বুধবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বুধবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ার গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। মনে করিয়ে দিই, গত কয়েক মাস ধরে ইউরোর মূল্য সম্পূর্ণভাবে ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে, যা দৈনিক টাইমফ্রেমে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। তাই, লোয়ার টাইমফ্রেমগুলোতে আমরা প্রায়ই পরিবর্তিত প্রবণতা, অযৌক্তিক মুভমেন্ট, স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা পর্যবেক্ষণ করছি এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন ও ইভেন্টের ফলাফল এই পেয়ারের মূল্যের উপর প্রভাব ফেলছে না। গতকালের পরিস্থিতি এই বৈশিষ্ট্যগুলোর সঙ্গেই পুরোপুরিভাবে মিলে গেছে। ইউরোজোন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মূলত তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, যার ফলে এই পেয়ারের মূল্যের প্রায় ৪০ পিপসের আশেপাশে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয়েছে। আমরা মনে করি, দৈনিক টাইমফ্রেমে ফ্ল্যাট রেঞ্জই EUR/USD পেয়ারের বিশ্লেষণে অগ্রাধিকারের মূল দিক হওয়া উচিত। যদি মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট বজায় থাকে, তবে কোনো ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট কিংবা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রবণতাভিত্তিক মুভমেন্ট বা উচ্চ অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারবে না। আমরা এই ফ্ল্যাট মুভমেন্টকে ঝড়ের আগে শান্ত অবস্থা হিসেবে দেখছি, যা নির্দেশ করছে যে মার্কেটে একটি নতুন প্রবণতা সৃষ্টির জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, এই পেয়ার প্রায় সারাদিন ধরে 1.1571-1.1584 এরিয়ার সাইডওয়েজ রেঞ্জে ট্রেডিং করেছে। সুতরাং, আমরা ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমেও সম্পূর্ণভাবে ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে মুভমেন্ট পর্যবেক্ষণ করেছি। এই পেয়ারের মূল্য একাধিকবার এই রেঞ্জ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল, তবে এটা বোঝা উচিত যে গতকালের সকল মুভমেন্ট কেবলমাত্র "মার্কেট নয়েজ" ছিল। মার্কিন ট্রেডিং সেশনের সময়, এই পেয়ারের মূল্য উল্লিখিত এরিয়ার উপরে স্থিতিশীলভাবে অবস্থান গ্রহণ করতে পেরেছিল, যা নতুন ট্রেডারদের জন্য লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি করেছিল, এবং যেহেতু মূল্য তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে, সেই পজিশন এখনও হোল্ড করে রাখা যেতে পারে। তবে, এই পেয়ারের মূল্যের দুর্বল ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত আছে।
বৃহস্পতিবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, তবে এটি শীঘ্রই শেষ হতে পারে। সামগ্রিকভাবে মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট মার্কিন ডলারের জন্য এখনও বেশ নেতিবাচক। তাই শুধুমাত্র টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ইউরোপীয় মুদ্রার কিছুটা দরপতন হলেও—দৈনিক টাইমফ্রেমে এখনও এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জে অবস্থান করার প্রবণতা বজায় রয়েছে—আমরা এই মন্থর মুভমেন্ট শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছি এবং ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হবে বলে প্রত্যাশা করছি, এমনকি এই ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যেও কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার, নতুন ট্রেডাররা আবারও 1.1571-1.1584 এরিয়া থেকে ট্রেড করতে পারেন। এই এরিয়া থেকে মূল্য রিবাউন্ড করলে বর্তমান লং পজিশন হোল্ড করে রাখা বা নতুন লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ থাকবে, যেখানে মূল্যের 1.1655-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। যদি এই পেয়ারের মূল্য 1.1571-1.1584 এরিয়ার নিচে স্থিতিশীলভাবে অবস্থান গ্রহণ করে, তাহলে শর্ট পজিশন ওপেন করা যুক্তিযুক্ত হবে, যেখানে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1527-1.1531-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970-1.1988। বৃহস্পতিবার ইউরোজোনে শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশের কথা রয়েছে, যা আজকের দিনের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন। যদিও এই প্রতিবেদনটির ফলাফল পূর্বাভাস তুলনায় ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে, তবুও এটি মার্কেটে কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে এমন সম্ভাবনা কম। এছাড়া, মার্কেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলেও তা এই ফ্ল্যাট মুভমেন্টের অবসানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলেও মনে হচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।