মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল, যা পূর্বাভাস অনুযায়ীই ঘটেছে।
স্মরণ করিয়ে দেওয়া যাক, এর আগের দিন এই পেয়ারের মূল্য ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনের ওপরে কনসোলিডেশন সম্পন্ন করেছিল, যার ফলে টানা তিন সপ্তাহ ধরে চলা নিম্নমুখী প্রবণতার সমাপ্তি ঘটে। সুতরাং, কমপক্ষে টেকনিক্যাল দিক থেকে এই পেয়ারের মূল্যের আবার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনার যৌক্তিকতা ছিল। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণই পূর্বাভাসের মূল হাতিয়ার ছিল। উল্লেখযোগ্য যে, বিগত কয়েক সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় ২০ বার নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন এবং আরও কিছু শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে সরাতে এবার শুরু হয়েছে "ঘৃণ্য কৌশল"-সহ নানাবিধ মুখোমুখি সংঘাত। এসব ঘটনাবলির একটি অভিন্ন বার্তা ছিল: ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকা উচিত। তবে, মার্কিন ডলারের দর টানা তিন সপ্তাহ ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছিল, যা অবশ্যই দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কথা নয়। সুতরাং, আমরা মনে করি সামগ্রিক মৌলিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ইউরোর দর আরও বাড়বে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য কেবল মার্কিন ট্রেডিং সেশনের সময়ই সক্রিয় মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছিল। এই সময়ের মধ্যেই ইউরোর বিনিময় হার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তীব্র গতিতে বৃদ্ধি পায়, বাকি সময়জুড়ে ছিল স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার সাথে সাইডওয়েজ মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। পুরো দিনের মধ্যে কেবল একটি ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়েছিল, তবে সিগন্যালটি এমন এক সময় গঠিত হয়েছিল যখন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ইতোমধ্যেই সমাপ্তির পথে ছিল।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে দেখা যাচ্ছে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের তিন সপ্তাহব্যাপী চলা কারেকশন সম্ভবত শেষ হয়েছে। ট্রাম্পের অবস্থানে সাম্প্রতিক সময়ে কোনো পরিবর্তন না আসায়, বরং ফেডের সঙ্গে সংঘাত এবং বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত আলোচনাগুলো আরও জোরালো হয়ে ওঠায়, আমরা মধ্যমেয়াদে মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো কারণও দেখছি না। এছাড়া, ট্রেন্ডলাইন ব্রেক হয়ে যাওয়ায় ইউরোর মূল্য নতুন করে ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বুধবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ 1.1666-এর গুরুত্বপূর্ণ লেভেল ও ট্রেন্ডলাইন ইতোমধ্যেই ব্রেক করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা ধারাবাহিক তথ্যপ্রবাহ মার্কেটের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পুনরায় ডলার বিক্রির প্রবণতা তৈরি করছে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
বুধবার ইউরোজোন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের প্রকাশনা বা অর্থনৈতিক ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। তবে এর মানে এই নয় যে আবারও মার্কিন ডলারের দরপতন হবে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।