সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবারের বেশিরভাগ সময় EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করেছে। এটি বলা যায় না যে ডলারের তীব্র দরপতন হয়েছে, তবে টানা দুই দিন ধরে এটির দরপতন অব্যাহত রয়েছে। একইভাবে বলা যায় না যে মার্কিন সরকারী শাটডাউনের হুমকি বা ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন আমদানি শুল্ক ডলারের দরপতন ঘটিয়েছে—যদিও ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে এই ধরনের কারণ প্রায় নিশ্চিতভাবেই বড় ধরনের প্রভাব ফেলত। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে মার্কিন ডলারের দর তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে।
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে আমরা একটি ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন এঁকেছি, তবে এটি কিছুটা অনিশ্চিত। সোমবার যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোজোন—কোনো জায়গাতেই গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, যার মাধ্যমে দিনেরবেলা স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার কারণটি ব্যাখ্যা করা যায়। আমাদের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী, মধ্যমেয়াদে ডলারের দর বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই। যদিও বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে মৌলিক পটভূমি উপেক্ষা করছে, তবে এমন পরিস্থিতি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে না। এ সপ্তাহে মার্কিন মুদ্রার সামনে বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কারণ রয়েছে, কারণ শ্রমবাজার, বেকারত্ব এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম সংক্রান্ত নতুন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে সোমবার বেশ কিছু ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে সবগুলোই প্রত্যাশা অনুযায়ী কার্যকর ছিল না। আমরা পূর্বের 1.1737–1.1745 রেঞ্জ পরিবর্তন করে এখন 1.1745–1.1754 এরিয়া নির্ধারণ করেছি। তাই ট্রেডারদের আজ এই আপডেটেড রেজিস্ট্যান্স জোন নিয়েই কাজ করতে হবে।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনও বজায় রয়েছে। সামগ্রিকভাবে মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি ডলারের জন্য অনুকূল নয়, তাই আমরা এখনও মার্কিন মুদ্রার বড় ধরনের দর বৃদ্ধির আশা করছি না। আমাদের মতে, আগের মতোই, ডলারের মূল্যের কেবল টেকনিক্যাল কারেকশনের ওপর নির্ভর করা যেতে পারে—এবং বর্তমানে আমরা একটি কারেকশন লক্ষ্য করছি।
মঙ্গলবার EUR/USD পেয়ারের 1.1745–1.1754 রেঞ্জে ট্রেডিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকালই এই এরিয়া থেকে একটি রিবাউন্ড ঘটেছিল, যা দরপতনের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে, যেখানে মূল্যের 1.1655–1.1666-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। অন্যদিকে, মূল্য এই এরিয়া ব্রেক করলে লং পজিশনের সুযোগ তৈরি হবে, যেখানে মূল্যের 1.1808-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, এ সপ্তাহে সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি প্রভাবশালী হবে, একই সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ডলারের মূল্যকে নিম্নমুখী করার চেষ্টা করছেন।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলসমূহ: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988। মঙ্গলবার জার্মানি থেকে খুচরা বিক্রয়, বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা মার্কেটের সেন্টিমেন্টে প্রভাব ফেলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে JOLTs থেকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যদিও এটি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।