বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার, ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতনের জন্য কোনো যৌক্তিক কারণ না থাকা সত্ত্বেও, GBP/USD-এর মূল্যও নিম্নমুখী হয়েছে। যেমনটি আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, এই সপ্তাহে ফরেক্স মার্কেটে খুবই অদ্ভুত এবং অযৌক্তিক মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। এই ধরনের মুভমেন্ট বিরল নয়, এবং যখন এগুলো মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না হয়, তখন সর্বোত্তম পন্থা হল সংবাদ বা প্রতিবেদনের ফলাফল জোর করে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করার পরিবর্তে সেগুলোর অযৌক্তিকতা স্বীকার করা।
গতকাল যুক্তরাজ্য বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনও উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, যদিও এই সপ্তাহের শুরুতে, কমপক্ষে দুটি প্রতিবেদনের ফলাফল ব্যাপকভাবে ডলার বিক্রির প্রবণটা শুরু করতে পারত - কিন্তু তা হয়নি। বর্তমান মুভমেন্টের এটাই মূল্য "অদ্ভুত" বিষয়। গতকাল এই পেয়ারের মূল্য 1.3413-এর নিচে কনসলিডেশন করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অটুট রয়েছে। তবে, আজকের মার্কিন প্রতিবেদন থেকে কী ধরনের ফলাফল আশা করা যায় তা স্পষ্ট নয়, যা নাও প্রকাশ করা হতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, গতকাল বেশ কয়েকটি সিগন্যাল গঠিত ছিল। প্রথমে, এই পেয়ারের মূল্য 1.3466–1.3475 জোন থেকে রিবাউন্ড করে, তারপর এই জোন ব্রেক করে উপরের দিকে যায় এবং পরে .3413–1.3421 এরিয়ার কাছাকাছি একটি বাই সিগন্যাল গঠন করে। শেষ সিগন্যালটি তুলনামূলকভাবে দেরিতে গঠিত এসেছিল, কিন্তু প্রথম দুটি সিগন্যাল কাজে লাগিয়ে ট্রেড করা সম্ভব হয়েছিল। প্রথম ট্রেডের ক্ষেত্রে, মূল্য 1.3529-এর লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়নি, অন্যদিকে দ্বিতীয় ট্রেডের ক্ষেত্রে, মূল্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেছিল। সুতরাং, কমপক্ষে একটি ট্রেড বেশ ভালোই মুনাফার সাথে ক্লোজ করা যেতে পারে।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতার গঠন সম্পন্ন হয়েছে। যেমনটি আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা দীর্ঘায়িত হওয়ার কোনো কারণ নেই, তাই মধ্যমেয়াদে, আমরা কেবল এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের আশা করছি। যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের ফলাফল সাময়িকভাবে ডলারকে সহায়তা করেছে, তবে বিশ্বব্যাপী ডলারের মৌলিক পটভূমি নেতিবাচক রয়ে গেছে এবং এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।
শুক্রবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে। 1.3413–1.3421 থেকে একটি রিবাউন্ড হলে মূল্যের 1.3466–1.3475 এবং তারও উপরের দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ পাওয়া যাবে। 1.3413–1.3421 এর নিচে কনসলিডেশন হলে মূল্যের 1.3329–1.3331-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে।
৫ মিনিটের চার্টে, নিম্নলিখিত লেভেল থেকে ট্রেড করা যাবে: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, এবং 1.3763। শুক্রবার যুক্তরাজ্যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে না বা কোনো প্রতিবেদন প্রকাশেরও কথা নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, আইএসএম থেকে পরিষেবা সংক্রান্ত পিএমআই প্রকাশ করা হবে, অন্যদিকে নন-ফার্ম পে-রোল এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।