শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যও কমেছে, যদিও এর পেছনে বাস্তবিক অর্থে কোনো কারণ ছিল না। যেখানে ইউরোর মূল্যের স্পষ্ট নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, সেখানে পাউন্ডের মূল্যের মুভমেন্ট বরং ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে ছিল। তাই এটিকে বিদ্যমান প্রবণতার অংশ হিসেবে গণ্য করা যায় না। বরং এটি ছিল একটি এলোমেলো মুভমেন্ট, যার পেছনে কোনো নির্দিষ্ট ইভেন্ট বা খবরের প্রয়োজন ছিল না। শুক্রবারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান থেকে প্রকাশিত কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স বা ভোক্তা মনোভাবে সূচক, যেটির ফলাফল পূর্বাভাসের চেয়ে কম ছিল এবং আগের ফলাফল থেকেও দুর্বল ছিল। বিল্ডিং পারমিট বা নির্মাণ অনুমোদন ও হাউজিং স্টার্ট বা আবাসন নির্মাণের সূচনা সম্পর্কিত প্রতিবেদনগুলোর ফলাফলও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। কিন্তু এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল তুলে ধরে কী লাভ, যদি ট্রেডাররা সম্পূর্ণরূপে সামষ্টিক প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করে?
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর প্রভাবে এই পেয়ারের মূল্যের পেয়ারের মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনের শুরুতে, এই পেয়ারের মূল্য 1.3329 লেভেল থেকে রিবাউন্ড করে এবং ধীরে ধীরে নিকটতম লক্ষ্যমাত্রা 1.3259 পর্যন্ত নেমে আসে। তাই নতুন ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ওপেন করে প্রায় ৫০ পিপস লাভ করতে পারতেন।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো পুরোপুরিভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদক্ষেপের উপর নির্ভর করছে, এবং মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো গৃহীত নীতিমালার প্রতি সংশয় প্রদর্শন করছে। মনে রাখতে হবে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও সেটি ডলারের জন্য ইতিবাচক, পাউন্ডের জন্য নয়—কারণ এর আগে প্রতিটি শুল্ক বা নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত খবরে ডলারের দরপতন ঘটেছে। এখন, বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের খবরের প্রভাবে যেকোনো ডলারের শক্তিশালী হওয়া স্বাভাবিক। তবুও, মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো মার্কিন ডলারের উপর আস্থা রাখতে পারছে না।
সোমবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টও প্রধানত টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর দ্বারা প্রভাবিত হবে। সন্দেহ নেই, মার্কেটের ট্রেডাররা আবারো যেকোনো সুযোগে ডলার বিক্রি করার চেষ্টা করবে অথবা নতুন কোনো সংবাদ প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করবে। দিন দিন বাজার পরিস্থিতি অপরিবর্তিতই থাকছে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329, 1.3365, 1.3421–1.3440, 1.3488, 1.3537, 1.3580–1.3598।
সোমবার যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তাই সম্ভবত আমরা আবার একটি সীমিত রেঞ্জের ট্রেডিং কার্যক্রম দেখতে পারি। অবশ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারো সংবাদ শিরোনামে চলে আসতে পারেন, কিংবা যেকোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা আসতে পারে—কিন্তু এসব ঘটনা আগে থেকে অনুমান করা একেবারেই অসম্ভব।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।