প্রধান Quotes Calendar ফোরাম
flag

FX.co ★ AUD/USD: অস্ট্রেলিয়ান ডলার ও মার্কিন ডলার গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছে

parent
ফরেক্স বিশ্লেষণ:::2025-12-02T03:50:05

AUD/USD: অস্ট্রেলিয়ান ডলার ও মার্কিন ডলার গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছে

টানা দ্বিতীয় সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মূল্য মার্কিন ডলারের বিপরীতে বৃদ্ধি পেয়েছে। AUD/USD পেয়ারের মূল্য ইতোমধ্যে 0.6530-এর রেজিস্ট্যান্স লেভেল (বলিঙ্গার ব্যান্ডের মিডিয়ান লাইন, যা W1 টাইমফ্রেমে টেনকান-সেন লাইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ) অতিক্রম করেছে এবং এখন 0.6570–এর গুরুত্বপূর্ণ লেভেলে পৌঁছানোর কাছাকাছি রয়েছে। এই লেভেলে, D1 টাইমফ্রেমে বলিঙ্গার ব্যান্ডের আপার লাইন ও কুমো ক্লাউডের উপরের সীমা মিলিত হয়েছে, যা এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার ক্ষেত্রে শক্তিশালী বাঁধা হিসেবে কাজ করছে।

AUD/USD: অস্ট্রেলিয়ান ডলার ও মার্কিন ডলার গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছে

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুধুমাত্র মার্কিন ডলারের দরপতনের কারণে নয়, বরং নিজস্বভাবে অস্ট্রেলিয়ান ডলারের শক্তিশালী হওয়ার ফলেও ঘটছে। এমনকি যখন DXY বা মার্কিন ডলার সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে, তখনো AUD/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় ছিল। বলা যায়, এখন সামগ্রিকভাবে অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে: এর কারণ হল রিজার্ভ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়া (RBA) হকিশ বা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনগুলোর ফলাফলও শক্তিশালী এসেছে।

যেমন, গত সপ্তাহে প্রকাশিত দেশটির কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) বার্ষিক ভিত্তিতে ৩.৮%–এ পৌঁছেছে, যেখানে বিশ্লেষকরা পূর্বে ৩.৬%-এ পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিয়েছিল। এটি ২০২৪ সালের জুনের পর থেকে সূচকটির সর্বোচ্চ মান।

অস্ট্রেলিয়ার শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফলও অস্ট্রেলিয়ান ডলারের পক্ষে কাজ করছে: অক্টোবরে দেশটির বেকারত্বের হার নেমে দাঁড়িয়েছে ৪.৩%-এ (পূর্বানুমান ছিল ৪.৪%)। নিযুক্ত কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে ৪২,০০০—যেখানে পূর্বাভাস ছিল মাত্র ২০,০০০ বৃদ্ধির। এই সূচক টানা দ্বিতীয় মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এটি এপ্রিল ২০২৪-এর পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, নিযুক্ত কর্মীর মোট বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি ছিল পূর্ণকালীন কর্মসংস্থানের বৃদ্ধি (+৫৫,০০০), যেখানে খন্ডকালীন কর্মসংস্থানে হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে (-১৩,০০০)।

PMI সূচকগুলোর ফলাফলও অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে সহায়তা করেছে। উৎপাদনভিত্তিক সূচক বেড়ে ৫১.৬-এ পৌঁছেছে (পূর্বে ছিল ৪৯.৭), এবং পরিষেবা খাতের PMI সূচক বর্তমান মান থেকে বেড়ে ৫২.৭ (আগে ছিল ৫২.৫) হয়েছে।

এর বাইরেও আরও কিছু ইতিবাচক খবর এসেছে। শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৃতীয় প্রান্তিকে অস্ট্রেলিয়ার খুচরা বিক্রয়ের মোট পরিমাণ ১.৯% বেড়েছে—যেখানে পূর্বাভাস ছিল মাত্র ০.৬% বৃদ্ধির। এটি ২০২১ সালের শেষ দিকের পর থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী ফলাফল। মূল বিক্রয় সূচকও (কম অস্থির খাত) ১.২% বৃদ্ধি পেয়েছে (পূর্বাভাস ছিল ০.৮%)।

এছাড়া, শুক্রবার রিজার্ভ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিরা জানান যে, গত অক্টোবর মাসে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রদানের হার মাসিক ভিত্তিতে ০.৭% বেড়েছে (পূর্বাভাস ছিল ০.৬%) এবং বার্ষিক ভিত্তিতে এই হার ৭.৩%–এ পৌঁছেছে, যেটি আগের মাসে ৭.২% ছিল।

ফিচ রেটিংস-এর বিশ্লেষকদের মতে, অস্ট্রেলিয়ার মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২০২৪ সালে ১.৮%, ২০২৫ সালে ২.১% এবং ২০২৭ সাল নাগাদ ২.৪%–এ পৌঁছাতে পারে।

