মঙ্গলবার ADP রিসার্চ প্রকাশ করে যে এই বছরের অক্টোবর মাসে, প্রতি সপ্তাহে গড়ে 11,250টি কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে, যার পরপরই মার্কিন ডলারের তীব্র দরপতন ঘটে। এই প্রতিবেদনটি ইঙ্গিত দেয় যে অক্টোবর মাসের দ্বিতীয়ার্ধে শ্রমবাজারে ফের কর্মসংস্থান হ্রাস পাওয়া শুরু করেছে, যা মাসের শুরুর তুলনায় ভিন্ন ফলাফল ছিল।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত সর্বশেষ মাসিক ADP প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত দুই মাসের পতনের পর অক্টোবর মাসে বেসরকারি খাতে 42,000টি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

এই নতুন প্রতিবেদন এমন এক সময়ে প্রকাশিত হল যখন গত কয়েক সপ্তাহে একাধিক কোম্পানি কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। কর্মসংস্থান বিষয়ক প্রতিষ্ঠান চ্যালেঞ্জার, গ্রে অ্যান্ড ক্রিসমাস ইনকর্পোরেটেডের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই দশকের মধ্যে অক্টোবর মাসেই সবচেয়ে বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা এসেছে, যা শ্রমবাজারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই সতর্কবার্তা দীর্ঘস্থায়ী মুদ্রাস্ফীতি এবং তা নিয়ন্ত্রণে উচ্চ সুদের হারের প্রেক্ষাপটে এসেছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে ফেডারেল রিজার্ভের আগ্রাসী নীতিমালা শ্রমবাজারের পরিস্থিতিকে আরও দুর্বল করতে পারে, কারণ কর্মী ছাঁটাই এখন বড় প্রযুক্তি প্রতিবেদন থেকে শুরু করে উৎপাদন খাত পর্যন্ত—প্রায় সব খাতেই প্রভাব ফেলছে। চাকরি হারানোর এই প্রবণতা আরও উদ্বেগজনক বিষয়, কারণ এটি শ্রমবাজারকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং চাকরি হারানো ব্যক্তিদের সহায়তার প্রয়োজনীয়তার দিকেই নির্দেশ করে। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান থেকে সংগৃহীত পৃথক এক তথ্যে প্রকাশ পেয়েছে যে, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭১% বিশ্বাস করেন আগামী বছরে বেকারত্ব বৃদ্ধি পেতে পারে—যা ১৯৮০ সালের পর সর্বোচ্চ।
মার্কিন ইতিহাসের দীর্ঘস্থায়ী সরকারি কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন, বিশেষ করে কর্মসংস্থান বিষয়ক প্রতিবেদনের প্রকাশনা বিলম্বিত হয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা ADP-এর প্রকাশিত তথ্যসহ অন্যান্য বিকল্প সূচকের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হয়েছেন। গত মাসে ADP ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা প্রতি চার সপ্তাহ পরপর বেসরকারি খাতে নিয়োগে পরিবর্তনের চলমান গড় হার প্রকাশ করবে।
গোল্ডম্যান শ্যাক্স গ্রুপ ইনকর্পোরেটেডের অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকার পরিচালিত ফার্লো প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারী কর্মীদের হিসাব অন্তর্ভুক্ত করলে, অক্টোবর মাসে মার্কিন কর্মসংস্থান ৫০,০০০ হারে হ্রাস পেয়েছে। এখন তারা শ্রমবাজার পরিস্থিতির আরও অবনতির ঝুঁকি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিচ্ছেন।
এই সব বিষয় ইঙ্গিত দিচ্ছে ডিসেম্বরে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা আগের চেয়ে অনেক বেশি, যা ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটের বিপরীতে মার্কিন ডলারের আরও এক দফা দরপতনের কারণ হতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল পূর্বাভাস
EUR/USD পেয়ারের বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্রের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাচ্ছে, ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1590 লেভেলে নিয়ে আসা উচিত। একমাত্র এই লেভেলে যেতে পারলেই মূল্যের 1.1620 লেভেলের দিকে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। সেখান থেকে এই পেয়ারের মূল্য 1.1640 পর্যন্ত উঠতে পারে, তবে বড় ট্রেডারদের সহায়তা ছাড়া এটি অর্জন করা বেশ কঠিন হবে। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1668 লেভেল। যদি এই ইনস্ট্রুমেন্টের দরপতন হয়ে মূল্য 1.1570 এরিয়ায় নেমে আসে, তাহলে বড় ক্রেতাদের কার্যক্রম পরিলক্ষিত হতে পারে। যদি মূল্য সেই লেভেলে থাকা কোনো শক্তিশালী ক্রেতা সক্রিয় না হয়, তাহলে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1540 লেভেলে নেমে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করাই ভালো হবে অথবা 1.1520 থেকে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল পূর্বাভাস
GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের বর্তমান টেকনিক্যাল পরিস্থিতি অনুযায়ী, পাউন্ডের ক্রেতাদের প্রথমেই 1.3150 লেভেলের রেজিস্ট্যান্স ব্রেক করার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। একমাত্র এরপরই এই পেয়ারের মূল্যের 1.3181-এর দিকে যাইয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে, যদিও মূল্যের এই লেভেলের ওপরে উঠা তুলনামূলকভাবে বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে 1.3215 লেভেল। যদি মার্কেটে দরপতন ঘটে, তাহলে বিক্রেতারা মূল্য 1.3120 লেভেলে থাকা অবস্থায় মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। তারা সফল হলে, এই রেঞ্জ ব্রেক হলে সেটি ক্রেতাদের অবস্থানের জন্য বড় ধরনের হুমকি তৈরি করবে, এবং GBP/USD পেয়ারের 1.3085 লেভেল পর্যন্ত দরপতন হতে পারে, যেখানে 1.3050 পর্যন্ত আরও দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে।