শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ার তুলনামূলকভাবে টেকনিক্যাল এবং পূর্বাভাসযোগ্য প্যাটার্ন অনুযায়ী ট্রেড করেছে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার যখন এই পেয়ারের মূল্য তিন সপ্তাহ ধরে আটকে থাকা সাইডওয়েজ চ্যানেল ব্রেকআউট করেছিল, তখন যে মোমেন্টাম দেখা গিয়েছিল, তা মার্কিন ডলার ধরে রাখতে পারেনি। মনে করিয়ে দিচ্ছি, ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের ফলাফলকে "হকিশ বা কঠোর" হিসেবেই গণ্য করা যায়, কারণ জেরোম পাওয়েল মার্কেটের ট্রেডারদের "ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণের" প্রত্যাশা নিশ্চিত করেননি। তবে, দীর্ঘ সময় ধরে ফেড হকিশ বা কঠোর অবস্থানে থাকলেও গত তিন মাস ধরে ডলার একটানা দরপতনের শিকার হয়েছে—এমনকি দরপতন রোধের কোনো বড় ধরনের প্রচেষ্টাও দেখা যায়নি। সুতরাং, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধই এখনো ফরেক্স মার্কেটের প্রধান চালিকা শক্তি। নতুন খবরের অভাবেই এটি আপাতত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নেই। ট্রাম্প যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা দিলেও বিস্তারিত কিছু জানাননি। ফলে এটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কতটা লাভজনক, তা মূল্যায়ন করা সম্ভব হচ্ছে৩ না। তবুও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশ্বাস করেন, তার কথাই যথেষ্ট: তিনি যদি বলেন এটি "লাভজনক ও চমৎকার," তাহলে সেটাই সত্য। কিন্তু মার্কেটের ট্রেডাররা এখন আর ট্রাম্পকে বিশ্বাস করে না—এবং তারা ঠিক কাজটিই করে। ফলস্বরূপ, গত কয়েকদিনে ডলারের মূল্য খুব বেশি বৃদ্ধি পায়নি।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে মাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল, তাও সন্ধ্যার দিকে। তখন মার্কেটে ট্রেডিং সেশন শেষ হওয়ার আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি ছিল, তাই এই সিগন্যাল নিয়ে কাজ করা সম্ভবত যুক্তিযুক্ত ছিল না। তবে, কেউ যদি শর্ট পজিশন ওপেন করতেন, তাহলে সামান্য কিছু মুনাফা অর্জন করা যেত বা অন্তত ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করে রেখে নিশ্চিন্তে উইকেন্ডের ছুটি কাটানো যেত। এশিয়ান সেশনে মূল্য 1.1191–1.1198 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে, তবে এখানে 1.1198 একটি নতুন লেভেল—যেটি শুক্রবার চার্টে অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনো EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় আছে, যদিও তিন সপ্তাহ সাইডওয়েজ ট্রেডিংয়ের পর একটি নিম্নমুখী কারেকশন শুরু হয়েছে। সামগ্রিকভাবে মার্কেটে এখনো মার্কিন ডলারের প্রতি প্রবল নেতিবাচক মনোভাব বিরাজ করছে। তবে, যদি ট্রাম্প নিজেই বাণিজ্য সংঘাত প্রশমনের সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে ডলারের দর বৃদ্ধি পেতে পারে। টানা তিন মাস দরপতনের পর এই উর্ধ্বমুখী কারেকশন কতটা প্রসারিত হবে, সেই পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন।
সোমবারের ট্রেডিং পুরোপুরি টেকনিক্যাল ভিত্তির উপর নির্ভর করবে। মনে হচ্ছে এই পেয়ারের মূল্যের একটি কারেকশন শুরু হয়েছে, তবে এই দরপতন খুব বেশি শক্তিশালী নয় এবং ট্রেডাররা এখনো ডলার কেনার ব্যাপারে দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1191–1.1198, 1.1275–1.1292, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622, 1.1666, 1.1689।
সোমবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। তাই, যদি ট্রাম্প আবারও কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি না করেন, তাহলে আমরা চলমান নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্যে সীমিত মুভমেন্টের প্রত্যাশাই করছি।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।