সোমবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
সোমবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, যদিও মূল্য তিনবার ডাউনওয়ার্ড ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে। এ কারণে আমাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, স্থানীয় পর্যায়ে নিম্নমুখী প্রবণতা শেষ হয়ে গেছে এমনটাই ধরে নেওয়া যায়। তবে, ছয়বারের প্রচেষ্টার পরেও এই পেয়ারের মূল্য 1.1754 লেভেল ব্রেক করতে ব্যর্থ হয়েছে।
আমাদের মতে, এখনো মধ্যমেয়াদে মার্কিন ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার জন্য কোনো সংগতিপূর্ণ ভিত্তি নেই, তাই EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শিগগিরই পুনরায় শুরু হবে আশা করা যায়। একমাত্র প্রশ্ন হল এটি কখন শুরু হতে পারে?
বর্তমানে, মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো দীর্ঘমেয়াদি লং পজিশন ওপেন করার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না, যদিও প্রয়োজনীয় মৌলিক প্রভাবকগুলো উপস্থিত রয়েছে। সোমবারের সেশনে পরিস্থিতি খুব একটা স্পষ্ট হয়নি। দিনের শুরুতেই ফ্রান্সে নতুন রাজনৈতিক সংকট শুরু হওয়ায় ইউরোর দরপতন হয়। তবে, আমরা মনে করি না এই ঘটনাটি ইউরোর ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে, কারণ এখন প্রায় প্রতি মাসেই ফ্রান্সের রাজনীতিতে টানাপোড়েন দেখা যাচ্ছে—সেক্ষেত্রে এবার আরেকজন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন মাত্র। সেইসাথে, ক্রিস্টিন লাগার্ডে বক্তব্য থেকেও ট্রেডাররা নতুন কোনো তথ্য পায়নি।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে সোমবার একটি অসাধারণ ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। এই পেয়ারের মূল্য 1.1655–1.1666-এর সাপোর্ট জোনে পৌঁছে সেখান থেকে বাউন্স করে ৩৫ পিপস পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী হয়। আজকে মূল্য আরও বাড়তে পারে এবং 1.1745–1.1755 রেঞ্জ পর্যন্ত যেতে পারে। এতে করে নতুন ট্রেডারদের জন্য একটি নিখুঁত লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সফল ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের সুযোগ দিয়েছে।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে EUR/USD পেয়ারের মূল্য একাধিকবার ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে, যার ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে বুলিশ প্রবণতা শুরু হয়েছে। মূলত ডলারের মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি এখনো বেশ নেতিবাচক, তাই ডলারের মূল্যের শক্তিশালী ও ধারাবাহিক বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। পূর্বের বিশ্লেষণের মতোই, আমরা মনে করি, কেবল স্বল্পমেয়াদি টেকনিক্যাল কারেকশনের উপর নির্ভর করেই মার্কিন ডলারের মূল্য কিছুটা বাড়তে পারে—যেমনটি বর্তমানে দেখা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার, 1.1745–1.1754 জোনে EUR/USD পেয়ারের ট্রেড করার প্রত্যাশা করা হচ্ছে, অথবা কারেকশনের মাধ্যমে মূল্য আবার 1.1655–1.1666 লেভেলে ফিরে যেতে পারে। প্রথম জোন থেকে বাউন্স হলে সেটি সেল পজিশন ওপেন করার একটি সিগন্যাল হবে, যেখানে মূল্যের 1.1666-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। আর দ্বিতীয় জোন থেকে বাউন্স হলে এটিকে লং পজিশন ওপেন করার সিগন্যাল হিসেবে দেখা হবে, যেখানে মূল্যের 1.1745-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988.
মঙ্গলবার, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডের আরও একটি বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। সম্প্রতি তিনি বেশ ঘন ঘন বক্তব্য দিচ্ছেন—এই সপ্তাহে তিনি তিনবার বক্তব্য দেবেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব বক্তব্যে নতুন কোনো তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য থাকে না যা মার্কেটে মুভমেন্ট সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।