সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের সামান্য ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে, তবে পাউন্ড এবং ইউরোর টেকনিক্যাল চিত্রের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। ব্রিটিশ মুদ্রার মূল্য একটি শক্তিশালী ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনের উপরে কনসোলিডেট করেছে এবং একই সাথে 1.3413-এর মূল লেভেল ব্রেক করেছে। এটি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করছে যে পাউন্ডের দরপতন শেষ হয়েছে।
মনে করিয়ে দেওয়া দরকার যে গত দুই সপ্তাহ ধরে মার্কেটের ট্রেডাররা প্রায় যেকোনো অজুহাতেই স্টার্লিং বিক্রি করেছে, তবে সামগ্রিকভাবে ডলারের মৌলিক পটভূমি অনেক দুর্বল রয়ে গেছে। আমরা সাম্প্রতিক মুভমেন্টগুলোকে সামগ্রিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে আরেকটি কারেকশন হিসেবে দেখছি, যা আজ হোক বা কাল হোক পুনরায় শুরু হবে। সোমবার যুক্তরাজ্য কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো বড় ইভেন্ট ছিল না বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়নি, তবে পুরো সপ্তাহজুড়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে—যার বেশিরভাগের ফলাফলই ডলারের জন্য নেতিবাচক হতে পারে।
এটি জানা জরুরি: মার্কিন প্রতিবেদনের কেবল তখনই ডলারের দরকে নিম্নমুখী করবে যখন প্রকৃত ফলাফল পূর্বাভাসের চেয়ে দুর্বল হবে। উদাহরণস্বরূপ, শুক্রবার প্রকাশিতব্য ননফার্ম পেরোলের পূর্বাভাস মাত্র 40,000। এই সংখ্যা ছাড়িয়ে যাওয়া কঠিন হবে না, তবে তবুও এটি পরম অর্থে অত্যন্ত দুর্বল একটি ফলাফল হবে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে সোমবার দুটি কার্যকর বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমে, এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421 এরিয়া ব্রেক করে ঊর্ধ্বমুখী হয়, এবং পরে উপরের দিক থেকে এই এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে। উভয় ক্ষেত্রেই নতুন ট্রেডাররা লং পজিশন ওপেন করতে পারতেন, তবে সিগন্যাল যেমনই হোক না কেন দিনেরবেলা স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার কারণে মুনাফা সীমিত ছিল। এই পেয়ারের মূল্য নিকটবর্তী লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়নি, তবে মূল্য 1.3413–1.3421 এরিয়ার উপরে অবস্থান করায় বুলিশ প্রবণতার সম্ভাবনা অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতার গঠন সম্পন্ন হয়েছে। আগেই যেমনটি বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে ডলারের দর বৃদ্ধির জন্য কোনো মৌলিক কারণ নেই, তাই মধ্যমেয়াদে এখনও এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় ক্ষেত্রেই ডলারকে সাময়িকভাবে সহায়তা দিয়েছিল, এবং এই পেয়ারের দরপতন সাময়িকভাবে যুক্তিসঙ্গত ছিল। তবে সামগ্রিক মৌলিক পটভূমি এখনও ডলারের বিপরীতে কাজ করছে।
মঙ্গলবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ নিম্নমুখী প্রবণতা শেষ হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। যেহেতু মূল্য ইতোমধ্যেই 1.3413–1.3421 এরিয়া ব্রেক করেছে, তাই নতুন ট্রেডাররা মূল্যের 1.3466–1.3475-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নতুন লং পজিশন ওপেন করতে বা বিদ্যমান পজিশন ধরে রাখতে পারেন।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলসমূহ: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় প্রান্তিকের জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশিত হবে, আর যুক্তরাষ্ট্রে JOLTs চাকরির শূন্যপদ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এ দুটি প্রতিবেদনের কোনোটিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হচ্ছে না, তবে অন্য কোনো বড় ইভেন্ট না থাকায় এগুলোর ফলাফল দিনের বেলা মার্কেটে প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।