প্রধান Quotes Calendar ফোরাম
flag

FX.co ★ চীনে দ্বিমুখী শুল্ক চাপে নাকাল বিদেশী কোম্পানি

back
Trader Journals:::2025-04-28T09:41:59

চীনে দ্বিমুখী শুল্ক চাপে নাকাল বিদেশী কোম্পানি

চীনে দ্বিমুখী শুল্ক চাপে নাকাল বিদেশী কোম্পানি


শুল্কযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এরই মধ্যে একাধিক দেশের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসেছেন মার্কিন ও চীনা কর্মকর্তারা। কিন্তু দুই বাণিজ্য প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে আলোচনা অতিপ্রত্যাশিত হলেও সে বিষয়ে অগ্রগতির কোনো লক্ষণ নেই। উল্টো বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, শুল্কযুদ্ধ যারা শুরু করেছে, তাদেরই থামাতে হবে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি চীনে বিনিয়োগ করা বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুধারী তলোয়ারের মতো ক্ষতিগ্রস্ত করছে। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উপকরণ আমদানি, পরে একই দেশে রফতানির ক্ষেত্রে মোট দুবার শুল্ক দিতে হচ্ছে। চীনে কার্যক্রম রয়েছে এমন কোম্পানিকে বর্তমানে মার্কিন উপকরণ আমদানিতে ১২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিতে বসছে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক।
চীন সরকারের দেয়া তথ্যানুযায়ী, দেশটির মোট বাণিজ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের উৎস আন্তর্জাতিক কোম্পানি ও যৌথ উদ্যোগগুলো। এ থেকে দেশটির সামগ্রিক উৎপাদন খাতে শুল্কের প্রভাব স্পষ্ট।
অ্যাপল ও টেসলার মতো বড় মার্কিন কোম্পানি ছাড়াও অনেক ছোট প্রতিষ্ঠান চীনকে প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে। এসব কোম্পানি প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্র থেকে কাঁচামাল বা উপকরণ আমদানি করে, যা থেকে তৈরি পণ্য একই দেশে রফতানি করা হয়। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এতে একই পণ্যের ওপর চীনা ও মার্কিন উভয় শুল্ক পরিশোধের ঝুঁকিতে পড়ছে কোম্পানিগুলো।
‘কোম্পানিগুলোকে দুবার আঘাত করা হচ্ছে’ উল্লেখ করে হংকং ইউনিভার্সিটির এশিয়া গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের পরিচালক হেইওয়াই টাং বলেন, ‘বিদেশী কোম্পানিগুলো চীনা বাজারে সত্যিই চাপে পড়েছে। তারা যদি আমদানি করে, তবে চীনের শুল্ক দিতে হয়; আর যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করলে মার্কিন শুল্ক দিতে হয়।’
চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস ও এফটির পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটিতে সম্পূর্ণ বা আংশিক বিদেশী মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো গত বছর ৯৮ হাজার কোটি ডলারের রফতানি এবং ৮২ হাজার কোটি ডলার মূল্যের আমদানি করেছে, যা যথাক্রমে মোট রফতানির এক-চতুর্থাংশের বেশি ও আমদানির এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি।
গত বছর চীন প্রায় ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি ডলারের রেকর্ড বাণিজ্য উদ্বৃত্ত অর্জন করেছিল। ট্রাম্পের চাপিয়ে দেয়া শুল্ক সে বাণিজ্য উদ্বৃত্তকে আঘাত করতে পারে। মূলত সম্পূর্ণ ও আংশিক বিদেশী মালিকানাধীন কোম্পানির ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে চীনের রফতানি বাণিজ্য। বিশেষ করে হংকং ও ম্যাকাওয়ের কোম্পানিগুলো উৎপাদনের জন্য চীনের বড় ও সস্তা শ্রমের সুবিধা নিতে চায়।
