সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের পর্যালোচনা:

বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ব্রিটিশ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন। আজ যুক্তরাজ্যে তৃতীয় প্রান্তিকের জিডিপি (প্রথম পূর্বাভাস) এবং শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। মনে রাখা জরুরি, প্রথম এবং তৃতীয় পূর্বাভাসই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলোর ফলাফল পূর্বাভাসের তুলনায় ভিন্ন হতে পারে এবং ফলে মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। বর্তমানে ব্রিটিশ অর্থনীতি খুব দুর্বলভাবে প্রবৃদ্ধি প্রদর্শন করছে এবং শিল্প উৎপাদনও বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। সুতরাং, আজ ব্রিটিশ পাউন্ডের শক্তিশালী সহায়তা পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়বে। ইউরোজোনেও শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে, এবং এই প্রতিবেদন ক্ষেত্রেও একই ধরনের অনুমান করা যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে আজ অক্টোবরের মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু "শাটডাউন" চলমান থাকায় এই প্রতিবেদনের প্রকাশনাও পিছিয়ে গেছে। ফলে, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন প্রতিবেদন আরও পরে প্রকাশিত হবে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:

বৃহস্পতিবার তুলনামূলকভাবে কম সংখ্যক ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট নির্ধারিত আছে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক নীতিমালা সংক্রান্ত কমিটির প্রতিনিধিদের আরও কিছু বক্তব্য অনুষ্ঠিত হতে পারে, তবে বর্তমানে এই বক্তব্যগুলো মার্কেটে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব ফেলছে না। একই বিষয় ফেডারেল রিজার্ভের প্রতিনিধিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো যুক্তরাষ্ট্রের "শাটডাউনের" অবসান এবং গত দেড় মাস ধরে অপ্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করছে। এছাড়া, চলমান টেকনিক্যাল ফ্ল্যাট মুভমেন্ট তখনই শেষ হবে, যখন বড় ট্রেডাররা নতুন কোনো প্রবণতার জন্য প্রস্তুত হবেন।
উপসংহার:
চলতি সপ্তাহের শেষ দিকের ট্রেডিংয়ে দিনেরবেলা উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হতে পারে। 1.1571-1.1584 এরিয়া থেকে মূলের রিবাউন্ড হলে ইউরোর নতুন লং পজিশন ওপেন করা যুক্তিযুক্ত হবে, যেখানে মূল্যের 1.1655-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। যদি মূল্য 1.3096-1.3107 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে তাহলে পাউন্ডের নতুন লং পজিশন ওপেন করার সম্ভাবনা তৈরি হবে । তবে, সর্বশেষ কয়েকদিন উভয় পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট বেশ দুর্বল এবং অস্থিতিশীল ছিল, তাই নতুন ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ওপেন করার কথাও বিবেচনা করতে পারেন।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।