সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের পর্যালোচনা:

শুক্রবার খুব কম সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, এবং সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রেডাররা স্থানীয় সংবাদ ও অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রতি খুব কমই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ফলে ইউরোজোনের তৃতীয় প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদনটি যতটা "গুরুত্বপূর্ণ" বলে মনে হচ্ছে, বাস্তবে ট্রেডাররা সেটিই উপেক্ষাই করতে পারে। এই প্রান্তিকে উক্ত অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা মাত্র ০.২%, যা যেকোনো দিক থেকেই অত্যন্ত নিম্ন। আমরা যেমনটি দেখতে পাচ্ছি, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) আর্থিক নীতিমালার নমনীয়করণ এখনো পর্যন্ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি বাড়াতে পারছে না। এই জিডিপি প্রতিবেদনের ফলাফল থেকে ইউরো তেমন কোনো সহায়টা পাবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে, কিন্তু টেকনিক্যাল ভিত্তিতে এটির মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:

শুক্রবারের জন্য বেশ কয়েকটি ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট নির্ধারিত রয়েছে। বিশেষভাবে, ইউরোজোনে ইসিবির প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেবেন, তবে বর্তমানে মার্কেটের ট্রেডারদের দিক থেকে ইসিবির আর্থিক নীতিমালার বিষয়ে তেমন কোনো প্রশ্ন নেই। তাই, ফেডারেল রিজার্ভের প্রতিনিধিদের, বিশেষত লোরেটা মেস্টার ও রাফায়েল বস্টিকের বক্তৃতাগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। গত কয়েক দিনে, ফেডের কয়েকজন কর্মকর্তা প্রকাশ্যে জানিয়েছেন যে তারা ডিসেম্বর মাসে মূল সুদের হার হ্রাসের বিপক্ষে অবস্থান নিতে যাচ্ছেন, যার ফলে ট্রেডারদের মধ্যে সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহ আগেও ট্রেডাররা পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন যে পরপর তিনবার মার্কিন সুদের হার কমানো হতে যাচ্ছে। তবে, "ডোভিশ বা নমনীয়" অবস্থান গ্রহণের সম্ভাবনার এমন হ্রাস মার্কিন ডলারকে কিছুটা সহায়তা দিতে পারে। এই বিষয়টি মার্কিন সরকারের শাটডাউনের সমাপ্তির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যদিও এই সপ্তাহে আমরা মূলত মার্কেটে কেবল ডলারের দরপতনই হতে দেখছি।
উপসংহার:
সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিংয়ে, উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকতে পারে, তবে দরপতনের সম্ভাবনাও পুরোপুরি উড়িয়ে দেয়া যায় না। ইউরোর জন্য 1.1655-1.1666 পর্যন্ত একটি ভালো ট্রেডিং এরিয়া আচ্ছে। শুক্রবার ব্রিটিশ পাউন্ডের জন্য ট্রেডিংয়ের উপযুক্ত দুটি এরিয়া হলো: 1.3096-1.3107 এবং 1.3203-1.3211।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।