‘ফরেন-ইনভেস্টেড এন্টারপ্রাইজেস’ নামে পরিচিত বিদেশী কোম্পানিগুলো ২০০৮ সালে চীনের মোট বাণিজ্যের ৫৫ শতাংশ হিস্যা নিয়ে এগিয়ে ছিল। অবশ্য চীন নিজস্ব প্রতিষ্ঠান তৈরিতে জোর দেয়ায় এ হিস্যা কমে আসে। সরকারি তথ্যমতে, গত বছরও ডলারের হিসাবে এসব কোম্পানি মোট বাণিজ্যের ২৯ দশমিক ৬ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করেছে।
লক্ষণীয় যে বিদেশী কোম্পানিগুলো গত বছরের চীনা মোট বাণিজ্য উদ্বৃত্তের মাত্র ১৬ শতাংশ হিস্যা দখলে রেখেছিল, কারণ তাদের রফতানির পরিমাণ আমদানির তুলনায় কম ছিল। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট মাইকেল হার্ট বলেন, ‘চীনে এমন অনেক বিদেশী কোম্পানি রয়েছে, যারা মার্কিন না হলেও মার্কিন উপকরণের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমান শুল্কনীতিতে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কিছু খাতের জন্য শুল্ক ছাড় দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে বলেও উল্লেখ করেন মাইকেল হার্ট।
‘প্রসেসিং ট্রেড’ নামে পরিচিত ব্যবস্থার আওতায় কিছু কোম্পানির জন্য শুল্ক ছাড় দেয় চীন। এগুলো এমন কোম্পানি, যারা উপকরণ ও কাঁচামাল আমদানির মাধ্যমে তা প্রক্রিয়াজাত করে ফের রফতানি করে। এছাড়া স্মার্টফোন ও ইলেকট্রনিকস পণ্যে ট্রাম্প অস্থায়ী শুল্ক মওকুফ করায় বড় মার্কিন স্মার্টফোন নির্মাতা ও ইলেকট্রনিকস প্রস্তুতকারকরা আপাতত ছাড় পাচ্ছে।
আবার বাণিজ্যযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে ছোট উৎপাদকদের জন্য চীন থেকে রফতানি করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যেমন ভেলং এন্টারপ্রাইজেস চীনে রান্নাঘরের সামগ্রী ও গৃহস্থালি পণ্য তৈরি করে, যা মার্কিন খুচরা বিক্রেতা চেইন ওয়ালমার্টের মাধ্যমে বিক্রি হয়। ইস্টম্যান নামের একটি মার্কিন কোম্পানির তৈরি ট্রিটান নামক প্লাস্টিক আমদানি করে তারা। ভেলংয়ের সিইও জ্যাকব রথম্যান বলেন, ‘আমরা এ উপাদান আমদানিতে একবার এবং তৈরি পণ্য রফতানি মিলিয়ে দ্বিগুণ শুল্কের আঘাতে পড়ছি।’
তিনি আরো জানান, চীন এমন একটি শুল্ক ছাড় দেয়, যেখানে চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করতে হয়। তবে যদি পণ্য অন্য কোনো দেশে রফতানি করা হয়, তাহলে সে ছাড় প্রযোজ্য হয় না।
অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলছেন, বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে চীনে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের (এফডিআই) প্রবাহ আরো কমতে পারে। রেনমিনবির হিসাবে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৪ সালে এফডিআই আগের বছরের তুলনায় ২৭ দশমিক ১ শতাংশ কমে গেছে।
হংকংয়ের লিংনান ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের প্রধান কিউ ডংশিয়াও বলেন, ‘যদি কোনো কোম্পানির লক্ষ্য হয় চীনের বাজারে পণ্য বিক্রি, তবে তারা এখনো আসবে। কিন্তু যদি লক্ষ্য হয় অন্যান্য বাজার বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য বিক্রি করবে, তাহলে তারা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদেশী কোম্পানিকে নিজেদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে হবে বলেও জানান কিউ ডংশিয়া
Forum user
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন:
back
loader...
all-was_read__icon
You have watched all the best publications
presently.
আমরা ইতোমধ্যে আপনার জন্য আকর্ষণীয় কিছু সন্ধান করছি।..
all-was_read__star
Recently published:
loader...
More recent publications...