বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবারও EUR/USD কারেন্সি পেয়ার একটি সাইডওয়ে চ্যানেলের ভেতরে ট্রেডিং চালিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোনো কিছুরই প্রভাব দেখা যাচ্ছে না—না মৌলিক ইভেন্ট, না সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন। এ সপ্তাহে, অন্তত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, তুলনামূলকভাবে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তবে এগুলোর কোনোটিই এখন পর্যন্ত এই পেয়ারের মূল্যকে নির্ধারিত রেঞ্জের বাইরে নিয়ে যেতে পারেনি। সবচেয়ে শক্তিশালী মুভমেন্ট দেখা গেছে মঙ্গলবার, যখন বিনিয়োগকারীরা ইউরোপীয় এবং ব্রিটিশ বন্ড থেকে আয় রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর সক্রিয়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। অর্থাৎ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বেশিরভাগ সামষ্টিক প্রতিবেদনের ফলাফল ট্রেডাররা উপেক্ষা করেছে, বরং তারা বন্ডের ইয়েল্ড বা লভ্যাংশের বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দিয়েছে, যা কয়েক মাস ধরেই বাড়ছিল। মঙ্গলবার সেই বিষয়টি অবশেষে এই পেয়ারের মূল্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে। দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে খুব একটা যৌক্তিকতা এবং ধারাবাহিকতা নেই। এর চূড়ান্ত উদাহরণ ছিল বৃহস্পতিবার, যখন প্রথমবারের মতো ডলারের জন্য ইতিবাচক প্রতিবেদন মার্কিন ISM পরিষেবা খাতের PMI প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনের ফলাফলের প্রতিক্রিয়ায় ডলারের মূল্য মাত্র 15 পিপস বেড়েছে। সত্যি বলতে, আর কিছুই বলার নেই।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, বৃহস্পতিবার অন্তত পাঁচটি অভিন্ন সেল সিগন্যাল দেখা গেছে, এবং দৈনিক ভিত্তিতে এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটির পরিমাণ ছিল মাত্র 40 পিপস। তাই, ট্রেডিং সিগন্যাল যতগুলোই থাকুক না কেন, এমন দুর্বল মুভমেন্টের সময় কোনো ধরনের লাভ করা প্রায় অসম্ভব ছিল। নতুন ট্রেডাররা বৃহস্পতিবার শর্ট পজিশন ওপেন করে থাকতে পারে; এক্ষেত্রে সামান্যই লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, যেহেতু দিনের বেলায় কোনো বাই সিগন্যাল গঠিত হয়নি—তবে সামান্য লাভ করাও যথেষ্ট কঠিন ছিল।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে, এখনো EUR/USD পেয়ারের মূল্যের এ বছরের শুরু থেকে গঠিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা বজায় রয়েছে; তবে বর্তমানে মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। মার্কিন ডলারের ক্ষেত্রে মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট পটভূমি এখনো বেশ নেতিবাচক, তাই ডলারের দর বৃদ্ধির কোনো প্রত্যাশা করছি না। আমাদের দৃষ্টিতে, আগের মতোই, মার্কিন মুদ্রার মূল্যের শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কারেকশনের ওপরই নির্ভর করা যেতে পারে।
শুক্রবার EUR/USD পেয়ারের যেকোনো দিকেই ট্রেডিং হতে পারে, যেহেতু মূল্য এখনো সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যে রয়েছে এবং মার্কিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল মার্কেটে যেকোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তাই, আজ ফ্ল্যাট মুভমেন্টের সমাপ্তির সম্ভাবনা নেই, এবং যতটা সম্ভব এই পেয়ারের মূল্যের বিশৃঙ্খল মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে, ট্রেডারদের নিম্নলিখিত লেভেলগুলোর দিকে নজর রাখা উচিত: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1552–1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908। শুক্রবার ইউরোজোনে দ্বিতীয় প্রান্তিকের জিডিপির তৃতীয় (চূড়ান্ত) অনুমান প্রকাশিত হবে—যা মার্কেটে সম্ভবত খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ ননফার্ম পেরোল এবং বেকারত্বের হার প্রকাশিত হবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।