বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যেরও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল, যা EUR/USD পেয়ারের মতো একই কারণে ঘটেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও এমন কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করে যাচ্ছেন, যাদের তিনি অপছন্দ করেন এবং ফেডারেল রিজার্ভের ওপর এমন চাপ প্রয়োগ করছেন যে, এখন ফেডের সদস্যরাই প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি হওয়ার পরিবর্তে পদত্যাগের কথা ভাবছেন। একই সময়, ট্রাম্প বিশ্বের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করে চলেছেন। অনেক ক্ষেত্রে, তিনি দ্বিতীয় বা এমনকি তৃতীয় দফা শুল্ক আরোপ করছেন। শুল্কের ওপর আবার নতুন শুল্ক চাপানো হচ্ছে, যার সঙ্গে উদারহস্তে নিষেধাজ্ঞা ও হুমকি যোগ করা হচ্ছে। ফলে, খুব কম বিনিয়োগকারী বা ট্রেডারই বর্তমানে গুরুত্বসহকারে মার্কিন ডলার কেনার কথা ভাবছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি হয়তো দ্বিগুণ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে, কিন্তু অন্যান্য সামষ্টিক সূচকগুলোর ফলাফল দুর্বল হয়ে পড়ছে। তাই, আমরা এখনো মনে করি না যে এই পেয়ারের মূল্যের 2025 সালের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শেষ হয়ে গেছে। আজ ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের বৈঠক রয়েছে এবং সাময়িকভাবে পাউন্ডের কিছুটা দরপতন হতে পারে। তবে আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে, এই ইভেন্টটি GBP/USD পেয়ারের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে না।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। প্রথমত, এই পেয়ারের মূল্য 1.3329–1.3331 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে, কিন্তু সেই সেল সিগন্যালটি ভুল প্রমাণিত হয়। মূল্য ২০ পিপসও কমেনি। এরপর এই পেয়ারের মূল্য সেই এরিয়া ব্রেক করে এবং আজও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে। যদি কোনো নতুন ট্রেডার বর্তমানে লং পজিশন ধরে রাখেন, তাহলে তারা ব্রেকইভেন স্টপ লস সেট করতে পারেন, কারণ ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের প্রভাবে ব্রিটিশ মুদ্রার মূল্য কমে যেতে পারে।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শেষ হয়ে গেছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফলাফল দেখার পর, আমরা ডলারের দর বৃদ্ধি পাওয়ার পক্ষে এক পয়সাও বাজি ধরতাম না। মার্কেটের ট্রেডাররা এখনও ডলার বিক্রির ব্যাপারে হুড়োহুড়ি করছে না, কিন্তু বাস্তবতা হলো, কেন করবে? 1H টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য ডিসেন্ডিং চ্যানেল ব্রেকআউট করে ইতোমধ্যেই ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, যার অর্থ এই টাইমফ্রেমে এখন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্য আবারও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। ফলে, যেকোনো সাপোর্ট লেভেল একটি সম্ভাব্য বাউন্স পয়েন্ট হিসেবে কাজ করতে পারে এবং ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু হওয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারে। গতকাল এই পেয়ারের মূল্য 1.3329–1.3331 এরিয়া ব্রেক করেছে, যা পাউন্ডের আরও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা প্রত্যাশা করার জন্য যথেষ্ট।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে নিম্নলিখিত লেভেলগুলোকে কেন্দ্র করে ট্রেডিং বিবেচনা করা যেতে পারে: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466, 1.3518–1.3532, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763।
যুক্তরাজ্যে বৃহস্পতিবার ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে। এই বৈঠকে সুদের হার কমানো হতে পারে, যার জন্য মার্কেটের ট্রেডাররা মূলত প্রস্তুত রয়েছে। পাউন্ডের সাময়িক দরপতনের সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না, তবে সামগ্রিকভাবে আমরা এখনও এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতারই প্রত্যাশা করছি।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।