বুধবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
বুধবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য উভয় দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে, তবে ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। মূল দরপতনটি এশিয়ান সেশনের সময় ঘটে, তাই প্রকাশিত একটিমাত্র সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন—জার্মানির শিল্প উৎপাদন, যেটির ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে অনেক দুর্বল ছিল—ইউরোর উপর কার্যত কোনো প্রভাব ফেলেনি।
সন্ধ্যায় ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির সর্বশেষ বৈঠকের কার্যবিবরণী প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে কমিটির প্রায় অর্ধেক সদস্য আর্থিক নীতিমালায় আরও নমনীয়করণের প্রত্যাশা করছেন। জানানো হয়েছে, বছরের শেষ নাগাদ মূল সুদের হার আরও দুইবার কমানো হতে পারে। তবে এই তথ্য আসলে নতুন কিছু নয়, কারণ এটি ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ফেডের বৈঠকের পর থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। অর্থাৎ, সম্ভাব্য দুইবার সুদের হার হ্রাসের ধারণা এখন আর কোনো চমক নয়। আমাদের দৃষ্টিতে, ফেডের অবস্থান এখনো যথেষ্ট ডোভিশ বা নমনীয় এবং সেটিই বহাল থাকবে, যা নিঃসন্দেহে ডলারের জন্য ইতিবাচক নয়।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কার্যক্রমের অচলাবস্থা চলছে, শিকাগোতে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে, এবং গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতির মধ্যে প্রশ্ন হলো: ডলারের মূল্য কীভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে? এটাই সেই "মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন"।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, রাতের বেলায় একটি মাত্র ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিক হয়। এই পেয়ারের মূল্য 1.1655–1.1666 জোন ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়, যা শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি করে। যদিও দিনের শেষ পর্যন্ত এই পেয়ারের মূল্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়নি, সেসব শর্ট ট্রেড যেকোনো সময়েই ক্লোজ করা যেত — এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই তা লাভজনক ছিল। একমাত্র সমস্যা ছিল সিগন্যাল তৈরির সময়টি।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে দেখা যাচ্ছে যে EUR/USD পেয়ারের মূল্য একাধিকবার ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে ঊর্ধ্বমুখী হলেও, এখনো দরপতন হয়েই চলেছে—এর পেছনে স্পষ্ট কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা এই মুভমেন্টকে পুরোপুরি অযৌক্তিক বলে মনে করছি। সামগ্রিক মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট মার্কিন ডলারের জন্য অত্যন্ত প্রতিকূল অবস্থায় রয়েছে, তাই এখন ডলারের শক্তিশালী মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম। আমাদের মতে, আগের মতোই, ডলারের মূল্যের শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কারেকশন হতে পারে — যার একটি এখন চলছে।
বৃহস্পতিবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। এই মুহূর্তে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের পেছনে কোনো স্পষ্ট যৌক্তিকতা নেই, বরং বেশ কিছুটা বিশৃঙ্খল অবস্থাই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আজ ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্ধারিত আছে, তবে মার্কেটের ট্রেডাররা এই বক্তব্যের প্রতি কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তা বলা কঠিন। আপনি চাইলে 1.1655–1.1666 এরিয়ার উপর ভিত্তি করে ট্রেডিংয়ের পরিকল্পনা করতে পারেন।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলোর দিকে দৃষ্টি দিতে হবে: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988।
বৃহস্পতিবার জেরোম পাওয়েলের বক্তব্য মার্কেটের মূল ইভেন্ট হবে। মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা নিবিড়ভাবে তার মন্তব্যের ওপর নজর রাখবে — তিনি শুধু ফেডের চেয়ারম্যান বলেই নয়, বরং কারণ এটি এই সপ্তাহের একমাত্র উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।