মনে রাখা দরকার, নভেম্বর মাসের বৈঠকে রিজার্ভ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়া শুধু যে সুদের হার ৩.৬%–এ অপরিবর্তিত রেখেছে, তা-ই নয়, বরং তারা হকিশ বা কঠোর অবস্থান গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছে—যেখানে ভবিষ্যৎ মুদ্রাস্ফীতির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেছে যে, মূল মুদ্রাস্ফীতির হার আগামী কয়েক প্রান্তিক ধরে তিন শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার উপরে থাকবে। সেইসাথে, দীর্ঘমেয়াদী মুদ্রাস্ফীতিরও সুস্পষ্টভাবে উপস্থিতি রয়েছে বলেও তারা জানায়, যা আবারও রিজার্ভ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার নীতিনির্ধারকদের আরও সতর্ক হতে বাধ্য করছে। বৈঠক-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনেও রিজার্ভ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার প্রধান মিশেল বুলক একই রকম হকিশ বা কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছেন।

অর্থাৎ, বর্তমানে মৌলিক প্রেক্ষাপট অস্ট্রেলিয়ান ডলারের পক্ষে কাজ করছে, এমনকি ফেড বর্তমানে ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছে বলেও মার্কিন ডলার চাপের মধ্যে রয়েছে। CME ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃক সুদের হার হ্রাসের সম্ভাবনা এখন ৮৮%–এ এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, মার্কেটের ট্রেডাররা প্রায় নিশ্চিত যে চলতি মাসেই মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট রেট কমাবে। ফেডের কর্মকর্তাগণ—যেমন ক্রিস্টোফার ওয়ালার, স্টিফেন মুর, মিশেল বোম্যান এবং নিউইয়র্ক ফেডের প্রেসিডেন্ট জন উইলিয়ামস—মন্তব্য থেকেও এই সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

তবুও, মৌলিক প্রেক্ষাপট অস্ট্রেলিয়ান ডলারের পক্ষে এবং মার্কিন ডলারের বিপক্ষে থাকার পরও, ক্রেতাদের অবশ্যই এই পেয়ারের মূল্যের পূর্বে উল্লেখিত 0.6570 রেজিস্ট্যান্স লেভেল (যা বলিঙ্গার ব্যান্ড ও কুমো ক্লাউডের উপরের সীমানা দ্বারা চিহ্নিত) ব্রেক করাতে হবে। এই পেয়ারের মূল্য এই রেজিস্ট্যান্স সফলভাবে ব্রেক করতে ক্রেতাদের শক্তিশালী মৌলিক বা সংবাদভিত্তিক প্রতিবেদনের দরকার হবে, যা এই পেয়ারের মূল্যের 0.66 লেভেলের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে।

এই সপ্তাহের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট রয়েছে। যেমন, আজ মার্কিন উৎপাদন সংক্রান্ত ISM সূচক প্রকাশিত হয়েছে, যা সংকোচন মান (৪৮.২) থেকে আরও নিচে নেমে গেছে এবং পূর্বাভাসের (৪৯.১) নিচে অবস্থান করছে। বুধবার পরিষেবাভিত্তিক ISM সূচক এবং শুক্রবার কোর PCE সূচক প্রকাশিত হবে। এছাড়া, মঙ্গলবার ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বক্তব্য দেবেন।

অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ান ডলারকেও গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, কারণ বুধবার দেশটিতে তৃতীয় প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, তৃতীয় প্রান্তিকে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি ০.৭%–এ (দ্বিতীয় প্রান্তিকে এটি ছিল ০.৬%) এবং বার্ষিক ভিত্তিতে ২.০%-এ (পূর্বে ছিল ১.৮%) পৌঁছাতে পারে।

যদি ওপরের সকল প্রতিবেদনের ফলাফল 'ইতিবাচক' হয় (অর্থাৎ, মার্কিন প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল দুর্বল হয় এবং অস্ট্রেলিয়ার জিডিপি শক্তিশালী হয়), তাহলে ক্রেতারা শুধুমাত্র এই পেয়ারের মূল্যের 0.6570-এর রেজিস্ট্যান্স লেভেল ব্রেক করিয়েই থেমে থাকবে না, বরং 0.66 লেভেলে কনসোলিডেশন ঘটানোর চেষ্টাও করবে। AUD/USD পেয়ারের মূল্যের যেকোনো কারেক্টিভ পুলব্যাক হলে মূল্যের 0.6550 এবং 0.6570-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে।

Analyst InstaForex
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন:
parent
loader...
all-was_read__icon
You have watched all the best publications
presently.
আমরা ইতোমধ্যে আপনার জন্য আকর্ষণীয় কিছু সন্ধান করছি।..
all-was_read__star
Recently published:
loader...
More recent publications...