সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
সোমবার কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না—না জার্মানিতে, না যুক্তরাজ্যে, না ইউরোপীয় ইউনিয়নে, না যুক্তরাষ্ট্রে। মনে করিয়ে দেওয়া দরকার, সেপ্টেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহে ট্রেডারদের হাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন ছিল। প্রায় সবগুলোতেই দেখা গেছে যে মার্কিন অর্থনীতি অব্যাহতভাবে দুর্বল হচ্ছে। কেবলমাত্র দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, আর সেটিও কৃত্রিমভাবে। ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের পৃষ্ঠপোষকতায় এই প্রবৃদ্ধি আর কতদিন চলমান থাকবে, তা এখনও অজানা। যাই হোক না কেন, নতুন মার্কিন প্রশাসনের গৃহীত পদক্ষেপের ফলাফলকে মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা খুব একটা ইতিবাচকভাবে দেখছে না।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
সোমবারের একমাত্র ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট হিসেবে ইসিবি প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্দের বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে। তবে উল্লেখ্য যে, ইসিবির সর্বশেষ বৈঠক গত বৃহস্পতিবারই অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইঙ্গিত দিয়েছে যে নিকট ভবিষ্যতে মূল সুদের হার নাও কমানো হতে পারে, কারণ আপাতত সুদের হার কমানোর জন্য কোনো কারণ নেই। বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে মুদ্রাস্ফীতি দ্রুত বাড়তে পারে এই আশঙ্কা রয়েছে, তবে মাঝারি মেয়াদে ইসিবি মুদ্রাস্ফীতির উল্লেখযোগ্য চাপের আশা করছে না। বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি প্রায় 2%-এর আশেপাশে অবস্থান করছে এবং ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার ঝুঁকি বিদ্যমান রয়েছে, তাই সুদের হার কমানোর কোনো কারণ নেই। কেবলমাত্র যদি মুদ্রাস্ফীতি 2%-এর নিচে নেমে আসে, তখনই ইসিবি পুনরায় মুদ্রানীতি নমনীয়করণের পথে অগ্রসর হবে।
উপসংহার:
সপ্তাহের প্রথম দিনের ট্রেডিংয়ে উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু হতে পারে, তবে এর জন্য নতুন বাই সিগন্যাল প্রয়োজন। ইউরোর ক্ষেত্রে, যদি মূল্য 1.1737–1.1745 এরিয়া ব্রেক উপরের দিকে যায়, তাহলে 1.1808-এর লক্ষ্যমাত্রার দিকে মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। 1.1737–1.1745 থেকে বাউন্স হলে শর্ট পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে, তবে তা উল্লেখযোগ্য দরপতনের দিকে যাবে না। পাউন্ড স্টার্লিংয়ের ক্ষেত্রে, 1.3529–1.3543 থেকে বাউন্স বা 1.3574–1.3590 লেভেল ব্রেক করে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হলে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে, অন্যদিকে 1.3529–1.3543 লেভেলের নিচে কনসোলিডেশন হলে শর্ট পজিশনের সুযোগ তৈরি হবে। তবে উভয় ক্ষেত্রেই লং পজিশনই অধিকতর উপযোগী। সোমবার আবারও একঘেয়ে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট এবং স্বল্প ভোলাটিলিটি দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।