বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের সামান্য পুলব্যাক হয়েছে, তবে এই দরপতন ক্ষণস্থায়ী ও তুলনামূলকভাবে দুর্বল ছিল। মূলত, এখনও ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার তেমন কোনো কারণ নেই, এবং কারেন্সি মার্কেট ক্রিপ্টো মার্কেটের মতো নয় — এখানে মূল্যের ওঠানামা অনেক কম অস্থিরতার সাথে হয় এবং মাঝে মাঝে কারেকশন হওয়াটা স্বাভাবিক। সুতরাং, আজ আমরা আরও একবার সামান্য পুলব্যাক হতে দেখতে পারি, বিশেষ করে যখন আজকের ক্যালেন্ডারে কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক বা মৌলিক অনুঘটক নেই। তবে মধ্যমেয়াদি দৃষ্টিকোণ থেকে, আমরা এখনো EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার আশা করছি।
বৃহস্পতিবারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের মধ্যে কেবল জার্মানির শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন উল্লেখযোগ্য — এবং এটির ফলাফল প্রত্যাশিতভাবেই হতাশাজনক ছিল। তবে এটা মনে করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন যে, এই সপ্তাহে ট্রাম্প নতুন করে আরও এক দফা শুল্ক আরোপ করেছেন, এবং পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রধানের বরখাস্তের পর ট্রেডাররা এখন ফেডারেল রিজার্ভের স্বতন্ত্রতা ও ভবিষ্যৎ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বৃহস্পতিবার এই পেয়ারের দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। ইউরোপীয় সেশনে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1655–1.1666 এর উপরে কনসোলিডেট করেছে, আর মার্কিন সেশনে মূল্য ওই এরিয়ার নিচে নেমে গেছে। উভয় ক্ষেত্রেই মূল্য প্রত্যাশিত দিকেই কমপক্ষে ২০ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে। প্রথম ট্রেডে সম্ভবত ব্রেকইভেনে স্টপ লস ট্রিগার হয়েছে। দ্বিতীয় ট্রেডে, নতুন ট্রেডাররা সন্ধ্যায় ম্যানুয়ালি পজিশন ক্লোজ করে সামান্য লাভ করতে পেরেছেন।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের চলতি বছরের শুরু থেকে সৃষ্ট ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মার্কিন ডলারের "তাসের ঘর" ভেঙে পড়েছে। আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম যে মার্কিন মুদ্রার দীর্ঘমেয়াদি দর বৃদ্ধির জন্য কোনো শক্তিশালী চালিকা শক্তি নেই, এবং ট্রাম্পের নীতিমালা ঘিরে যে "আত্মবিশ্বাস" তৈরি হয়েছিল, তা নিয়েও আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম। শুক্রবারের ঘটনাগুলো আমাদের অবস্থানকে সঠিক প্রমাণ করেছে।
শুক্রবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ আজ তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। যদি ট্রাম্প আবার এমন কোনো উচ্চ-প্রভাবসম্পন্ন সিদ্ধান্ত নেন যা মার্কেটে আলোড়ন সৃষ্টি করে তাহলে আলাদা বিষয়। আজ নতুন ট্রেডাররা 1.1655–1.1666 এরিয়া থেকে ট্রেডিং করার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন, যদিও এই পেয়ারের মূল্যের সার্বিক মুভমেন্ট বৃহস্পতিবারের মতোই হতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ে বিবেচনার জন্য প্রাসঙ্গিক লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1552–1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
আজ ইউরোজোন ও যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন বা ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। সুতরাং, আপাতত সমস্ত আশা নির্ভর করছে ট্রাম্পের উপর।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।