বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য নিম্নমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে, যা অবশেষে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। সারাদিনে ট্রেডাররা দুটি প্রতিবেদনের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। যুক্তরাজ্যে ফেব্রুয়ারি মাসের মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্রে ডিউরেবল গুডস অর্ডার বা টেকসই পণ্যের আদেশ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যে ফেব্রুয়ারির মুদ্রাস্ফীতির হার প্রত্যাশার চেয়ে কম এসেছে, যদিও এর তেমন কোনো বড় প্রভাব নেই (কারণ মুদ্রাস্ফীতির হার এখনো বেশ উচ্চ এবং অ্যান্ড্রু বেইলি ভোক্তা মূল্য সূচকের আবারও বৃদ্ধির আশা করছেন), তবুও এটি পাউন্ডের দরপতনের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক কারণ হিসেবে কাজ করেছে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের টেকসই পণ্যের আদেশ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পূর্বাভাসের চেয়ে প্রায় ২% বেশি এসেছে, যা মার্কিন ডলারকে অতিরিক্ত সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু রাতের বেলা কী দেখা গেল? কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই পাউন্ডের মূল্য আবার হঠাৎ বেড়ে গেছে। এখনো কারেকশন চলছে, তবে তা খুবই দুর্বল, এবং অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনের উপস্থিতি এখনো মার্কেটে বুলিশ সেন্টিমেন্ট ধরে রেখেছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে শুধুমাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় সেশনে, যুক্তরাজ্যের ভোক্তা মূল্য সূচক প্রকাশের পর, এই পেয়ারের মূল্য 1.2913 লেভেলের নিচে কনসোলিডেট করে এবং দিনের বাকি সময়টুকু নিম্নমুখী প্রবণতায় থাকে। ফলে, নতুন ট্রেডাররা যেকোনো সময় শর্ট পজিশন ক্লোজ করলেও তা লাভজনক হতো।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেম অনুযায়ী অনেক আগেই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ট্রাম্প এই সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করছেন। আমরা এখনো মধ্যমেয়াদে 1.1800 এর টার্গেট লেভেলের দিকে পাউন্ডের দরপতনের প্রত্যাশা করছি। ট্রাম্পের প্রভাবে ডলারের দরপতন কতদিন স্থায়ী হবে তা এখনো অনিশ্চিত। একবার এই মুভমেন্ট শেষ হলে, সব টাইমফ্রেমে টেকনিক্যাল চিত্র উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে আপাতত, দীর্ঘমেয়াদে এখনো এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতাই প্রাধান্য পাচ্ছে। পাউন্ডের মূল্যের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুরোপুরি ভিত্তিহীন ছিল না, কিন্তু আবারও এটির মূল্য অতি মাত্রায় এবং অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য আরও হ্রাস পেতে পারে, কারণ 1 ঘণ্টার চার্টের টেকনিক্যাল সেটআপ এই সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। পাউন্ড আবারও অতিরিক্ত ক্রয় করা হয়েছে এবং অযৌক্তিকভাবে দামী হয়ে উঠেছে।
৫ মিনিটের চার্টে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.2301, 1.2372–1.2387, 1.2445, 1.2502–1.2508, 1.2547, 1.2613, 1.2680–1.2685, 1.2723, 1.2791–1.2798, 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা প্রতিবেদন প্রকাশের কথা নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রে চতুর্থ প্রান্তিকের চূড়ান্ত জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এটি তুলনামূলকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন, বিশেষত যদি এই প্রতিবেদনের ফলাফল পূর্বাভাসের চেয়ে নিম্নমুখী হয়, অর্থাৎ প্রান্তিক ভিত্তিতে 2.3%-এর নিচে আসে তাহলে মার্কেটে উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট সৃষ্টি হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত কৌশল হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।