।
সোমবার, নতুন ট্রেডাররা 1.3096–1.3107 এরিয়া ব্রেকআউটের পর লং পজিশন হোল্ড করতে পারে এবং মূল্যের 1.3203-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে; স্টপ লস ব্রেকইভেনে সেট করাই উপযুক্ত হবে। নতুন ট্রেডিং সিগন্যাল গঠনের জন্য আমাদের 1.3096–1.3107 কিংবা 1.3203–1.3211 এরিয়ার দিকে নজর রাখতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডাররা বর্তমানে নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলোতে ট্রেড করতে পারে তা হলো 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3096-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, এবং 1.3574-1.3590। সোমবার যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র—এই দুই দেশেই কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই কিংবা কোনো অর্থনৈতিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হবে না, তাই দৈনিক ভিত্তিতে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টগুলো বেশ দুর্বল বা মন্থর হতে পারে। ব্রিটিশ মুদ্রার মূল্য নতুন করে বৃদ্ধি পেতে পারে, যা মার্কিন ডলারের মূল্যের অযৌক্তিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সমাপ্তির ইঙ্গিত দেবে বলেই আমরা ধারণা করছি।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।