সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
বৃহস্পতিবার তুলনামূলকভাবে বেশ কয়েকটি সামষ্টিক প্রতিবেদন প্রকাশের কথা রয়েছে, তবে এর মধ্যে শুধুমাত্র অল্প কয়েকটি প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। জার্মানি ও ইউরোজোনের বেকারত্বের হার প্রকাশিত হবে এবং জার্মানিতে মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন বর্তমানে মার্কেটে খুব একটা প্রভাব ফেলছে না, কারণ এই সূচকটি 2%-এর আশেপাশে স্থিতিশীল হয়ে গেছে। পূর্বাভাস বা আগের মান থেকে তেমন কোনো বড় বিচ্যুতির সম্ভাবনাও কম। যুক্তরাষ্ট্রে আজ কোর PCE মূল্য সূচক, ব্যক্তিগত আয় এবং ব্যয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এগুলোও স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন সূচক হিসেবে বিবেচিত হয়। আমাদের ধারণা, আজ অস্থিরতা কমে আসবে এবং ট্রেডাররা শুক্রবারের আগে ট্রেডিং কার্যক্রম থেকে সাময়িক বিরতিতে যাবে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
বৃহস্পতিবার কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, কারণ দিনের মধ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য নির্ধারিত নেই। গত রাতেই জেরোম পাওয়েল পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক মন্তব্য তাকে প্রভাবিত করে না এবং ফেডারেল রিজার্ভ হয়তো বছরের শেষ নাগাদ কেবল একবারই সুদের হার কমাতে পারে।
বাণিজ্য যুদ্ধই এখনো বিনিয়োগকারীদের মূল উদ্বেগের বিষয় হিসেবে রয়ে গেছে এবং এটি সোমবার থেকে নতুন রূপ ধারণ করেছে। আমরা এখনো মনে করি, যেকোনো বাণিজ্য চুক্তি যাতে শুল্ক বহাল থাকে, সেটিও আসলে "ভিন্ন রূপে বাণিজ্য যুদ্ধ" হিসেবেই বিবেচিত হওয়া উচিত। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির মতো চুক্তিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইতিবাচক। তাই, এ ধরনের প্রতিটি নতুন চুক্তিই ডলারের আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। তবে বৃহত্তর ও মৌলিক দৃষ্টিকোণ থেকে ট্রেডাররা এখনো নতুন বাণিজ্য কাঠামো এবং ট্রাম্পের সুরক্ষাবাদী নীতিমালাকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। আমাদের দৃষ্টিতে, এ ধরনের মৌলিক পটভূমি দীর্ঘমেয়াদে ডলারের দর বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত নয়। সুতরাং, আমরা এখনো মনে করি দৈনিক টাইমফ্রেমে কেবল একটি নিম্নমুখী কারেকশন হচ্ছে।
উপসংহার:
এ সপ্তাহের শেষদিকের ট্রেডিংয়ে, আজ কোনো বড় ইভেন্ট না থাকায় উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্য তুলনামূলকভাবে শান্ত মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। এখনো স্থানীয় পর্যায়ে ইউরোর কিছুটা দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে এবং মূল্য 1.1455–1.1474 এর কাছাকাছি থাকা অবস্থায় পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। পাউন্ডের ক্ষেত্রে, আরও দরপতনের সম্ভাবনাই বেশি, তবে আজকের জন্য যে লেভেলটি মনোযোগের দাবি রাখে সেটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল লেভেল – 1.3259।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।