ইউরোর ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ এবং টিপস
যখন MACD সূচকটি ইতোমধ্যেই শূন্যের বেশ অনেকটা নিচে নেমে গিয়েছিল তখন এই পেয়ারের মূল্য 1.1536-এর লেভেল টেস্ট করেছিল, যা এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করে দেয়। এই কারণে, আমি ইউরো বিক্রি করিনি এবং পুরো নিম্নমুখী মুভমেন্টটি এড়িয়ে গেছি।
ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যের পর মার্কিন ডলার শক্তিশালী হয়েছে। মনে করিয়ে দিই, ফেড সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে এবং পাওয়েল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ উপেক্ষা করে, কমিটির কিছু সদস্যের সুদের হার হ্রাসের আহ্বান এড়িয়ে গেছেন। এমনকি কিছু বিশ্লেষক যারা ফেডের আরও ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থানের প্রত্যাশা করেছিলেন, তাদের প্রত্যাশার বিপরীতে পাওয়েলের অবস্থান বৈশ্বিকভাবে ডলারকে সমর্থন দিয়েছে। বিনিয়োগকারীরা তার মন্তব্যকে ফেডের পক্ষ থেকে সক্রিয়ভাবে মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন, যদিও এতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কঠোর অবস্থান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন এবং মূল্যস্ফীতির স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেয়ার বার্তা বহন করে। ডলারের মূল্যের ভবিষ্যত মুভমেন্ট এখন নির্ভর করবে আসন্ন অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল ও ফেডের মুদ্রানীতির ভারসাম্য রক্ষার সক্ষমতার উপর। ভবিষ্যত মুদ্রানীতি সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা নির্ধারণের জন্য মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিটি বিবৃতি ও সিদ্ধান্ত গভীরভাবে বিশ্লেষণ করবে।
স্বল্পমেয়াদে, ইউরো চাপের মধ্যে থাকতে পারে। ফ্রান্স ও জার্মানির মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফলের কারণে নেতিবাচক প্রভাব আসতে পারে, সেইসাথে জার্মানিতে বেকারত্বের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি ইউরোজোনে বেকারত্ব বৃদ্ধির বিষয়টিও এতে ভূমিকা রাখতে পারে। বিনিয়োগকারীরা এই প্রধান অর্থনৈতিক সূচকগুলোর দিকেই মনোযোগ দেবে। এগুলোর ফলাফল যেকোনো নেতিবাচক চমক—যেমন এই সূচকগুলোর একটিতে অবনতি—নতুন করে ইউরো বিক্রির প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে, কারণ এতে ইউরোজোনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ বাড়বে। ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI), যেটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রাস্ফীতি সূচক, বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে। বেশি নিম্ন মূল্যস্ফীতি দেখা গেলে ইসিবি মুদ্রানীতির দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্বিবেচনা করতে এবং সম্ভবত অতিরিক্ত প্রণোদনা পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হতে পারে, যা ইউরোর ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।
বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, বিশেষ করে জার্মানিতে—যা ইউরোজোনের বৃহত্তম অর্থনীতি—আরও একটি উদ্বেগজনক সংকেত হতে পারে। কর্মসংস্থান হ্রাস পেলে সেটি শিল্পখাতে সংকট এবং ভোক্তা ব্যয়ের পতনের ইঙ্গিত দিতে পারে। এই বিষয়গুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং ইসিবির ওপর মুদ্রানীতি নমনীয় করার চাপ বাড়াতে পারে।
দৈনিক কৌশলের ক্ষেত্রে, আমি মূলত পরিকল্পনা #1 এবং #2 বাস্তবায়নের উপর মনোযোগ দেব।
বাই সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: আজ যখন ইউরোর মূল্য 1.1489-এর লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে 1.1452-এর (চার্টে সবুজ লাইন দ্বারা চিহ্নিত) লেভেলে পৌঁছাবে, তখন আপনি ইউরো কিনতে পারেন। মূল্য 1.1489-এর লেভেলে গেলে, আমি লং পজিশন ক্লোজ করার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 30-35 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর শর্ট পজিশন ওপেন করব। আজ শুধুমাত্র আসন্ন প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হলে ইউরো ক্রয় করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ! এই পেয়ার কেনার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের উপরে রয়েছে এবং সেখান থেকে উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: আজ MACD সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1421-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রে আমি ইউরো কেনার পরিকল্পনা করছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে ঊর্ধ্বমুখী করবে। আমরা 1.1452 এবং 1.1489-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করতে পারি।
সেল সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: EUR/USD পেয়ারের মূল্য চার্টে লাল লাইন দ্বারা চিহ্নিত 1.1421-এর লেভেলে পৌঁছানোর পর আমি ইউরো বিক্রি করার পরিকল্পনা করছি। লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1365-এর লেভেল, যেখানে মূল্য পৌঁছালে আমি সেল পজিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 20-25 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর বাই পজিশন ওপেন করব। আজ যেকোনো সময় এই পেয়ারের উপর চাপ ফিরে আসতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ! বিক্রি করার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের নিচে রয়েছে এবং শূন্যের নিচে নামতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারবট জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1452-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রেও আমি আজ ইউরো বিক্রি করতে যাচ্ছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে নিম্নমুখী করবে। আমরা 1.1421 এবং 1.1365-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দরপতনের আশা করতে পারি।
চার্টে কী আছে:
- হালকা সবুজ লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট ক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় সবুজ লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্দেশ করে, কারণ এই লেভেলের উপরে আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
- হালকা লাল লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট বিক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় লাল লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে, কারণ এই লেভেলের নিচে আরও দরপতনের সম্ভাবনা নেই।
- মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার সময় ওভারবট এবং ওভারসোল্ড জোন মূল্যায়নের জন্য MACD সূচক ব্যবহার করা উচিত।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
- নতুন ফরেক্স ট্রেডারদের মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে মার্কেটে এন্ট্রি না করাই উত্তম। যদি আপনি সংবাদ প্রকাশের সময় ট্রেডিং করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে লোকসানের সম্ভাবনা হ্রাসের জন্য অবশ্যই স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন। স্টপ-লস অর্ডার ছাড়া ট্রেডিং করলে দ্রুত আপনার সম্পূর্ণ ডিপোজিট শেষ হয়ে যেতে পারে, বিশেষত যদি আপনি অর্থ ব্যবস্থাপনার নীতিমালা উপেক্ষা করেন এবং বেশি ভলিউমে ট্রেড করেন।
- মনে রাখবেন, সফল ট্রেডিংয়ের জন্য একটি সুসংগঠিত ট্রেডিং পরিকল্পনা থাকা আবশ্যক, ঠিক যেমনটি উপরে নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে সেটি দৈনিক ভিত্তিতে ট্রেড করা ট্রেডারদের জন্য লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।