শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যেরও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট হয়েছে, তবে এই মুভমেন্টের বাস্তবিক প্রভাব খুবই সীমিত ছিল। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনো সক্রিয় রয়েছে এবং ট্রেডাররা অনেক মৌলিক ও অর্থনৈতিক ঘটনাকে এখনো অস্পষ্টভাবে মূল্যায়ন করে চলেছে। তাই, আমাদের মতে এই সময়ে টেকনিক্যাল দিকগুলোর ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
গত তিন সপ্তাহে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পক্ষে উল্লেখযোগ্য মৌলিক কোনো সহায়ক কারণ দেখা যায়নি। তবে, এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে মার্কিন ডলার কোনো "তৃতীয় বিশ্বের" কারেন্সি নয়। এটি ১৬ বছর ধরে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের পর টানা পাঁচ মাস ধরে দরপতনের মধ্যে ছিল। বর্তমানে যেটুকু মূল্য বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে, তা দৈনিক টাইমফ্রেমে একটি ক্ষুদ্র কারেকশন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যদি এমন কারেকশন নাও হত, তাহলে মার্কেটের সার্বিক মুভমেন্ট দেখতে কেমন হতো?
সুতরাং, বর্তমানে আমরা এই পেয়ারের মূল্যের এমন একটি মুভমেন্ট পর্যবেক্ষণ করছি, যা সম্পূর্ণরূপে মৌলিক প্রেক্ষাপটের বিপরীত। ডলারের দরপতনের জন্য মাত্র দুটি কারণই যথেষ্ট: ফেডারেল রিজার্ভের সঙ্গে ট্রাম্পের টানাপোড়ন এবং পুরো বিশ্বের অর্ধেক দেশের সঙ্গে তাঁর বাণিজ্য যুদ্ধ। আমাদের ধারণা, বর্তমানে যেসব সংবাদ "উপেক্ষিত" হচ্ছে, এই কারেকশন শেষ হলে সেগুলো একে একে মার্কেটে প্রভাব বিস্তার করবে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, শুক্রবার দুইটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমত, এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421 এরিয়া থেকে নিখুঁতভাবে রিবাউন্ড করে এবং মার্কিন ট্রেডিং সেশনের সময় 1.3458 লেভেল পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। দিনের শেষ নাগাদ আমরা এই লেভেলটিকে 1.3466-এ আপডেট করি। যেকোনো ক্ষেত্রে, ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টটি এই লেভেলের কাছেই শেষ হয় এবং যখন মূল্য এই লেভেলের নিচে কনসোলিডেট করে, তখন নতুন ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ওপেন করার চিন্তা করতে পারতেন। দিনের শেষ নাগাদ এই পেয়ারের মূল্য আবার 1.3413–1.3421 জোনে ফিরে আসে।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। আমরা মনে করি বর্তমান এই দরপতন নিছকই একটি টেকনিক্যাল কারেকশন, কারণ এখনো ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পক্ষে কোনো মৌলিক কারণ বিদ্যমান নেই। তবুও, ট্রেডাররা এখন টেকনিক্যাল কারণে ভিত্তিতে ট্রেড করছে, এবং আমরা বর্তমানে সেই প্রবণতাই দেখতে পাচ্ছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত এই পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে উপরের দিকে যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত ছয় মাসব্যাপী চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার পক্ষে কোনো টেকনিক্যাল ভিত্তি নেই।
সোমবার, আবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট শুরু হতে পারে, তবে সপ্তাহের প্রথম দিনের ট্রেডিংয়ে ঊর্ধ্বমুখী বা নিম্নমুখী প্রবণতার জন্য কোনো শক্তিশালী অনুঘটক নেই—যদি না ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন কিংবা "পাওয়েলকে বিশবারের মতো বরখাস্ত করেন"।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিচের লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা যেতে পারে: 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466, 1.3518–1.3525, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763, 1.3814–1.3832।
সোমবারের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে উল্লেখযোগ্য কোনো ইভেন্ট নির্ধারিত নেই।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।