বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার GBP/USD পেয়ারের মুভমেন্ট EUR/USD পেয়ারের মতোই ছিল। সকালে যুক্তরাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, তবে এটির গুরুত্ব এই সপ্তাহের অন্যান্য প্রতিবেদনের মতোই "ফিকে" হয়ে গিয়েছিল। ট্রেডাররা এই প্রতিবেদনটির দিকে প্রায় খেয়ালই করেনি। যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতি 3.8%-এ অপরিবর্তিত ছিল, যা আজ অনুষ্ঠেয় ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের সিদ্ধান্তে কোনো প্রভাব ফেলবে না। ব্রিটিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিনা প্রশ্নে আর্থিক নীতিমালা অপরিবর্তিত রাখবে, আর মূল কৌতূহল হলো সুদের হার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে মুদ্রানীতি কমিটির সদস্যদের ভোট কীভাবে ভাগ হবে। এমনকি যদি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে বেশি "ডোভিশ বা নমনীয়" হয়, তবুও পাউন্ডের সামান্য দরপতন হতে পারে, তবে বৈশ্বিক পর্যায়ে চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বাতিল হবে না। বর্তমানে, মার্কিন ডলারের বিরুদ্ধে এত বেশি বৈশ্বিক মৌলিক নেতিবাচক কারণ জমা হয়েছে যে আরও কয়েক বছর ধরে এটির দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়মিতভাবে মার্কিন মুদ্রার জন্য এই ধরনের নেতিবাচক পরিস্থিতি বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে বুধবার বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমে, এই পেয়ারের মূল্য 1.3643–1.3652 এরিয়া থেকে উপরে থেকে নিচে বাউন্স করে বা ব্রেক করে, এরপর বিপরীত দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করে। প্রথম সিগন্যালটি ভুল, তবে যদি নতুন ট্রেডাররা ফেডের ঘোষণা আসার পর 10 মিনিটের মধ্যে লং পজিশন ক্লোজ করতে পারত তাহলে দ্বিতীয় সিগন্যাল লাভ এনে দিতে পারত, যখন পেয়ারটির মূল্যের তীব্র ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছিল।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে, আর হায়ার টাইমফ্রেমগুলোতে এই পেয়ারের মূল্যের "2025 সালের প্রবণতা" পুনরায় শুরু হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আগেও যেমনটি উল্লেখ করা হয়েছে, মধ্যমেয়াদে ডলারের দর বৃদ্ধির পাওয়ার কোনো ভিত্তি নেই, তাই আমরা ব্রিটিশ মুদ্রার আরও মূল্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছি। আগামী 24 ঘণ্টায় মার্কেটে ভোলাটাইল ও অনিয়মিত মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইনের উপরে রয়েছে, ততক্ষণ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অটুট থাকবে।
বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু হতে পারে, কারণ মূল্য ট্রেন্ডলাইনের উপরে অবস্থান করছে। তবে টানা দ্বিতীয় দিনের মতোই, মৌলিক পটভূমি মার্কেট সেন্টিমেন্টের ওপর প্রবল প্রভাব ফেলবে।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763। বৃহস্পতিবার ব্যাংক ইংল্যান্ড বৈঠকে বসবে যেখানে নীতিগত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে, যা পাউন্ড ও ইউরো উভয়ের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে, এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে, তবে সুদের হারের ব্যাপারে আরও "ডোভিশ বা নমনীয়" অবস্থান গ্রহণ করলে ব্রিটিশ পাউন্ডের আরেকটি দরপতন ঘটতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।