সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
বুধবার খুবই অল্পসংখ্যক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে। এর মধ্যে তুলনামূলকভাবে উল্লেখযোগ্য হিসেবে কেবল জার্মানির বেকারত্বের হার এবং বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যায় পরিবর্তনকে গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে। তবে এই প্রতিবেদন শুধুমাত্র ইউরোজোনের একটি দেশের জন্য প্রযোজ্য এবং বর্তমানে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবির) অগ্রাধিকার তালিকায় বেকারত্বের বিষয়টি শীর্ষে নেই। ফলে, এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল মার্কেটে খুব সামান্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এবং সামগ্রিক চিত্রে এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বর্তমানে কারেকশনের অংশ হিসেবে মার্কিন ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে, যা সম্ভবত আজকের মধ্যেই শেষ হয়ে যেতে পারে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টগুলোর মধ্যে ফেডারেল রিজার্ভের কর্মকর্তাদের মধ্যে জন উইলিয়ামস ও নিল কাশকারি এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের প্রধান অর্থনীতিবিদ হিউ পিল-এর বক্তব্য উল্লেখযোগ্য। তবে আগেই বলা হয়েছে, বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বক্তৃতা মার্কেটে তেমন কোনো প্রভাব ফেলছে না, কারণ নীতিগত অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি ইতোমধ্যেই সম্পূর্ণরূপে মার্কেটে প্রতিফলিত হয়েছে। ট্রেডাররা এখন মূলত "ট্রাম্প ফ্যাক্টর"-এর ভিত্তিতে ট্রেড করছে। গত কয়েক সপ্তাহে ফেডের বহু কর্মকর্তাই বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ মুদ্রানীতির সম্ভাবনা নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। সাম্প্রতিক মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশের পর ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের অবস্থানও স্পষ্ট।
আমরা মনে করি, মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো বাণিজ্য যুদ্ধকেই প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করছে — যদিও এটি ধীরে ধীরে প্রশমিত হচ্ছে, তবুও তা এখনো চলমান রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছেন, তবে এসব খবর ডলারের জন্য খুব একটা সহায়ক হয়নি। যদি অধিকাংশ দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত না হয় বা আলোচনা দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে। এমনকি ট্রাম্প নতুন করে কোনো শুল্ক আরোপ না করলেও, মার্কেটের ট্রেডারদের মধ্যে তার গৃহীত নীতিমালার প্রতি গভীর নেতিবাচক মনোভাবের কারণে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে।
উপসংহার:
সপ্তাহের তৃতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে, EUR/USD এবং GBP/USD — উভয় পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে। দুটি পেয়ারের মূল্যেরই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, এবং ডলার বিভিন্ন কারণে — বা কখনো কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই — দরপতনের শিকার হচ্ছে। তাই বর্তমান কারেকশনটি যুক্তিসঙ্গত হলেও, এটি আজকের মধ্যেই শেষ হতে পারে। আমরা কেবল তখনই ডলারের শক্তিশালী পুনরুদ্ধার বিবেচনায় নেব যখন উভয় পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।