সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
বুধবার কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। ইউরোজোন, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের ইভেন্ট ক্যালেন্ডারে কিছুই নেই, আর যুক্তরাষ্ট্রে নতুন আবাসন বিক্রয় সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে—তবে এটি মার্কেটে তেমন উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে বলে মনে হচ্ছে না। ফলে, দিনের বেশিরভাগ সময়জুড়ে মার্কেটে স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার মধ্য দিয়ে রেঞ্জ-বাউন্ড ট্রেডিং দেখা যেতে পারে। আবারও দৃষ্টি যাচ্ছে মার্কিন ট্রেডিং সেশনের দিকে, কারণ তখন সাধারণত ইউরোপীয় সেশনের তুলনায় বেশি সক্রিয় ও গতিময় মুভমেন্ট দেখা যায়। উল্লেখযোগ্য যে, মার্কেটে এখনও ডলার বিক্রির পক্ষে একাধিক কারণ রয়েছে। তাই ইভেন্ট ক্যালেন্ডারে তেমন কিছু না থাকলেও মার্কিন ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
বুধবার কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টও নির্ধারিত নেই। গতকাল ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বক্তব্য প্রদান করেছেন, তবে এতে কোনো তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য উঠে আসেনি। পাওয়েল পদত্যাগ করেননি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের উসকানিতে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি, এবং মুদ্রানীতির বিষয়ে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন।
বাণিজ্যযুদ্ধই এখনও মার্কেটের ট্রেডারদের কাছে প্রধান উদ্বেগের বিষয় হয়ে আছে, এবং এর কোনো সমাধানের ইঙ্গিত এখনো দেখা যাচ্ছে না। এই বিষয়টি আগামী আরও কিছুদিন মার্কিন ডলারের উপর প্রভাব ফেলতে থাকবে। তাই যদি প্রতিদিন আমরা একই ধরনের ব্যাখ্যা প্রদান করি, তা দেখে বিস্ময়ের কিছু নেই—কারণ সামগ্রিক প্রেক্ষাপট এখনও জটিল অবস্থায় রয়েছে। ট্রাম্প গত সাড়ে চার মাস ধরে আলোচনার পর মাত্র তিনটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করতে পেরেছেন, যার একটি নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। সম্ভাব্য ৭৫টি চুক্তির মধ্যে মাত্র ৩টি সম্পন্ন হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেইসব দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে আগ্রহী নয়। একইসঙ্গে, তামা, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সেমিকন্ডাক্টর পণ্যের আমদানির উপর শুল্কও বাড়ানো হয়েছে। এই নতুন শুল্কগুলো এখনো বাজারমূল্যে প্রতিফলিত হয়নি, কারণ ট্রেডাররা মূলত টেকনিক্যাল কারেকশন নিয়ে ব্যস্ত ছিল।
উপসংহার:
সপ্তাহের তৃতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টের অনুপস্থিতির কারণে উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের দুর্বল মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। উভয় পেয়ারের মূল্যের টেকনিক্যাল কারেকশন ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে, ফলে আগামী সপ্তাহ ও মাসগুলোতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ ইউরোর জন্য মূল বিবেচ্য এরিয়া হলো 1.1740–1.1745 এবং ব্রিটিশ পাউন্ডের জন্য 1.3518–1.3532।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।