বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার, অপ্রত্যাশিতভাবে EUR/USD পেয়ারের দরপতন ঘটেছে। এর অর্থ এই নয় যে ডলারের মূল্য যথেষ্ট বৃদ্ধি পাবে এবং নতুন করে স্থানীয় পর্যায়ে "ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা" শুরু হবে। তবে, এই সপ্তাহে মার্কেটে খুবই মিশ্র এবং অযৌক্তিক মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে, ট্রেডাররা মার্কিন মুদ্রার জন্য প্রতিকূল অনেক কারণকে উপেক্ষা করেছে। যেমনটি উল্লেখ করা হয়েছে, গতকাল ডলারের দরপতনের জন্য আনুষ্ঠানিক কারণ ছিল। ইউরোজোনের বেকারত্বের হার অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে 6.3%-এ পৌঁছেছে, যা ইউরোর দরপতনের কারণ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবুও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কার্যক্রমে শাটডাউন শুরু হয়েছে এবং শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদনে আবারও দুর্বলতা দেখা গিয়েছে। আমাদের মতে, এই দুটি কারণ ইইউ-এর বেকারত্বের হারের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটিও লক্ষণীয় যে মুদ্রানীতির ব্যাপারে ফেডারেল রিজার্ভের ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণের প্রত্যাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ট্রেডাররা এখন প্রায় 100% নিশ্চিত যে ফেড চলতি বছর শেষের আগে দুইবার সুদের হার কমাবে। তবে, আপাতত, এই সমস্ত কারণগুলোকে উপেক্ষা করা হচ্ছে, যা মার্কেটের মুভমেন্টকে অযৌক্তিক করে তুলছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, বৃহস্পতিবার মাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল—কিন্তু এটি একটি কার্যকর সিগন্যাল ছিল। ৫ ঘন্টা ধরে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1745–1.1754-এর রেজিস্ট্যান্স জোনের আশেপাশে কনসলিডেট করেছিল। অবশেষে যখন রিবাউন্ড ঘটে, তখন মূল্য প্রায় ৫০ পিপস সঠিক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করে। যদিও এই পেয়ারের মূল্য 1.1655–1.1666-এর নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়নি, তবুও নতুন ট্রেডাররা মুনাফার জন্য ম্যানুয়ালি এই ট্রেড ক্লোজ করতে পারতেন।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে এবং এখনও মূল্য ট্রেন্ডলাইনের উপরে উঠতে পারেনি। ডলারের মৌলিক পটভূমি দুর্বল রয়েছে, তাই আমরা মার্কিন মুদ্রার মূল্যের দৃঢ় বৃদ্ধির আশা করছি না। আগের মতোই, ডলারের মূল্যের কেবল টেকনিক্যাল কারেকশনের উপর নির্ভর করা যেতে পারে, যার মধ্যে একটি আমরা বর্তমানে হতে দেখছি।
শুক্রবার, EUR/USD পেয়ারের আবার 1.1745–1.1754 জোনের মধ্যে ট্রেড করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই জোন থেকে একটি রিবাউন্ড হলে মূল্যের 1.1666-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নতুন শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। এই জোন ব্রেকআউট করে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হলে মূল্যের 1.1808-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে আরও যৌক্তিকভাবে লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ পাওয়া যাবে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988। শুক্রবার, ইইউতে ক্রিস্টিন লাগার্ড বক্তব্য দেবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, প্রাথমিকভাবে নন-ফার্ম পে-রোল এবং বেকারত্বের হার প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু শাটডাউনের কারণে তা ইভেন্ট ক্যালেন্ডার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সুতরাং, আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হবে আইএসএম পরিষেবা বিষয়ক পিএমআই।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।