সোমবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

সোমবার কার্যত GBP/USD পেয়ারের প্রায় কোনোই ট্রেডিং কার্যক্রম দেখা যায়নি। ইউরোর তুলনায় ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা আরও কম ছিল। অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ড লাইনের দিকে এই পেয়ারের মূল্য়ের সামান্য দরপতন অব্যাহত রয়েছে, এবং আমরা মনে করি এটি ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার স্থায়িত্বের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত – যেটি ইউরোর মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনার ইঙ্গিতও দিতে পারে। সোমবার ইউরোর দরপতনের পেছনে নির্দিষ্ট কোনো কারণ ছিল না, তাই আমরা আবারও একটি অযৌক্তিক দরপতনের সাক্ষী হলাম। ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের ঠিক আগে এই ধরণের দরপতন আরও বেশি অযৌক্তিক বলে মনে হচ্ছে, যেখানে ধারাবাহিকভাবে তৃতীয়বারের মতো সুদের হার হ্রাসের ঘোষণা আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল, কারণ সার্বিক পরিস্থিতি এমন না যে তাডলারের পক্ষে কাজ করবে। মনে হচ্ছে মার্কেট মেকাররা নতুন ট্রেডারদের বিভ্রান্ত করতেই এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। ইউরোর ক্ষেত্রে যে ট্রেন্ড লাইনের ব্রেক ঘটেছে সেটি খুব সম্ভবত একটি ফলস ব্রেকআউট। সোমবার যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশেই কোনোরকম গুরুত্বপূ্র্ণ মৌলিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, সেইসাথে বেশিরভাগ ট্রেডার এখন ফেডের বৈঠকের দিকেই নজর রাখছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

সোমবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে আনুষ্ঠানিকভাবে কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হলেও, পুরো দিনজুড়ে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট লক্ষ্য করলেই স্পষ্টভাবে প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে। মার্কিন ট্রেডিং সেশনের সময় কেউ কেউ বহু কস্টে একটি সেল সিগন্যাল শনাক্ত করতে পারেন। স্বাভাবিকভাবেই, এটি একটি ভুল সিগন্যাল হিসেবে প্রমাণিত হয়, কারণ সারাদিন ধরে এই পেয়ারের মূল্যের মোট অস্থিরতার পরিমাণ ছিল প্রায় ৪০ পিপস।
মঙ্গলবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে দেখা যাচ্ছে যে স্থানীয় পর্যায়ে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। যেমনটি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, মধ্যমেয়াদে ডলারের বৃদ্ধির পক্ষে এখনও বৈশ্বিক পর্যায়ে কোনো কারণ পরিলক্ষিত হচ্ছে না, তাই আমরা এই পেয়ারের মূল্যের বুলিশ মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি। দৈনিক টাইমফ্রেমে কারেকশন অথবা ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট এখনো শেষ হয়নি, তবে ঘন্টাভিত্তিক চার্টে যেকোনো স্থানীয় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দীর্ঘমেয়াদে একই প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার ইঙ্গিত প্রদান করতে পারে। এই সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় ফেডের বৈঠকের ফলাফল মার্কেটে শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠনে সহায়তা করতে পারে।
মঙ্গলবার নতুন ট্রেডাররা আবারও 1.3319–1.3331 এরিয়ায় ট্রেডিং সিগন্যাল গঠনের প্রত্যাশা করতে পারেন। যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়ার ওপরে কনসোলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.3413-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নতুন লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। একইভাবে, যদি মূল্য এই এরিয়ার নিচে কনসোলিডেট করে, সেক্ষেত্রে মূল্যের 1.3259–1.3267-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন নেওয়া যেতে পারে। তবে এটি মনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে বর্তমানে মার্কেটে অত্যন্ত দুর্বল মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3096–1.3107, 1.3203–1.3212, 1.3259–1.3267, 1.3319–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590। সোমবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না, তবে যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যার মধ্যে ADP ও JOLTs প্রতিবেদন রয়েছে। যদিও JOLTs থেকে প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনকে বর্তমানে কিছুটা পুরনো তথ্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, এবং ADP থেকে প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনে মাসিক ফলাফলের বদলে সাপ্তাহিক ফলাফল প্রকাশ করা হবে, এজন্য এগুলোর ফলাফলও তুলনামূলকভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ হবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।