সোমবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
সোমবার, GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য সারাদিনজুড়ে ঊর্ধ্বমুখী এবং নিম্নমুখী—দুইদিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে করেছে। এই পেয়ারের মূল্য পরপর তৃতীয়বারের মতো 1.3413 লেভেল ব্রেক করতে ব্যর্থ হয়েছে, এবং সামগ্রিকভাবে পাউন্ডের মূল্যের মুভমেন্ট এখন অনেকটাই ফ্ল্যাট মুভমেন্টের মতো বলে মনে হচ্ছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে বর্তমানে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট ফ্ল্যাট নয়, তবে এটির মূল্যও অস্থিতিশীলভাবে মুভমেন্ট প্রদর্শন করছে—যা বারংবার কারেকশন ও পুলব্যাকের কারণে হচ্ছে, এবং আগের নিম্নমুখী প্রবণতা শেষ হওয়ার পরেও কোনো সুসংহত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু না হওয়ায় অস্বাভাবিক মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে।
সোমবার ব্রিটিশ পাউন্ডের জন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অর্থনৈতিক খবর ছিল না। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি বক্তব্য দিলেও তিনি কোনো উল্লেখযোগ্য বা নতুন কোনো দিকনির্দেশনা দেননি। সকালে ফ্রান্সের রাজনৈতিক সংকটের পরোক্ষ প্রভাবে পাউন্ডের দরপতন হয়—এমন না যে সংকটটির কারণে সরাসরি পাউন্ডের প্রভাব পড়েছে, বরং ইউরোর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার ফলেই পাউন্ডের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট দেখা গেছে।
দিনের দ্বিতীয়ার্ধে পাউন্ড কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়, কারণ মার্কিন ডলার বা ব্রিটিশ পাউন্ড—কোনোটিই ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার মতো স্পষ্ট কোনো মৌলিক কারণ নেই। মনে রাখতে হবে, বর্তমানে মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রায় সব কনভার্টিবল কারেন্সিই মার্কিন ডলারের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
সোমবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে মোট তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। ইউরোপিয়ান ট্রেডিং সেশনে, মূল্য 1.3413–1.3421 জোন থেকে দুইবার বাউন্স করে, যা লং পজিশন ওপেন করার জন্য একটি কার্যকর সিগন্যাল প্রদান করে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই, মূল্য 1.3466–1.3475 এরিয়াতে পৌঁছায়—এমনকি ব্রেকও করে। মঙ্গলবার সকালের অবস্থা অনুযায়ী, এই পেয়ারের মূল্য এখনো এই জোনের উপরে অবস্থান করছে, ফলে পূর্বের লং পজিশনগুলোর অনেকগুলোই ইতোমধ্যে মুনাফার সাথে ক্লোজ হয়েছে, অথবা ওপেন রেখে 1.3529 লেভেলকে পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যায়।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল
ঘণ্টাভিত্তিক চার্ট অনুসারে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের পূর্ববর্তী নিম্নমুখী প্রবণতার গঠন সম্পূর্ণ হয়েছে। আগেও উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে মার্কিন ডলারের মূল্যের দীর্ঘমেয়াদি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার জন্য কোনো ভিত্তি নেই, তাই আমরা প্রত্যাশা করছি যে মধ্যমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকবে। তবে বর্তমানে মার্কেট এক ধরনের স্থবির বা নিস্তেজ অবস্থায় রয়েছে—, যেখানে মূল্যের তেমন কোনো অর্থবহ মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। লোয়ার টাইমফ্রেমে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে এখনও ট্রেডিং করা যেতে পারে, তবে অস্থিরতার মাত্রা এখনো অনেক কম রয়েছে।
মঙ্গলবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের 1.3466–1.3475 জোন থেকে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এই জোন থেকে বাউন্স দেখা যায়, তাহলে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে, যেখানে মূল্যের 1.3529-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। অন্যদিকে, যদি এই জোন ব্রেক করে মূল্য নিচের দিকে গেলে এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421 রেঞ্জে ফিরে আসতে পারে।
মঙ্গলবার, ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466, 1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763.
মঙ্গলবার, যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্টও নির্ধারিত নেই। ফলে, আজকের ট্রেডিং সেশনে ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো কিছুই না থাকায় মার্কেটে অপেক্ষাকৃতভাবে শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।