শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের একেবারেই কোনো আকর্ষণীয় মুভমেন্ট দেখা যায়নি। সারা দিনে মাত্র দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল যা তাত্ত্বিকভাবে ট্রেডারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারত। সকালে জার্মানিতে আগস্ট মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকের (CPI) দ্বিতীয় প্রাথমিক অনুমান প্রকাশিত হয়। প্রত্যাশিতভাবেই, দ্বিতীয় অনুমান প্রথমটির সঙ্গে মিলে যায় এবং মার্কেটে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়নি। দিনের দ্বিতীয়ার্ধে মার্কিন কনজিউমার সেন্টিমেন্ট সূচক প্রকাশিত হয়েছিল, যা আগস্টের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে 58.2 পয়েন্ট থেকে 55.4 পয়েন্টে নেমে আসে। এই প্রতিবেদন ডলারের দরপতন ঘটাতে পারত, কিন্তু তা হয়নি। দৈনিক ট্রেডিংয়ে মোট ভোলাটিলিটি ছিল 45 পিপস, যা বর্তমানে ট্রেডারদের মার্কেটে ট্রেডিংয়ে অংশগ্রহণের ইচ্ছা কতটা সীমিত তা স্পষ্ট করে দেয়। মনে করিয়ে দেওয়া দরকার যে, প্রায় এক মাস ধরে স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই সময়ে একেবারেই কোনো মুভমেন্ট হয়নি তা বলা যাবে না, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা অত্যন্ত দুর্বল ছিল। বর্তমানে, ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে ট্রেন্ডলাইন দ্বারা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনও বজায় আছে, তবে ডলারের দরপতনের যথেষ্ট কারণ থাকা সত্ত্বেও, দ্রুতই তা হচ্ছে না।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি সেল সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, দুটিই 1.1737-1.1745 এরিয়া থেকে বাউন্সের মাধ্যমে পাওয়া গেছে। অত্যন্ত স্বল্প ভোলাটিলিটির কারণে মূল্য 1.1666-এর লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়নি এবং সেদিকে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই তৈরি হয়নি। শুধুমাত্র ম্যানুয়ালি মুনাফা নিয়ে ট্রেড ডিলগুলো ক্লোজ করা যেত। উভয় ট্রেডেই সম্ভাব্য লোকসান এড়ানোর জন্য ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করার সুযোগ ছিল।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের চলতি বছরের শুরু থেকে গঠিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নতুন করে পুনরায় শুরু হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা বজায় রয়েছে। মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি উভয়ই এখনও মার্কিন ডলারের জন্য নেতিবাচক, তাই আমরা এখনও মার্কিন মুদ্রার দর বৃদ্ধির আশা করছি না। আমাদের দৃষ্টিতে, আগের মতোই, ডলারের মূল্যের শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কারেকশনের উপর নির্ভর করা যেতে পারে। তবে, ট্রেন্ডলাইনের নিচে কনসোলিডেশন ঘটলে নতুন করে টেকনিক্যাল কারণে এই পেয়ারের দরপতন শুরু হতে পারে।
সোমবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের দুর্বল ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট চলমান থাকতে পারে, যেহেতু ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। তবে নতুন লং পজিশন ওপেন করার জন্য এই পেয়ারের মূল্যের 1.1737-1.1745 এরিয়া অতিক্রম করা প্রয়োজন। লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1808।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনা করুন: 1.1198-1.1218, 1.1267-1.1292, 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1737-1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908। সোমবার ইউরোজোনে ইসিবির প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্দে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে, তবে আমরা আশা করছি না যে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কোনো গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করবেন। কেবলমাত্র কয়েক দিন আগেই ইসিবির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং লাগার্দে ইতোমধ্যে সকল প্রয়োজনীয় তথ্য জানিয়ে দিয়েছেন। সম্ভবত আমাদের সামনে আরেকটি "বিরক্তিকর সোমবার" অপেক্ষা করছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।