মার্কিন ডলার যখন একাধিক ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটের বিপরীতে শক্তিশালী অবস্থান বজায় রাখার লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছে, ঠিক তখনই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তিনি ফেডারেল রিজার্ভের পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে একজন প্রার্থীর নাম ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সুদের হার সংক্রান্ত ব্যাপারে এই মনোনীত ব্যক্তির কাছে তিনি কী প্রত্যাশা করছেন।
"হ্যাঁ, আমি জানি আমি কাকে বেছে নেবো," সাংবাদিকদের এভাবেই উত্তর দেন ট্রাম্প, যদিও তিনি নাম প্রকাশ করেননি। "আমরা শিগগিরই তা ঘোষণা করবো।"

বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রের মতে, এটি হতে পারেন কেভিন হাসেট, যিনি হোয়াইট হাউজের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক এবং ট্রাম্পের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। অনেকেই মনে করছেন, তিনিই জেরোম পাউয়েলের সম্ভাব্য উত্তরসূরি।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প একাধিকবার ফেডের বর্তমান চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের তীব্র সমালোচনা করেছেন, কারণ পাওয়েল পর্যাপ্তভাবে দ্রুত হারে সুদের হার কমাননি। ট্রাম্প স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, তিনি এমন কাউকে ফেডের চেয়ারম্যান হিসেবে চান যিনি আগ্রাসীভাবে সুদের হার কমানোর পক্ষে অবস্থান নেবেন।
এই প্রেক্ষাপটে, অনেকে এখন ভাবছেন যে ফেডের পরবর্তী চেয়ারম্যান আদৌ কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন এবং তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের আওতায় পড়বেন কি না। ইতোমধ্যে মার্কেটে ফেডের সম্ভাব্য নেতৃত্ব পরিবর্তনের খবরের প্রেক্ষিতে অস্থিরতা বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন, আর্থিক নীতিমালায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মার্কিন অর্থনীতিতে অনিশ্চিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রাম্প একাধিকবার পাওয়েলকে উচ্চ সুদের হার বজায় রাখার জন্য দায়ী করেছেন, দাবি করেছেন যে তা মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে। ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত কেভিন হ্যাঁসেটকে নিয়োগ দেওয়া হলে, ফেডের নীতিমালায় একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। এটি ফেডকে আরও নমনীয় মুদ্রানীতির দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা মার্কিন ডলারের দরপতন এবং ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটগুলোর দর বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তবে অতিরিক্ত হারে সুদের হার কমালে অর্থনীতি অতিরিক্ত অস্থিতিশীল হয়ে ব্যপক মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে, যেটি পাওয়েল দীর্ঘদিন ধরে মোকাবিলা করে যাচ্ছেন।
ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা হলো মার্কিন আর্থিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতার অন্যতম মূল স্তম্ভ। রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের চেষ্টা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষীণ করতে পারে এবং এর ফলে মূলধন বাজার থেকে অন্যদিকেও চলে যেতে পারে।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে ফেডের নতুন চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করা হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত শুধু মার্কিন অর্থবাজারই নয়, বরং সামগ্রিক বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপরও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
পূর্ববর্তী এক বক্তব্যে কেভিন হাসেট এটি জানাতে অস্বীকৃতি জানান যে তিনি নিজেকে পাওয়েলের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য অন্যতম প্রধান প্রার্থী হিসেবে ভাবছেন কি না। তিনি এই ধরনের তথ্যকে গুজব বলে আখ্যা দেন। তবে তিনি স্বীকার করেন, মার্কেটে ট্রাম্পের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আসা গুঞ্জনের পর যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, সেটি লক্ষণীয়। হ্যাসেট বলেন, "আমাদের ট্রেজারি বন্ডের নিলাম অত্যন্ত সফল হয়েছে, সুদের হার কমেছে, এবং আমি মনে করি আমেরিকান জনগণ আশা করতে পারেন যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন কাউকে নির্বাচন করবেন যিনি তাদের জন্য সাশ্রয়ী গাড়ি ক্রয়ের জন্য ঋণ এবং কম সুদের হারে মর্টগেজ সহজলভ্য করে তুলবেন। আমার বিষয়ে ছড়ানো গুজবকে কেন্দ্র করে মার্কেটে সৃষ্টি প্রতিক্রিয়াতেও আমরা ঠিক সেটিই দেখেছি।"
হ্যাসেট ছাড়াও চূড়ান্ত তালিকায় রয়েছেন ফেডের গভর্নর ক্রিস্টোফার ওয়ালার, মিশেল বোম্যান, সাবেক ফেড গভর্নর কেভিন ওয়ার্শ এবং ব্ল্যাকরকের রিক রিডার। ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, তিনি বেসেন্টকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান, যদিও বেসেন্ট নিজেই বারবার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
EUR/USD পেয়ারের বর্তমান টেকনিক্যাল পরিস্থিতি অনুযায়ী, ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1625 লেভেলে নিয়ে যেতে হবে। কেবল তখনই এই পেয়ারের মূল্যের 1.1655 লেভেলে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হবে। সেখান থেকে মূল্য 1.1680 পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, তবে মার্কেটের বড় ট্রেডারদের সমর্থন ছাড়া এটি করা বেশ কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1715-এর রেঞ্জ। যদি এই ইনস্ট্রুমেন্টের মূল্য কমে যায়, তাহলে মূল্য 1.1590 রেঞ্জে থাকা অবস্থায় উল্লেখযোগ্য ক্রয়ের চাহিদা দেখা যেতে পারে। যদি সেখানেও প্রতিক্রিয়া না দেখা যায়, তাহলে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1560-এর লেভেলে নেমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা যেতে পারে কিংবা 1.1530 লেভেল থেকে লং পজিশন ওপেন করার কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, পাউন্ডের ক্রেতাদের প্রথমে এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3230-এর রেজিস্ট্যান্স লেভেলে নিয়ে যেতে হবে। কেবল তখনই তারা 1.3250 পর্যন্ত মূল্য বাড়ানোর সুযোগ পাবে, যার উপরে ব্রেক করা তুলনামূলকভাবে কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3270। অন্যদিকে, যদি এই পেয়ারের দরপতন হয়, তাহলে মূল্য 1.3200 লেভেলে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা পুনরায় মার্কেটে নিয়ন্ত্রণ দখল করার চেষ্টা করবে। তাঁরা সফল হলে, মূল্য এই রেঞ্জের ব্রেক করে নিম্নমুখী হলে সেটি ক্রেতাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3177-এর লেভেল পর্যন্ত নেমে যেতে পারে, এমনকি 1.3150 পর্যন্তও দরপতন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।