শুক্রবারের ট্রেডের পর্যালোচনা
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
গত শুক্রবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের কিছুটা বুলিশ মুভমেন্ট দেখা গেছে, তবে সেটি সামগ্রিক টেকনিক্যাল চিত্রে কোনো বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। এই পেয়ারের মূল্য ডাউনওয়ার্ড ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে নিম্নমুখী পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো স্পষ্ট ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়নি। ইউরোর মতোই, এই ধরনের মুভমেন্ট বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দেয়। শুধু গত সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রে সরকারিভাবে শাটডাউন কার্যকর হয় (যা অর্থনীতির উপর সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে), একমাত্র প্রকাশিত শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের (ADP) ফলাফল অত্যন্ত দুর্বল ছিল এবং ISM থেকে প্রকাশিত ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচকগুলোর ফলাফল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থরতার সংকেত দিয়েছিল।
সুতরাং, এই মুহূর্তে ডলার বিক্রির জন্য মার্কেটের বিনিয়োগকারীদের হাতে বেশ কিছু মৌলিক কারণ রয়েছে—তবুও তা ঘটছে না। মধ্যমেয়াদি প্রেক্ষাপটে, এখনো পাউন্ডের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা বজায় থাকলেও, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার গতি অনেকটাই কমে গেছে। যদিও ব্রিটিশ পাউন্ড পুরোপুরিভাবে সক্রিয় প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি কাজে লাগাতে পারছে না, তারপরও আমরা দীর্ঘমেয়াদে ডলারের দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে এখনো খুব একটা আশাবাদী নই।
তবে, ৫-মিনিটের চার্টে পরিলক্ষিত বৈশ্বিক প্রবণতা বা সামষ্টিক প্রেক্ষাপট তুলনামূলকভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ—বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে, যেখানে কোনো শক্তিশালী ও একমুখী প্রবণতা বিদ্যমান নেই।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবারের ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ইউরোপীয় সেশনে মূল্য 1.3466–1.3475 জোন থেকে একটি বাউন্স সম্পন্ন করে, তবে কেবলমাত্র ২০ পিপস পর্যন্তই দরপতন হয়। এটি ব্রেকইভেনে স্টপ লস হিট হওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল, ফলে ট্রেডটি কোনো লোকসান ছাড়াই ক্লোজ হয়। সন্ধ্যার পর, মূল্য একই 1.3466–1.3475 জোনে ফিরে আসে, তবে নতুন কোনো ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়নি। স্বল্পমাত্রার অস্থিরতার কারণে কোনোভাবেই উল্লেখযোগ্য মুনাফা করার সুযোগ মেলেনি।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে দেখা যাচ্ছে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতার গঠন ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। আমরা আগেই বলেছি, বর্তমানে মার্কিন ডলারের মূল্যের স্থিতিশীল ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পক্ষে কোনো শক্তিশালী মৌলিক কারণ নেই, তাই আমরা আশা করছি—মধ্যমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের বুলিশ বা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। তবে এই মুহূর্তে মার্কেটে এক ধরনের স্থবিরতা বা শীতকালীন ঘুমের মতো পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে, যার ফলে মুভমেন্টের মাত্রা সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। টেকনিক্যাল সিগন্যাল অনুযায়ী, লোয়ার টাইমফ্রেম থেকে এখনো ট্রেডিংয়ের সুযোগ তৈরি হতে পারে, যদিও সামগ্রিকভাবে মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা অপেক্ষাকৃতভাবে কম থাকবে বলে ধারণা হচ্ছে।
সোমবার, GBP/USD পেয়ারে 1.3413–1.3421 এবং 1.3466–1.3475 জোনের আশেপাশে ট্রেডিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই দুটি জোনের যেকোনো একটি থেকে মূল্য বাউন্স করলে সেটি ট্রেডিং এন্ট্রির সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যেখানে মূল্যের বিপরীত দিকের জোনের দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে এই পেয়ারের মূল্য যেকোনো রেঞ্জ সুনিশ্চিতভাবে ব্রেকআউট করলে সেটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করবে।
আজ ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763। সোমবার, ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলির একটি বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে কিছুই নেই। সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে, আমরা মার্কেটে ঐতিহ্যবাহী "সোমবারের মন্থর মুভমেন্টের" প্রত্যাশা করছি।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।