যুক্তরাজ্যে সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ৮। অর্থনীতিবিদদের দেয়া পূর্বাভাসের সঙ্গে অসামাঞ্জস্যপূর্ণভাবে টানা তিন মাস এ অংকে স্থির রয়েছে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার। আগামী মাসে বাজেট ঘোষণার আগে এ খবরকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী র*্যাচেল রিভস। যুক্তরাজ্যের অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) জানিয়েছে, জুলাই ও আগস্টের মতো সেপ্টেম্বরেও ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হারে কোনো পরিবর্তন আসেনি। লন্ডনের আর্থিক বিশ্লেষকেরা মূল্যস্ফীতি ৪ শতাংশে পৌঁছার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। তবে পরিবহন খাতে মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও খাদ্যপণ্যের দাম কমা এবং বিনোদন খাতে মূল্যবৃদ্ধির গতি শ্লথ হওয়ায় সামগ্রিক হার স্থির রয়েছে।
ওএনএস জানায়, মূল্যস্ফীতির হার কমাতে বড় ভূমিকা রেখেছে খাদ্য, সংস্কৃতি ও বিনোদন খাত। আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের দাম দশমিক ২ শতাংশ কমেছে, যা গত বছরের মে মাসের পর প্রথমবারের মতো মাসভিত্তিক হিসাবে হ্রাস পেয়েছে। বার্ষিক খাদ্য মূল্যস্ফীতিও ৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশে। বিনোদন ও সংস্কৃতি খাতে দাম ছিল স্থিতিশীল। বিশেষ করে লাইভ মিউজিকের টিকিটের দাম আগস্টের তুলনায় ৮ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে, যেখানে গত বছর একই সময়ে দাম বেড়েছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
জ্বালানি ও পরিবহন খাতে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে কিছু খাতে মূল্যহ্রাস ভারসাম্য এনেছে। ওএনএস জানায়, সেপ্টেম্বরে পরিবহন খাতে ব্যয় আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে, যা আগস্টের ২ দশমিক ৪ শতাংশের তুলনায় বেশি।
সেপ্টেম্বরে অপরিবর্তিত থাকলেও মূল্যস্ফীতি টানা ১২ মাস ধরে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের (বিওই) নির্ধারিত ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার ওপরে রয়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, মূল্যস্ফীতির এ ধারা অব্যাহত থাকলে দেশটিতে আগামী ফেব্রুয়ারির আগেই সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
বর্ধিত খাদ্যমূল্য দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এ মূল্যহ্রাসে সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে।
অর্থমন্ত্রী র*্যাচেল রিভস বলেন, ‘এ সংখ্যাগুলোয় আমি সন্তুষ্ট নই। অনেক দিন ধরেই মানুষ বেশি পরিশ্রম করছে, কিন্তু তার তুলনায় কম ফল পাচ্ছে।’
তিনি জানান, আগামী ২৬ নভেম্বরের বাজেটে গৃহস্থালি ব্যয় কমানোর জন্য কিছু নীতি ঘোষণা করা হবে।
ওএনএস আরো জানায়, সেপ্টেম্বরে খুচরা মূল্যসূচক (আরপিআই) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশে। এ হার সাধারণত ট্রেন ভাড়া, অ্যালকোহল ও তামাকজাত পণ্যের কর নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বাজেট ঘোষণার সময় নেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সম্প্রতি জানিয়েছে, চলতি বছর ও আগামী বছরে জি৭ দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতির হারই সবচেয়ে বেশি থাকবে।