শুক্রবারের ট্রেডের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
গত শুক্রবার EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং কার্যক্রম ছিল একেবারে 'না মাছ না মাংস' ধরনের। পুরো সপ্তাহজুড়ে মার্কেটে খুবই স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয়েছে। আমরা আগের বিশ্লেষণে ইতোমধ্যে উল্লেখ করেছি: এটি বেশ অদ্ভুত একটি সপ্তাহ ছিল। যদিও নন-ফার্ম পেরোল এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, এরপরও অনেক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ও ইভেন্ট ছিল—যার বেশিরভাগই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
তবুও, কেন অস্থিরতার মাত্রা এত কম ছিল বা কেন মার্কেটে সক্রিয়ভাবে ট্রেডিং হয়নি—তা এখনো স্পষ্ট নয়। এমনকি শুক্রবার প্রকাশিত ISM পরিষেবা খাতের PMI প্রতিবেদনের ফলাফল পূর্বাভাসের তুলনায় অনেক কম এলেও, এটি অনায়াসে ডলারের ৫০–৬০ পিপস পর্যন্ত দরপতন ঘটাতে পারত।
টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে, এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে, কারণ মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক হয়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নিশ্চিতভাবে শুরু হয়নি—যদিও গত সপ্তাহেই ডলারের ক্ষেত্রে একাধিক নেতিবাচক মৌলিক কারণ ছিল যা এটির দরপতন ঘটাতে পারত।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, পুরো দিনজুড়ে মূল্য 1.1745–1.1754 জোন থেকে বাউন্স করার চেষ্টা করেছিল—কিন্তু সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপট অনুযায়ী, নতুন ট্রেডাররা এখানে শর্ট পজিশনে এন্ট্রি করতে পারতেন, কিন্তু মার্কিন সেশনে এন্ট্রি করার সময়ই এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, কোনো উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য কয়েকবার ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে, যা টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বুলিশ বা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নির্দেশ করে। তবে মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ডলারের পরিস্থিতি এখনো নেতিবাচক রয়ে গেছে। ফলে, এখনই মার্কিন গ্রিনব্যাকের মূল্যের বড় ধরনের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার প্রত্যাশা করা যাচ্ছে না। আগের মতোই, আমাদের বিশ্লেষণ হল—ডলারের মূল্যের যেকোনো ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুধুমাত্র স্বল্পমেয়াদি টেকনিক্যাল কারেকশনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে—যেমনটি বর্তমানে দেখা যাচ্ছে।
সোমবার, EUR/USD পেয়ারের আবারও 1.1745–1.1754 জোনের আশপাশে ট্রেডিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই জোন থেকে একটি বাউন্স হলে তা শর্ট পজিশন ওপেন করার একটি নতুন সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যেক্ষেত্রে মূল্যের 1.1666-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। অন্যদিকে, এই পেয়ারের মূল্য এই জোন নিশ্চিতভাবে ব্রেকআউট করলে তা যৌক্তিভাবে লং পজিশন ওপেন করার জন্য একটি ভালো এন্ট্রি পয়েন্ট হবে, যেক্ষেত্রে মূল্যের 1.1808-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫ মিনিটের চার্টে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988।সোমবার, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড আবারও একটি বক্তব্য প্রদান করবেন এবং ইউরোজোনে রিটেইল সেলস বা খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। সম্প্রতি লাগার্ড বেশ ঘন ঘন বক্তব্য দিচ্ছেন—এই সপ্তাহে তার তিনবার বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে সাধারণত তার বক্তব্য থেকে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় না যা নতুন করে মার্কেটে বড় ধরনের মুভমেন্ট সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।