শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের দুর্বল এবং অনিশ্চিত মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না যে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু এটাও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না যে তা অব্যাহত রয়েছে। ৪-ঘণ্টার টাইম ফ্রেমে এখনো স্পষ্টভাবে একটি সাইডওয়েজ রেঞ্জ দেখা যাচ্ছে, অন্যদিকে দৈনিক টাইম ফ্রেমে একটি শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিদ্যমান রয়েছে। ফলে, আমরা এই ব্যাখ্যাই গ্রহণ করছি যে বর্তমানে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের সাইডওয়েজ মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে, ট্রেডিং কৌশলে যার যথাযথ প্রভাব থাকবে। পাউন্ড স্টার্লিংয়ের বড় ধরনের দরপতনের (অর্থাৎ ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট) সম্ভাবনা এখনো দেখা যাচ্ছে না, কারণ ডলারের শক্তিশালী হওয়ার পক্ষে কোনো উল্লেখযোগ্য ফান্ডামেন্টাল ফ্যাক্টর নেই। শুক্রবার যুক্তরাজ্যে প্রকাশিত অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল হতাশাজনক ছিল — মে মাসের খুচরা বিক্রয় প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় অনেক দুর্বল এসেছে। সম্ভবত এই কারণেই দিনের বেলায় পাউন্ডের মূল্য বাড়তে পারেনি।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে কোনো ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়নি। দৈনিক মোট অস্থিরতার পরিমাণ ছিল ৭১ পিপস, যা তুলনামূলকভাবে কম এবং কোনো প্রবণতাভিত্তিক মুভমেন্ট দেখা যায়নি। ফলে, আমরা সিগনাল না পাওয়ার বিষয়টিকে একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে বিবেচনা করছি। তুলনামূলকভাবে, EUR/USD পেয়ারের তিনটি সিগনাল তৈরি হয়েছিল, কিন্তু এর কোনোটিই ট্রেডারদের জন্য লাভজনক হয়নি।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো কেবলমাত্র ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে এবং তার গৃহীত নীতিমালার ব্যাপারে ট্রেডারদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। এর ফলে, ট্রেডাররা হয় ডলার বিক্রি অব্যাহত রাখছে, নয়তো নতুন কোনো নেতিবাচক ঘটনার জন্য অপেক্ষা করে যাতে আবার ডলার বিক্রি শুরু করা যায়। যতদিন না ট্রেডাররা বাণিজ্য যুদ্ধের সমাপ্তির প্রকৃত লক্ষণ দেখতে পায় এবং ট্রাম্প এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া বন্ধ করেন যা নেওয়ার জন্য তার সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই ততদিন এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে — উল্লেখ্য যে ট্রাম্পের এই ধরনের সিদ্ধান্ত সাধারণত বিনিয়োগকারীদের যা হতবাক করে দেয়। মাঝে মাঝে ডলারের দর কিছুটা শক্তি বাড়তে পারে, কারণ প্রতিদিন এটির দরপতন ঘটতে পারে না। তবে এখন পর্যন্ত এমন ঘটনা খুবই বিরল।
সোমবার পুনরায় GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হতে পারে কারণ নিম্নমুখী প্রবণতা সম্ভবত শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে, দৈনিক ট্রেডিংয়ে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে যেসব লেভেলের ভিত্তিতে ট্রেডিং করা যেতে পারে, সেগুলো হলো: 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3518–1.3535, 1.3580–1.3592, 1.3643–1.3652, 1.3695 এবং 1.3740। সোমবার যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে পরিষেবা ও উৎপাদন খাতের PMI সূচক প্রকাশিত হবে, এবং দিনের বেলায় এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।