বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবারের প্রায় অর্ধেক সময় জুড়ে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা গেছে। ইউরোর সাম্প্রতিক দর "বৃদ্ধি" বিশেষভাবে "প্রশংসনীয়" ছিল, যদিও সম্ভবত এটি মার্কিন ডলারের আরেকটি দরপতনই ছিল। ট্রাম্প পরিচালিত এই পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবিতে ইউরো এবং পাউন্ড এখনো কেবল দর্শকের ভূমিকায় আছে—মূলত ডলারই মূল্যের দিক থেকে এবং বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে পরিবর্তনের শিকার হচ্ছে। গতকাল যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি হ্রাস পাওয়ার প্রেক্ষাপটে মার্কেটের ট্রেডাররা দিনের অর্ধেক সময়জুড়ে মার্কিন ডলার বিক্রি করেছে। প্রকৃতপক্ষে, এই মূল্যস্ফীতির পতন কেবলমাত্র ডলার বিক্রি করার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক অজুহাত। ফেডারেল রিজার্ভ যেকোনো পরিস্থিতিতে ভোক্তা মূল্যে সূচকের বৃদ্ধি প্রত্যাশা করছে। এপ্রিল মাসে ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক মার্কিন মুদ্রাস্ফীতির উপর প্রভাব ফেলার জন্য যথেষ্ট সময় পায়নি, কারণ অনেক খুচরা বিক্রেতা আগেই পণ্য মজুদ করে রেখেছিল এবং সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ায়নি। সুতরাং মূল্যস্ফীতি ভবিষ্যতে বৃদ্ধি পাবে এবং ফেড নিকট ভবিষ্যতে সুদের হার কমাবে না। তবুও, মার্কেটের ট্রেডাররা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডলার বিক্রি করেছে—এবং তা নিঃসংকোচে করেছে। ডলারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনো বজায় রয়েছে, তবে এটি তুলনামূলকভাবে দুর্বল হয়েছে। এখনও ডলারের পক্ষে শক্তিশালীভাবে ঘুরে দাঁড়ানো অত্যন্ত কঠিন।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার ৫-মিনিট টাইমফ্রেমে দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। প্রথমে, পেয়ারটির মূল্য 1.1191–1.1198 এরিয়া ব্রেক করার চেষ্টা করে, মূল্য প্রায় ৫০ পিপস বেড়ে যায়। দুর্ভাগ্যবশত, মূল্য নিকটতম লক্ষ্যমাত্রা 1.1275 পর্যন্ত পৌঁছায়নি, তাই এই ট্রেড থেকে লাভ করতে হলে এটি ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হতো। পরে একই এরিয়ার আশপাশে আরেকটি সিগন্যাল গঠিত হলেও সেটি বেশ দুর্বল ছিল। সেল সিগন্যালটি দেরিতে এসেছিল, তবে এতে কোনো ক্ষতি হতো না।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, অবশেষে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে। সামগ্রিকভাবে মার্কেটের ট্রেডাররা এখনও মার্কিন ডলারের প্রতি বেশ নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে। তবে, ট্রাম্প নিজেই বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন, যার ফলে স্বল্পমেয়াদে ডলারের শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে ডলারের মূল্য কতটা বাড়বে তা নির্ভর করবে ট্রাম্প আদৌ কতগুলো চুক্তি সফলভাবে স্বাক্ষর করতে পারেন তার উপর।
বৃহস্পতিবার মূলত টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করা হবে, যদিও সারাদিন জুড়ে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট মাঝারি মাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারে। বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে এদের কোনোটিকেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে বিবেচনায় রাখার মতো লেভেলগুলো হলো: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1088, 1.1132–1.1140, 1.1198, 1.1275–1.1292, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622।
ইউরোজোনে বৃহস্পতিবার জিডিপি এবং শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকের জিডিপির দ্বিতীয় অনুমান বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়। যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা বিক্রয় (Retail Sales), উৎপাদক মূল্য সূচক (PPI), এবং বেকার ভাতা আবেদন (Jobless Claims) সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এর মধ্যে প্রথম দুটি প্রতিবেদনের ফলাফল মার্কেটে কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।