বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার ন্যূনতম ভোলাটিলিটির সাথে এবং কোনো নির্দিষ্ট প্রবণতা ছাড়াই EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। এই সপ্তাহে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো মার্কেটে পুরোপুরিভাবে অযৌক্তিক মুভমেন্ট দেখা গিয়েছে। ক্রিপ্টো মার্কেটে কী ঘটছে তা আপাতত বাদ দেওয়া যাক—সেখানে-ও বিশেষ কোনো যৌক্তিকতা নেই। মনে করিয়ে দিই, মঙ্গলবার বার্ষিক ননফার্ম পেরোল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। যদিও এই প্রতিবেদনে নতুন কিছু প্রকাশ পায়নি—মার্কিন শ্রমবাজারের সংকোচন অব্যাহত রয়েছে—তবুও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন, যা ট্রেডাররা উপেক্ষা করেছে। গতকাল প্রকাশিত মার্কিন উৎপাদন মূল্য সূচক (PPI) আগস্টে 0.1% হ্রাস পেয়েছে। আমরা মনে করি না যে এই PPI-এর পতন ফেডারেল রিজার্ভের সেপ্টেম্বর সিদ্ধান্তে কোনো প্রভাব ফেলবে; যেকোনো ক্ষেত্রে, আজ আরও গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যার ভিত্তিতে সুস্পষ্টভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। তবুও, গতকাল ডলারের দরপতনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে একটি কারণ বিদ্যমান ছিল। ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে গঠিত অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন অনুযায়ী এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনও বজায় রয়েছে। সুতরাং, যেকোনো মুহূর্তে এই পেয়ারের মূল্য পুনরায় বৃদ্ধি পেতে শুরু করতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে বুধবার একটি ট্রেডিং সিগন্যালও গঠিত হয়নি, যা আসলে বেশ ইতিবাচক বিষয়। উপরের চার্টে দেখা যাচ্ছে, সারাদিন মূল্য উপরে-নিচে ওঠানামা করেছে, দৈনিক মোট ভোলাটিলিটির পরিমাণ 50 পিপসের নিচে ছিল। এ ধরনের মুভমেন্টের সময় স্পষ্টভাবেই মার্কেটের বাইরে থাকা-ই উত্তম।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের বছরের শুরু থেকে গঠিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে। সীমাবদ্ধ ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট এখন সম্পন্ন হয়েছে বলে বিবেচনা করা যেতে পারে। মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট মার্কিন ডলারের জন্য নেতিবাচক রয়ে গেছে, তাই আমরা এখনও মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধি পাওয়ার প্রত্যাশা করছি না। আমাদের মতে, আগের মতোই, ডলারের মূল্যের কেবল টেকনিক্যাল কারেকশনের ওপরই নির্ভর করা যেতে পারে। তবে, ট্রেন্ডলাইনের নিচে কনসোলিডেশন হলে নতুন করে টেকনিক্যাল কারণে এই পেয়ারের দরপতন শুরু হতে পারে।
বৃহস্পতিবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু হতে পারে, কারণ এখনও মার্কেটে বুলিশ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তবে, 1.1655–1.1666 এবং 1.1737–1.1745 এর এরিয়ায় নতুন ট্রেডিং সিগন্যাল গঠন হওয়া প্রয়োজন।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে নিম্নলিখিত লেভেলগুলোর উপর দৃষ্টি রাখুন: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1737–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908। বৃহস্পতিবার ইউরোজোনে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। উভয় ইভেন্টই আনুষ্ঠানিকভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে কেউ আশা করছে না যে ইসিবি সুদের হার কমাবে বা কমানোর প্রতিশ্রুতি দেবে। মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনও 17 সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় ফেডের বৈঠকের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে না। তবে, উভয় ইভেন্টের প্রভাবে মার্কেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।