বুধবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
বুধবার (এবং বৃহস্পতিবারের শুরু পর্যন্ত), GBP/USD পেয়ারের মূল্যের দুর্বল নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল — যদিও বাস্তবে এই ধরনের মুভমেন্টের পেছনে কোনো স্পষ্ট মৌলিক কারণ নেই। মনে করিয়ে দিই, পাউন্ডের মূল্য যখন ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে তখন প্রবণতা বুলিশে রূপান্তরিত হয়েছিল। এই সপ্তাহে ব্রিটিশ কারেন্সির জন্য কোনো তাৎপর্যপূর্ণ মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে চলমান সরকারি কার্যক্রমের অচলাবস্থা ও শিকাগোতে অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে স্পষ্টভাবেই ডলারের জন্য নেতিবাচক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে এবং বছরের শেষ নাগাদ ফেডারেল রিজার্ভের আরও দুই দফা সুদের হার হ্রাস করবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।
সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুযায়ী ডলারের দরপতন হওয়াই স্বাভাবিক, দর বৃদ্ধি নয়। তাই আমাদের দৃষ্টিতে GBP/USD পেয়ারের বর্তমান দরপতন পুরোপুরি অযৌক্তিক।
তাত্ত্বিকভাবে, শক্তিশালী পারস্পারিক সম্পর্কের কারণে ইউরোর দরপতনের ফলে পাউন্ডেরও দরপতন হতে পারে; তবে এই ব্যাখ্যাও বিতর্কযোগ্য। যদিও পাউন্ডের বড় আকারে দরপতন হয়নি, তবুও বর্তমানে যখন মুদ্রাটির মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হওয়া উচিত, তখন এটির মূল্য কমে যাচ্ছে। সংক্ষেপে, এই পেয়ারের মূল্যের দৈনিক মুভমেন্টগুলো এখনো বিশৃঙ্খল এবং দুর্বল কাঠামোবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে আমরা EUR/USD-এর মতো পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি। এই পেয়ারের মূল্য ক্রমেই সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো উপেক্ষা করছে। যদিও ট্রেডিং সিগন্যাল এখনো তৈরি হচ্ছে, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মূল্য লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাচ্ছে না।
উদাহরণস্বরূপ, গতকাল 1.3413–1.3421 জোনে ট্রেডিংয়ের সময় চারটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল — প্রত্যেকটিই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তাই নতুন ট্রেডারদের অবশ্যই বোঝা দরকার, এই মুহূর্তে মার্কেটে যৌক্তিকতার অভাব রয়েছে এবং এই পেয়ারের মূল্যের স্বল্পমেয়াদী মুভমেন্টগুলো ভীষণ অস্থিরতা ও পূর্বাভাসযোগ্য নয়।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক চার্ট অনুযায়ী GBP/USD পেয়ারের মূলয়ের পূর্বের নিম্নমুখী প্রবণতা শেষ হয়েছে, তবে শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট এখনও শুরু হয়নি। যেমনটি আগেই উল্লেখ করেছিলাম, মধ্যমেয়াদে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার জন্য কোনো গ্রহণযোগ্য কারণ নেই, তাই এখনও সময়ের সাথে সাথে আমরা GBP/USD পেয়ারের মূল্যের বুলিশ মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি।
তবে, মার্কেটের বর্তমান পরিস্থিতি এখনো বেশ জটিল। স্পষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই পাউন্ডের দরপতন হচ্ছে এবং টেকনিক্যাল স্ট্রাকচারগুলোর ধারাবাহিকতা ভেঙে যাচ্ছে। লোয়ার টাইমফ্রেম (৫ মিনিটে) টেকনিক্যাল সিগন্যালের ভিত্তিতে ট্রেড করা গেলেও, যেকোনো টাইমফ্রেমেই এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো অনির্ভরযোগ্য রয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে, বিশেষ করে যখন এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421 লেভেল ব্রেক করে গেছে। মার্কেটের বর্তমান বাস্তবতায়, অনিয়মিত পুলব্যাক ও পূর্বনির্ধারিত সাপোর্ট/রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো উপেক্ষিত থাকারও ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেম অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স জোনগুলো হলো: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। তবে, যুক্তরাষ্ট্রে ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্য মার্কেটে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে, যা নির্ভর করবে তিনি কী বলেন তার ওপর। ফেডের বর্তমান সুদের হার হ্রাসের আঙ্গিকে এবং যুক্তরাষ্ট্রে সামগ্রিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে, পাওয়েলের বক্তব্য দিনের প্রধান ইভেন্ট হতে যাচ্ছে। মার্কেটে হঠাৎ করে যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট শুরু হতে পারে, সে জন্য ট্রেডারদের প্রস্তুত থাকা উচিত।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।