বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার GBP/USD পেয়ারের ন্যূনতম ভোলাটিলিটির সাথে ট্রেডিং এবং সম্পূর্ণ সাইডওয়েজ মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। বুধবারে কোনো উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট নির্ধারিত ছিল না, তবে মনে করিয়ে দিই যে এই সপ্তাহে ইতোমধ্যে ননফার্ম পেরোল প্রতিবেদন এবং উৎপাদন মূল্য সূচক (PPI) প্রকাশিত হয়েছে। আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এছাড়াও জানা গেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট লিসা কুককে পুনর্বহাল করেছে, যাকে কয়েক সপ্তাহ আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বরখাস্ত করেছিলেন। সুতরাং, ট্রাম্প ও ফেডারেল রিজার্ভের মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে, এবং ফেড কর্তৃক 2–3% হারে একবারে সুদের হার কমানোর ব্যাপারে অনিচ্ছার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখনও কিছুই করতে পারছেন না। তাই, মার্কিন ডলারের দরপতনের জন্য এই সপ্তাহেই যথেষ্ট কারণ বিদ্যমান ছিল। তবে, মার্কেটের ট্রেডাররা এখনও কার্যকর মুভমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছে। ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে একটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান, যদিও সত্যিকার অর্থে কোনো ট্রেন্ডলাইন নেই, কারণ ট্রেন্ডলাইন আঁকার মতো দুটি সুস্পষ্ট এক্সট্রিম লাইন নেই।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার 5-মিনিটের চার্টে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এমন ছিল যে বরং কোনো মুভমেন্ট না থাকলেই ভালো হতো। EUR/USD ট্রেডাররা ভাগ্যবান ছিলেন, কারণ সারাদিনে একটি ট্রেডিং সিগন্যালও গঠিত হয়নি। কিন্তু GBP/USD পেয়ার ট্রেডাররা ততটা ভাগ্যবান ছিলেন না। সারাদিন মূল্য 1.3529–1.3543 এরিয়ার আশেপাশে মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে, একের পর এক ভুল সিগন্যাল গঠিত হয়েছে এবং মূল্য নির্দিষ্ট লেভেলগুলোকে উপেক্ষা করেছে। নতুন ট্রেডাররা হয়তো শুরুর দিকের সিগন্যালগুলোতে ট্রেড করার চেষ্টা করেছেন, তবে মার্কিন সেশনে পৌঁছে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে কোনো গ্রহণযোগ্য মুভমেন্ট দেখা যাবে না।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের আবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, এবং হায়ার টাইমফ্রেমগুলোতেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিদ্যমান রয়েছে। আমরা আগেই বলেছি, মধ্যমেয়াদে ডলারের দর বৃদ্ধি পাওয়ার মতো কোনো কারণ নেই, তাই আমরা ব্রিটিশ মুদ্রার আরও মূল্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছি।
বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু হতে পারে, কারণ মঙ্গলবার ও বুধবার অযৌক্তিক মুভমেন্ট দেখা গিয়েছিল। আজ 1.3529–1.3543 এরিয়ায় ট্রেড করা সম্ভবত যুক্তিসঙ্গত হবে না, যেহেতু গতকাল এই লেভেলে বহু ভুল সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। আজ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট থাকায়, যেকোনো সময় হঠাৎ রিভার্সাল এবং ভোলাটিলিটি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
5-মিনিটের চার্টে এখন নিম্নলিখিত লেভেলগুলোর আশেপাশে ট্রেড করা যেতে পারে: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এছাড়াও, ইউরোজোনে ইসিবির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে দিনের বেলায় ট্রেডাররা আরও বেশি সক্রিয় হতে পারেন।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।