প্রধান Quotes Calendar ফোরাম
flag

FX.co ★ GBP/USD. পাউন্ডের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সপ্তাহ

parent
ফরেক্স বিশ্লেষণ:::2025-05-12T09:03:56

GBP/USD. পাউন্ডের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সপ্তাহ

মার্কিন ডলার ব্যাপক শক্তিশালী হওয়ার কারণে GBP/USD পেয়ারটি আবারও চাপের মুখে পড়েছে। গত সপ্তাহে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের মে মাসের বৈঠকের ফলাফল এবং ওয়াশিংটন ও লন্ডনের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণার পর পাউন্ডের মূল্য 1.34 জোনে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। তবে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় — 1.3401 পর্যন্ত পৌঁছানোর পর পেয়ারটির মূল্য 1.3230–1.3320 রেঞ্জে ফিরে আসে এবং সাইডওয়েজ মুভমেন্টে শুরু যায়। আজ খবর এসেছে যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন তিন মাসের জন্য বাণিজ্য যুদ্ধে বিরতি নিতে সম্মত হয়েছে (যেখানে চীন শুল্ক 125% থেকে কমিয়ে 10% এবং যুক্তরাষ্ট্র 145% থেকে কমিয়ে 30% করেছে), যার ফলে মার্কেটে মার্কিন ডলার ব্যাপকভাবে শক্তিশালী হয়েছে।

GBP/USD. পাউন্ডের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সপ্তাহ

তবে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য যুদ্ধে বিরতির বাইরেও আরও কিছু কারণ পাউন্ডের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। যদিও মৌলিকভাবে কিছু ইতিবাচক উপাদান পাউন্ডকে সহায়তা করেছে, তবে সেগুলোর ঘাটতি ছিল, যা ক্রেতাদেরকে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের একটি স্থায়ী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠনে বাধা দিয়েছে। যেমন, মার্কেটের ট্রেডাররা শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য চুক্তির খবরে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখালেও পরে জানা যায় যে চুক্তিটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর হয়নি—বিস্তারিত বিষয়াবলী এখনো আলোচনাাধীন এবং এটি চূড়ান্ত হতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে। তদুপরি, এটি প্রকাশ পেয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশ পণ্যের ওপর শুল্ক 10% এর নিচে নামাতে আগ্রহী নয়। তারা জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য থেকে গাড়ি আমদানিতে শুল্ক 27% থেকে কমিয়ে 10% করা হতে পারে, তার বেশি নয়।

অর্থাৎ, প্রাথমিকভাবে চুক্তিটি যতটা চমকপ্রদভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল, বাস্তবে বিষয়টি সেরকম নয়; এটি ছিল কেবল একটি খসড়া মতৈক্য।

এই কারণেই GBP/USD পেয়ারের ক্রেতারা মূল্যকে 1.3400 এর ওপরে ধরে রাখতে পারেনি। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডও মিশ্র বার্তা দিয়েছে—একদিকে তারা ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদের হার কমিয়েছে, অন্যদিকে তারা পরিষ্কার করে জানি দিয়েছে যে মুদ্রানীতি দ্রুত নমনীয় করা হবে না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি বলেন, সুদের হার "স্বয়ংক্রিয়ভাবে" নির্ধারিত হয় না। তদ্ব্যতীত, এই বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস 0.75% (ফেব্রুয়ারির পূর্বানুমান) থেকে বাড়িয়ে 1.0% করা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে, আসন্ন অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল GBP/USD পেয়ারের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। যদি এই প্রতিবেদনগুলোতে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রদর্শিত হয়, তাহলে ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থানের সমাপ্তি হওয়ার প্রেক্ষিতে পাউন্ড সমর্থন পেতে পারে। অন্যদিকে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল এই পেয়ারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।

