বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
বৃহস্পতিবারেও EUR/USD পেয়ারের ধারাবাহিক দরপতন অব্যাহত ছিল। এবার, জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যের অনেক আগেই দরপতন শুরু হয়ে যায়। সকালে মার্কেটের ট্রেডাররা ইউরো বিক্রি করতে শুরু করে এবং ফেড চেয়ারম্যানের সম্পূর্ণরূপে "নিরপেক্ষ" বক্তব্যের পরেও সেই বিক্রির প্রবণতা অব্যাহত থাকে। পাওয়েল আবারও জোর দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে মুদ্রানীতির আরও নমনীয়করণের সিদ্ধান্ত পূর্বনির্ধারিত নয় এবং এটি সম্পূর্ণরূপে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফলের উপর নির্ভর করবে — যা তিনি ২০২৫ সালের শুরু থেকেই বলে আসছেন।
তবে, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে যেভাবে মার্কেটের ট্রেডাররা তার এই বক্তব্যকে নেতিবাচকভাবে উপেক্ষা করছিল, ঠিক এখন একই বক্তব্যকে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করছে। পাওয়েলের অবস্থান মূলত বদলায়নি — সবকিছু প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করছে — তবুও এখন ডলারের মূল্য বাড়ছে, কমছে না। কেন? কেউই সঠিকভাবে জানে না। বিভিন্ন জরিপ অনুযায়ী, ট্রেডাররা এখনো বছরের শেষ নাগাদ ফেডের কাছ থেকে দুইবার সুদের হার হ্রাসের প্রত্যাশা করছে।
আমাদের দৃষ্টিতে, এই মুভমেন্ট সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক — মার্কেটের ট্রেডাররা এখন ডলারকে কেনার জন্য যেকোনো অজুহাত খুঁজে নিচ্ছে, এমনকি ৭–৮ মাস টানা আশংকার কারণে যেভাবে ডলার বিক্রি করা হয়েছিল, এখন তার বিপরীতমুখী কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের চার্টে, মার্কিন সেশনের সময় কেবল একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। এই পেয়ারের মূল্য 1.1571–1.1584 জোন ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়, কিন্তু সেই সিগন্যাল গঠনের পর আসলে আর কোনো উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট দেখা যেয়নি। নিঃসন্দেহে ট্রেডটি গ্রহণযোগ্য ছিল, তবে মুনাফার পরিমাণ সীমিত ছিল।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে EUR/USD পেয়ারের মূল্য একাধিকবার ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করলেও, কিছুটা সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে আবারও দরপতন হয়েছে। আমরা এখনো মনে করি যে বর্তমান মুভমেন্টের কোনো যৌক্তিকতা নেই। মার্কিন ডলারের ক্ষেত্রে সামগ্রিক মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো নেতিবাচক, যার মানে হলো আমরা ডলারের মূল্যের স্থিতিশীল ও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির আশা করছি না।
আমাদের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী আগের মতোই, ডলারের মূল্যের শুধু টেকনিক্যাল কারেকশনের ওপর নির্ভর করা যেতে পারে — যার একটি আমরা এখন প্রত্যক্ষ করছি।
শুক্রবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। এই মুহূর্তে মুভমেন্টে তেমন যৌক্তিকতা নেই, বরং অনেক 'নয়েজ' বা এলোমেলো মুভমেন্ট দেখা যাবে। এই দীর্ঘমেয়াদী দরপতনের পরে একটি কারেকশন শুরু হতে পারে — অথবা দরপতন চলতেও পারে, কারণ এখন মার্কেটে ডলার কেনার জন্য কোনো কারণের প্রয়োজন নেই।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে উল্লিখিত লেভেলসমূহ ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988।
শুক্রবার একমাত্র কিছুটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হিসেবে ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান থেকে কনজ্যুমার সেনটিমেন্ট ইনডেক্স প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। তবে আমরা অবাক হবো না যদি মার্কেটের ট্রেডাররা এই প্রতিবেদনকেও ডলার কেনার জন্য আরেকটি 'অজুহাত' হিসেবে ব্যবহার করে — প্রতিবেদনের আসল ফলাফল যাই হোক না কেন।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।