শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ার উল্লেখযোগ্য দরপতনের শিকার হয়, যদিও এর পেছনে কোনো ধরনের সামষ্টিক বা মৌলিক প্রেক্ষাপটগত কারণ ছিল না। তবে, বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের প্রেক্ষাপটে, ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনো বজায় রয়েছে। যদিও ডলার এখনো গত তিন মাসে হওয়া দরপতনের মাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শক্তিশালী হতে পারছে না, তবে শুল্ক হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য সংক্রান্ত আলোচনা ভবিষ্যতে ডলারের পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা তৈরি করছে। আমরা আরও উল্লেখ করতে চাই যে, ফেডারেল রিজার্ভের হকিশ বা কঠোর নীতির বিপরীতে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান মার্কেটে একটি স্পষ্ট বিপরীতমুখী অবস্থান তৈরি করছে, যদিও এখন পর্যন্ত এই বিষয়টি মার্কেটের ট্রেডারদের সেন্টিমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেসব তিনটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল এবং যেগুলিকে অন্তত মাঝারি গুরুত্বপূর্ণ বলা যায়, সেগুলোর ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল এসেছে। তাই ঐ প্রতিবেদনগুলোর প্রভাবে ডলার শক্তিশালী হয়নি।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার ৫-মিনিট টাইমফ্রেমে দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়, যার মধ্যে একটি কার্যকর ছিল। মার্কিন ট্রেডিং সেশনে, মূল্য 1.1198 লেভেল থেকে সরে গিয়ে, যেখানে এশীয় ও ইউরোপীয় সেশনে বেশিরভাগ সময় স্থির ছিল, 1.1132–1.1140-এর কাছাকাছি লক্ষ্যমাত্রা নেমে আসে। এটি নতুন ট্রেডারদের জন্য শর্ট পজিশন ওপেন করার একটি চমৎকার সুযোগ দেয়, যা থেকে প্রায় ৪৫ পিপস লাভ করা সম্ভব হয়। যদিও মুনাফা বেশ সীমিত ছিল, তবে এর কারণ হচ্ছে শুক্রবার মার্কেটে তুলনামূলকভাবে স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা বিরাজ করেছে।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে অবশেষে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হতে শুরু করেছে। সামগ্রিকভাবে মার্কেটে এখনও মার্কিন ডলারের প্রতি অত্যন্ত নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিলক্ষিত হচ্ছে, তবে যেহেতু ট্রাম্প এখন বাণিজ্য সংঘাত প্রশমনের পথে এগোচ্ছেন, তাই ডলারের দর শিগগিরই কিছুটা বাড়তে পারে। কতগুলো চুক্তি চূড়ান্তভাবে স্বাক্ষরিত হয় তার উপর ডলারের পুনরুদ্ধারের মাত্রা নির্ভর করবে। ট্রাম্পের যেকোনো উচ্চ-প্রভাবসম্পন্ন বিবৃতি—যেমন, পাওয়েলকে বরখাস্ত করা কিংবা নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি—মার্কেটে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
সোমবার EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং মূলত টেকনিক্যাল বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো কার্যত এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে তেমন কোনো প্রভাব ফেলছে না।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1088, 1.1132–1.1140, 1.1198, 1.1275–1.1292, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622।
সোমবার ইউরোজোনে এপ্রিল মাসের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে এটি ভোক্তা মূল্য সূচকের দ্বিতীয় অনুমান, যেটির ফলাফল প্রথম অনুমান থেকে খুব বেশি ভিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা কম। প্রথম অনুমান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও মার্কেটে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারেনি, তাই এই প্রতিবেদনের প্রভাবেও মার্কেটে উল্লেখযোগ্য মুভমেন্টের আশা করা হচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।