আগামীকাল, ১৩ মে, যুক্তরাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশটির বেকারত্বের হার 4.5%-এ বেড়ে যেতে পারে। এটি গত চার মাস ধরে 4.4% ছিল, তাই বেকারত্ব সামান্য বৃদ্ধি পেলেও পাউন্ডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তদুপরি, বেকার ভাতা আবেদনের সংখ্যা—এই প্রতিবেদনের আরেকটি উপাদান—পাউন্ডের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এই সংখ্যা জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে (জানুয়ারিতে 2.8K, ফেব্রুয়ারিতে 16.5K, মার্চে প্রায় 19K)। বিশ্লেষকরা এপ্রিল মাসে 22.3K-তে বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিচ্ছেন। এতে একটি নেতিবাচক প্রবণতা তৈরি হতে পারে। এদিকে, মজুরি প্রবৃদ্ধি 5.6% থেকে কমে 5.2%-এ নামতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

যদি আসন্ন প্রতিবেদন সকল উপাদানের ফলাফল প্রত্যাশা অনুযায়ী না আসে বা "নেতিবাচক অঞ্চলে" প্রবেশ করে, তাহলে এটি শ্রমবাজারে অস্থিতিশীলতা ও ট্রেডারদের মধ্যে ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণের প্রত্যাশা আরও বাড়াবে। এর ফলে ব্রিটিশ মুদ্রার ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হতে পারে।

তবে সপ্তাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হচ্ছে বৃহস্পতিবার, ১৫ মে প্রকাশিতব্য মার্চ মাসের জিডিপি প্রবৃদ্ধির সংক্রান্ত প্রতিবেদন। পূর্বাভাস অনুযায়ী, মার্চ মাসে কোনো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়নি (ফেব্রুয়ারির 0.5% বৃদ্ধির তুলনায়)। পাশাপাশি প্রান্তিকভিত্তিক জিডিপি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হবে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, 2025-এর প্রথম প্রান্তিক দেশটির জিডিপি 0.6% বাড়বে (2024-এর চতুর্থ প্রান্তিকে 0.1% ছিল), এবং বার্ষিক ভিত্তিতে 1.6% হবে (পূর্ববর্তী ছিল 1.5%)।

আবারও বলছি, মার্কেটের ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া নির্ভর করবে আসন্ন প্রতিবেদনের "ফলাফল"-এর উপর (বিশেষত প্রান্তিকভিত্তিক প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে)। যদি শ্রমবাজার ও জিডিপি প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল হয়, তাহলে GBP/USD বিক্রেতারা 1.30 জোনের দিকে একটি দীর্ঘমেয়াদি নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু করতে পারে, বিশেষ করে যখন ডলার আরও শক্তিশালী হচ্ছে। তবে যদি প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যায়, তাহলে ক্রেতারা একটি শক্তিশালী কারেকশন শুরু করতে পারে (1.32 এরিয়ার দিকে), বিশেষ করে যখন যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক যুদ্ধবিরতির প্রাথমিক উদ্দীপনা ম্লান হতে শুরু করবে। কারণ, ৯০ দিনের যুদ্ধবিরতি যুদ্ধের সমাপ্তি নয়, এবং আলোচনা সফল বা ব্যর্থ—উভয় দিকেই যেতে পারে। তাই উচ্চস্বরে প্রচারিত ভূরাজনৈতিক শিরোনামগুলো সামষ্টিক প্রতিবেদনের প্রভাব ছাপিয়ে গেলেও, সামষ্টিক প্রতিবেদনগুলো এখনো গুরুত্বপূর্ণ, এবং "ইতিবাচক ফলাফল" প্রকাশিত হলে এই প্রতিবেদনগুলো যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে।

তবে, GBP/USD পেয়ারের মূল্য এখন পুরোপুরি ঊর্ধ্বমুখী ডলারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যা বর্তমানে বাজার পরিস্থিতির সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী। বিক্রেতারা এখন D1 টাইমফ্রেমে বলিঞ্জার ব্যান্ডের নিচের লাইন 1.3270 সাপোর্ট লেভেলের টেস্ট ঘটাচ্ছে। যদি বিক্রেতারা মূল্যকে দিয়ে এই লেভেলের ব্রেক ঘটায়, তাহলে পরবর্তী টার্গেট হবে 1.3070 (দৈনিক চার্টে কিজুন-সেন লাইন)।

Analyst InstaForex
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন:
parent
loader...
all-was_read__icon
You have watched all the best publications
presently.
আমরা ইতোমধ্যে আপনার জন্য আকর্ষণীয় কিছু সন্ধান করছি।..
all-was_read__star
Recently published:
loader...
More recent publications...