সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী এবং নিম্নমুখী — উভয় ধরনের মুভমেন্টই দেখা গেছে। এখনো এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, যার প্রধান কারণ হলো একটি অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন, যা গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কার্যকর রয়েছে — ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এটি বেশ বিরল একটি ঘটনা। এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং চ্যানেলের বাইরে চলে এসেছে, তাই এখন ট্রেন্ডলাইনের দিকে একটি কারেকশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউরো/ইউএসডি পেয়ারের মূল্যেরও এখন কারেকটিভ মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে, তাই আমাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী এই সপ্তাহে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হতে পারে। তবে, সোমবারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল অস্বাভাবিকভাবে দ্বন্দ্বপূর্ণ, কারণ যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস অ্যাক্টিভিটি সূচকগুলো প্রকৃত ফলাফল ও পূর্বাভাসের মধ্যে সম্পর্ক এবং গঠনগত দিক থেকে একে অপরের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ ছিল। এর ফলে, দিন শেষে মার্কিন ডলারের দর খুব সামান্যই বৃদ্ধির পেয়েছে। ব্রিটিশ পাউন্ড এখনো ডলারের বিপরীতে দরপতনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধ প্রদর্শন করছে, যার পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের অবস্থান — যারা সাম্প্রতিক বৈঠকে আরও বেশি হকিশ বা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। তবে, কোনো কারেন্সি পেয়ারের মূল্যই কারেকশন ছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য ঊর্ধ্বমুখী থাকতে পারে না।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
সোমবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় সেশনের শুরুতে, 1.2913 লেভেল থেকে একটি বাউন্স দেখা যায় এবং পেয়ারটির মূল্য প্রায় ৫০ পিপস ঊর্ধ্বমুখী হয়। দুর্ভাগ্যবশত, সবচেয়ে নিকটতম টার্গেট থেকে মাত্র ৭ পিপস দূরে এসে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যায়, তাই ট্রেডটি টেক প্রফিটের সাথে ক্লোজ করা সম্ভব হয়নি। এরপর আবারও 1.2913 থেকে একটি বাউন্স দেখা যায়, এবং তারপর মূল্য এই লেভেল ব্রেক করে যায়। টেকনিক্যালি, সব সিগন্যালই ভুল ছিল, কারণ কোনো সিগন্যালেই মূল্য টার্গেট লেভেলে পৌঁছায়নি। তবে কোন লোকসান হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল না, কারণ প্রতিবারই মূল্য অন্তত ২০ পিপস সঠিক দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে। তৃতীয় সিগন্যালটি উপেক্ষা করাই সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত ছিল।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে অনেক আগেই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ট্রাম্পের কার্যকলাপ সেটিকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমরা এখনো মধ্যমেয়াদে 1.1800 লেভেলের দিকে পাউন্ডের দরপতনের প্রত্যাশা করছি, তবে ট্রাম্পের পদক্ষেপের প্রভাবে ডলারের এই দরপতন আর কতদিন স্থায়ী হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। একবার এই মুভমেন্ট শেষ হলে, সব টাইমফ্রেমে টেকনিক্যাল স্ট্রাকচার পরিবর্তিত হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এখনো নিম্নমুখী প্রবণতাই বিরাজ করছে। পাউন্ডের মূল্যের এই ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের পেছনে কারণ থাকলেও, আবারও অতিরিক্ত ও অযৌক্তিকভাবে পাউন্ডের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
মঙ্গলবার GBP/USD পেয়ারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ ঘণ্টাভিত্তিক চার্টের টেকনিক্যাল স্ট্রাকচার এই সম্ভাবনাকেই সমর্থন করছে। পাউন্ড আবারও অতিরিক্ত ক্রয় করা হয়েছে এবং অযৌক্তিকভাবে দামী হয়ে উঠেছে।
৫ মিনিটের চার্টে ট্রেডিংয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক লেভেলগুলো হলো: 1.2301, 1.2372–1.2387, 1.2445, 1.2502–1.2508, 1.2547, 1.2613, 1.2680–1.2685, 1.2723, 1.2791–1.2798, 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা প্রতিবেদন প্রকাশের কথা নেই এবং যুক্তরাষ্ট্রে কেবল নিউ হোম সেলস বা নতুন আবাসন বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। তাই আজ এই পেয়ারের মূল্যের উপর সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম থাকবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত কৌশল হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।