বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের সম্পূর্ণ ফ্ল্যাট ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। দিনেরবেলা এই পেয়ারের মূল্যের মোট ভোলাটিলিটি ছিল মাত্র 45 পিপস, যদিও মার্কিন ডলারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। মনে করিয়ে দিই, এ সপ্তাহে JOLTs এবং ADP প্রতিবেদন, পাশাপাশি ISM উৎপাদন এবং পরিষেবা খাতের PMI প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিটি প্রতিবেদনই বেশ গুরুত্বপূর্ণ, এবং বেশিরভাগ প্রতিবেদনের ফলাফলই দুর্বল ছিল (ISM পরিষেবা খাতের PMI ছাড়া)। সুতরাং, এ সপ্তাহে মার্কিন ডলারের আরও দরপতন হতে পারত, তবে হঠাৎই মার্কেটের ট্রেডাররা মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের সরকারি বন্ডের আয়ে রেকর্ড উল্লম্ফনে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করে। বর্তমানে, ব্রিটিশ পাউন্ড আংশিকভাবে দরপতন থেকে পুনরুদ্ধার করেছে এবং 1.3413 লেভেলের ওপরে কনসোলিডেট করতে সক্ষম হয়েছে। আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্ব এবং ননফার্ম পেরোল সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল মার্কেটে উচ্চ মাত্রার ভোলাটিলিটি তৈরি করতে পারে। 17 সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় ফেডের বৈঠকে সুদের হার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আংশিকভাবে এসব প্রতিবেদনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে। বর্তমানে, ট্রেডাররা নিশ্চিতভাবে ধরে নিয়েছে যে সুদের হার কমানো হবে, তবে শ্রমবাজার এবং মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উত্তম হবে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের চার্টে বৃহস্পতিবার একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল—কিন্তু ফ্ল্যাট মুভমেন্ট এবং কম ভোলাটিলিটি কারণে এগুলো কাজে লাগানো যায়নি। মূল্য অন্তত চারবার 1.3413–1.3421 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করেছে, যা নতুন ট্রেডারদের লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ দেয়। কিন্তু একবারও মূল্য নিকটতম লক্ষ্যমাত্রা 1.3466–1.3475-এ পৌঁছাতে পারেনি। কেবলমাত্র ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করার জন্য পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মূল্য প্রয়োজনীয় 20 পিপস ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছিল, তাই সম্ভবত বেশিরভাগ লং পজিশন লাভ-ক্ষতি ছাড়াই ক্লোজ হয়েছে।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের বৈশ্বিক নিম্নমুখী কারেকশন অব্যাহত থাকার প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, যদিও এটি যেকোনো মুহূর্তে শেষ হতে পারে, যেহেতু এখনো টেকনিক্যাল কারণ ছাড়া ডলারের দর বৃদ্ধির কোনো ভিত্তি নেই। তাই, আমরা অনুমান করছি নির্দিষ্ট সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন বা টেকনিক্যাল বিষয়ের কারণে এই পেয়ারের কিছুটা দরপতন হতে পারে, তবে মধ্যমেয়াদে আমরা বৈশ্বিক পর্যায়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছি।
শুক্রবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে GBP/USD পেয়ারের ট্রেডিং চলমান থাকতে পারে, যেহেতু গতকাল মূল্য চারবার 1.3413–1.3421 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করেছে। তাই, এই পেয়ারের মূল্যের 1.3466–1.3475-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়া ব্রেক করতে পারলে মূল্যের 1.3518-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে এই পেয়ার ক্রয় করা যেতে, তবে আজ প্রকাশিতব্য গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন প্রতিবেদনের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে এই পেয়ারের দরপতনও ঘটতে পারে।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, বর্তমানে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3518–1.3532, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763। শুক্রবার যুক্তরাজ্যে খুচরা বিক্রয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে—যা এ সপ্তাহে দেশটির প্রথম প্রতিবেদন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার এবং বেকারত্বের সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা মার্কেটে এক ধরনের "ঝড়" সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।