সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
বুধবার কোনো ধরনের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। সপ্তাহটি মোটামুটি সক্রিয় ট্রেডিংয়ের সাথে শুরু হয়েছে, যেখানে উভয় কারেন্সি পেয়ারেরই দরপতন হয়েছে, যদিও মৌলিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ডলারের আরেক দফা দরপতনের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা মার্কেটের বিনিয়োগকারীদের কোনোভাবেই প্রভাবিত করেনি, কারণ এগুলো ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এবং তার আগেই আমদানি শুল্ক নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবস্থান আরও দশবার পরিবর্তিত হতে পারে। উপরন্তু, যেসব দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তাদের সঙ্গেও যেকোনো সময় বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। সুতরাং, বর্তমানে আমরা যা দেখছি তা নিতান্তই একটি টেকনিক্যাল কারেকশন।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
বুধবারের গুরুত্বপূর্ণ ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের মধ্যে ইসিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ ফিলিপ লেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট লুইস ডে গুইন্ডোস-এর বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে। তবে আগেও উল্লেখ করা হয়েছে, ইউরোপীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থার অবস্থান বর্তমানে 100% স্পষ্ট, এবং সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত ইউরোর বিনিময় হারে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলেনি।
ট্রেডারদের কাছে এখনও বাণিজ্যযুদ্ধই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যার কোনো সমাধানের ইঙ্গিত এখনো নেই। পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হচ্ছে, কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন পর্যন্ত মাত্র তিনটি বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। উপরন্তু, ট্রেডাররা বুঝে উঠতে পারছে না যে আনন্দ করার কী আছে যখন ট্রাম্প কর্তৃক আরোপিত সকল শুল্কই বহাল রয়েছে। এই সপ্তাহে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আবারো সেই দেশগুলোর ওপর শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন, যারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে চুক্তি করতে আগ্রহী নয়, এবং একই সঙ্গে তামা আমদানির ওপর শুল্ক বাড়ানোর কথাও জানিয়েছেন। দেখা যাচ্ছে, পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। তাই এখনো ডলারের মূল্যের টেকসই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কোনো ভিত্তি দেখা যাচ্ছে না।
উপসংহার:
সপ্তাহের তৃতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে, কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা প্রতিবেদনের প্রকাশনা না থাকায় উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের খুব ধীরগতির মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। টেকনিক্যাল কারেকশন চলছে, তবে যেকোনো সময় তা শেষ হতে পারে। উভয় কারেন্সি পেয়ারেরই ডাউনওয়ার্ড ট্রেন্ডলাইন গঠিত হয়েছে, এবং সেগুলো ব্রেক করে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হলেই আবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ফিরে আসার ইঙ্গিত পাওয়া যাবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী আছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।