ইউরো ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ এবং টিপস
যখন MACD সূচকটি শূন্যের বেশ উপরে অবস্থান করছিল তখন এই পেয়ারের মূল্য 1.1639-এর লেভেল টেস্ট করেছিল, যা এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করে দেয়। এই কারণেই আমি ইউরো ক্রয় করিনি। কিছুক্ষণ পর দ্বিতীয়বারের মতো মূল্য 1.1639 লেভেলে পৌঁছায়, সেসময় MACD সূচকটি ওভারবট জোনে ছিল — যার ফলে পরিকল্পনা #2 অনুযায়ী ইউরো বিক্রির সুযোগ তৈরি হয় এবং এই পেয়ারের মূল্য ২০ পিপসেরও বেশি কমে যায়।
ISM উৎপাদন সূচকের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় হতাশাজনক আসার পরপরই মার্কিন ডলারের ওপর চাপ বেড়ে যায়। প্রত্যাশার বিপরীতে, উৎপাদন খাতের সূচকটি কমে যাওয়ার মাধ্যমে শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি হ্রাসের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে আবারও মার্কিন অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অর্থনৈতিক সূচকের ফলাফল প্রত্যাশা অনুযায়ী না আসায় সেটি ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃক সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে, যা স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন ডলারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
আজ দিনের প্রথমার্ধে ইউরোজোনের অর্থনৈতিক সূচক প্রকাশিত হবে, যার মধ্যে রয়েছে কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI), কোর কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বা মূল ভোক্তা মূল্য সূচক এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল ইউরোপীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভোক্তা মূল্য সূচকের দিকে বেশি মনোযোগ থাকবে। যদি ভোক্তা মূল্য সূচকের বড় ধরনের বৃদ্ধি দেখা যায়, তাহলে এটি ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবির) সতর্ক অবস্থানের ইঙ্গিত দেবে।
খাদ্য ও জ্বালানির মতো অত্যন্ত পরিবর্তনশীল উপাদান বাদ দিয়ে তৈরি কোর CPI-এর ফলাফল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতির প্রভাব মূল্যায়নে সহায়তা করে। কোর CPI স্থিতিশীল থাকলে সেটি বর্তমানে প্রযোজ্য নীতিমালার কার্যকারিতার বিষয়ে ইসিবির আত্মবিশ্বাসকে আরও জোরদার করতে পারে এবং অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ গ্রহণে আরও নমনীয়তা প্রদান করতে পারে।
বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন শ্রম বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি অনুধাবনের জন্য সহায়ক হবে। বেকারত্ব কমে গেলে তা ভোক্তা চাহিদা বাড়াতে পারে এবং মূল্যস্ফীতির চাপ সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে, বেকারত্ব বেড়ে গেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। এই তিনটি সূচকের সমন্বিত বিশ্লেষণ ইউরোজোনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি বিশদ চিত্র দেবে এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য পরিস্থিতিগুলোর একটি স্পষ্ট রূপরেখা তৈরি করবে।
দৈনিক ট্রেডিং কৌশলের ক্ষেত্রে আমি পরিকল্পনা #1 এবং পরিকল্পনা #2 বাস্তবায়নের ওপর অধিক নির্ভর করবো।

বাই সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: আজ যখন ইউরোর মূল্য 1.1637-এর লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে 1.1616-এর (চার্টে সবুজ লাইন দ্বারা চিহ্নিত) লেভেলে পৌঁছাবে, তখন আপনি ইউরোর লং পজিশন ওপেন করতে পারেন। মূল্য 1.1637-এর লেভেলে গেলে, আমি লং পজিশন ক্লোজ করার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 30-35 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর শর্ট পজিশন ওপেন করব। আজ শুধুমাত্র আসন্ন প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হলে ইউরোর দর বৃদ্ধি পেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ: এই পেয়ার কেনার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের উপরে রয়েছে এবং সেখান থেকে উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: আজ MACD সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1604-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রে আমি ইউরোর লং পজিশন ওপেন করার পরিকল্পনা করছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে ঊর্ধ্বমুখী করবে। আমরা 1.1616 এবং 1.1637-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করতে পারি।
সেল সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: EUR/USD পেয়ারের মূল্য 1.1604-এর (চার্টে লাল লাইন) লেভেলে পৌঁছানোর পর আমি ইউরোর শর্ট পজিশন ওপেন করার করার পরিকল্পনা করছি। লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1581-এর লেভেল যেখানে মূল্য পৌঁছালে আমি সেল পজিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 20-25 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর বাই পজিশন ওপেন করব। আসন্ন প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল প্রকাশিত হলে আজ এই পেয়ারের উপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ: বিক্রি করার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের নিচে রয়েছে এবং শূন্যের নিচে নামতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারবট জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1616-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রেও আমি আজ ইউরোর শর্ট পজিশন ওপেন করতে যাচ্ছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে নিম্নমুখী করবে। আমরা 1.1604 এবং 1.1581-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দরপতনের আশা করতে পারি।

চার্টে কী আছে:
- হালকা সবুজ লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট ক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় সবুজ লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্দেশ করে, কারণ এই লেভেলের উপরে আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
- হালকা লাল লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট বিক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় লাল লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে, কারণ এই লেভেলের নিচে আরও দরপতনের সম্ভাবনা নেই।
- মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার সময় ওভারবট এবং ওভারসোল্ড জোন মূল্যায়নের জন্য MACD সূচক ব্যবহার করা উচিত।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
- নতুন ফরেক্স ট্রেডারদের মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে মার্কেটে এন্ট্রি না করাই উত্তম। যদি আপনি সংবাদ প্রকাশের সময় ট্রেডিং করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে লোকসানের সম্ভাবনা হ্রাসের জন্য অবশ্যই স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন। স্টপ-লস অর্ডার ছাড়া ট্রেডিং করলে দ্রুত আপনার সম্পূর্ণ ডিপোজিট শেষ হয়ে যেতে পারে, বিশেষত যদি আপনি অর্থ ব্যবস্থাপনার নীতিমালা উপেক্ষা করেন এবং বেশি ভলিউমে ট্রেড করেন।
- মনে রাখবেন, সফল ট্রেডিংয়ের জন্য একটি সুসংগঠিত ট্রেডিং পরিকল্পনা থাকা আবশ্যক, ঠিক যেমনটি উপরে নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে সেটি দৈনিক ভিত্তিতে ট্রেড করা ট্রেডারদের জন্য লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।