সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের দুর্বল নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। দিন শেষে ডলার খুব বেশি শক্তিশালী হতে পারেনি, এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকেও তেমন কোনো সহায়তা মেলেনি। সারাদিনে পরিষেবা ও উৎপাদন খাতের ছয়টি বিজনেস অ্যাক্টিভিটি বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচক প্রকাশিত হয়েছে, এবং এই ছয়টি সূচকের ফলাফলই একে অপরের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ ছিল। প্রতিটি দেশে যদি একটি সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে তো অন্যটি হ্রাস পেয়েছে। একটির ফলাফল যদি প্রত্যাশার চেয়ে ভালো আসে তো অন্যটি প্রত্যাশার চেয়ে কম এসেছে। এর ফলে, ইউরো কিংবা ডলার — কোনো কারেন্সিই শক্তিশালী মুভমেন্টের ভিত্তি পায়নি। তবে, মার্কিন ডলার এখনো কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে, যার কারণে অন্তত একটি কারেকটিভ রিবাউন্ড হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। প্রথমত, ডলার অনেক বেশি এবং অনেক দিন ধরে দরপতনের শিকার হয়েছে — তাই এক্ষন একটি কারেকশন হওয়া প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদে এখনো এই পেয়ারের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতা বিরাজ করছে। তৃতীয়ত, ট্রাম্প এখনো নতুন করে কোনো শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেননি এবং গুঞ্জন রয়েছে যে তিনি হয়তো তার অবস্থান কিছুটা নমনীয় করবেন। চতুর্থত, ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখন এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং চ্যানেলের নিচে অবস্থান করছে। তাই, এখনো আমরা এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশাই করছি।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
সোমবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমে, এই পেয়ারের মূল্য 1.0859–1.0861 এরিয়া থেকে বাউন্স করে এবং পরে 1.0797–1.0804 এরিয়া পর্যন্ত নেমে আসে। দ্বিতীয় এরিয়ার কাছাকাছি শর্ট পজিশন ক্লোজ করা যেত, কারণ সেখান থেকে মূল্য প্রথমে কিছুটা বাউন্স করেছিল। সামগ্রিকভাবে, সোমবারের ট্রেডিংয়ের মুভমেন্ট এটুকুই ছিল। এই ট্রেডটি লাভজনক ছিল এবং প্রায় ৩০–৪০ পিপস পর্যন্ত মুনাফা অর্জিত হয়।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, তবে এই প্রবণতার দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা এখন কমছে। যেহেতু মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারকে বেশি সমর্থন করছে, তাই আমরা এখনো এই পেয়ারের আরও দরপতনের প্রত্যাশা করছি। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ধারাবাহিকভাবে শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এবং বিশ্বে মার্কিন আধিপত্য পুনর্গঠনের জন্য বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে ডলারকে চাপের মধ্যে ফেলছেন। মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো রাজনৈতিক এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ছায়ায় ঢাকা পড়ে আছে, তাই এখনো ডলারের মূল্যের শক্তিশালী বৃদ্ধির আশা করা যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার ইউরোর দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ অনেকদিন পর মার্কেটের ট্রেডাররা মৌলিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ট্রেড করেছে (ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের পর), এবং টেকনিক্যালি, এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং চ্যানেল ব্রেক করে নিচের দিকে গিয়েছে। সম্প্রতি ডলার অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত বিক্রি করা হয়েছে এবং এটির মূল্যও কমেছে। তাই এখন একটি কারেকশনই যুক্তিযুক্ত সম্ভাবনা হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা উচিত: 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0859–1.0861, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1048।
মঙ্গলবার জার্মানিতে বিজনেস ক্লাইমেট বা ব্যবসায়িক আবহ সূচক প্রকাশিত হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিউ হোম সেলস বা নতুন আবাসন বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। উভয়ই প্রতিবেদনই গুরুত্বের দিক থেকে গৌণ হিসেবে বিবেচিত। আমাদের বিশ্বাস, এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল বর্তমানে চলমান কারেকশনকে ব্যাহত করবে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।