এখনও ইউরোপীয় মুদ্রার মূল্যের শক্তিশালী বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। একদিকে, এটি ফেডারেল রিজার্ভ শিগগিরই আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করবে এই প্রত্যাশা থেকে সহায়তা পাচ্ছে। অন্যদিকে, সুদের হারের বিষয়ে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) কঠোর অবস্থান মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইউরোর মূল্যের নতুন সর্বোচ্চ লেভেলে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি করছে।

তবে, এই বিষয়গুলোর প্রভাবকে সামগ্রিক অর্থনৈতিক চিত্র থেকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা উচিত নয়। ইউরোপীয় অর্থনীতিতে মন্থরতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে ইসিবির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে বাধ্য করতে পারে। তবে, যতদিন পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা উপরে থাকবে, ততদিন ইসিবি কঠোর নীতিমালাই অনুসরণ করতে থাকবে, যা ইউরোর জন্য সহায়ক হবে।
ইউরোপীয় মুদ্রার ভবিষ্যত গতিপথ নির্ধারণে একটি মূল উপাদান হবে ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারের পার্থক্য। যদি মার্কিন অর্থনীতি ইউরোপের তুলনায় দ্রুত পুনরুদ্ধার প্রদর্শন করতে শুরু করে, তবে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইউরো চাপের মুখে পড়বে। অন্যথায়, ইউরোর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব বজায় থাকবে।
ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি হ্রাস পাওয়ার বিষয়টিও নজরে রাখা উচিত, যা এক্সচেঞ্জ রেটের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। ইউক্রেন সংকটের সমাপ্তির যেকোনো ইঙ্গিত পাওয়া গেলে, বিনিয়োগকারীরা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটের যেমন ইউরো ও ব্রিটিশ পাউন্ডের দিকে ঝুঁকতে পারে, যা নিঃসন্দেহে মার্কিন ডলারের উপর প্রভাব ফেলবে।
সামগ্রিকভাবে, স্বল্পমেয়াদে ইউরোর দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। তবে দীর্ঘমেয়াদে এটির মূল্যের গতিশীলতা অনেকটাই নির্ভর করবে ইউরোপীয় অর্থনীতির পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা এবং ইসিবির অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গৃহীত সিদ্ধান্তের উপর। আরও কার্যকর ও তথ্যসমৃদ্ধ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিনিয়োগকারীদের সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচক এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিবৃতি নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
EUR/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, এখন ক্রেতাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত এই পেয়ারের মূল্যের 1.1615 লেভেল ব্রেক করানো। কেবলমাত্র এই লেভেল ব্রেক করতে পারলেই এই পেয়ারের মূল্যের 1.1635 লেভেলে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। সেখান থেকে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1655 পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যদিও মার্কেটের বড় ট্রেডারদের সহযোগিতা ছাড়া মূল্যের সেখানে পৌঁছানো কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1675-এর লেভেল। যদি ট্রেডিং ইনস্ট্রুমেন্টটির মূল্য কমে যায়, তাহলে আমি মূল্য 1.1585 এর আশেপাশে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার আশা করছি। যদি মূল্য সেখানে থাকা অবস্থায় মার্কেটে কেউ এন্ট্রি না করে, তাহলে মূল্যের 1.1560 লেভেলে পুনরায় নেমে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা, কিংবা 1.1530 থেকে লং পজিশন ওপেন করাই বুদ্ধিমানের হবে।
GBP/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, পাউন্ডের ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যের প্রাথমিক রেজিস্ট্যান্স 1.3240 ব্রেক করাতে হবে। কেবলমাত্র এতে সফল হলে তারা মূল্যকে 1.3265 এর লক্ষ্যমাত্রায় নিয়ে যেতে পারবে, যার উপরে ব্রেকআউট করা যথেষ্ট কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.3300 লেভেল। যদি এই পেয়ারের মূল্য কমে যায়, তাহলে মূল্য 1.3210-এ থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে। তারা যদি এতে সফল হয়, তাহলে এই রেঞ্জের ব্রেকআউট হলে সেটি ক্রেতাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3185-এর দিকে নেমে যেতে পারে, যেখানে সম্ভাব্য পরবর্তী গন্তব্য হিসেবে মূল্য 1.3155-এর দিকে যেতে পারে।